প্রশান্ত কিশোর
তৃণমূলে এবার পিকে’র টার্গেট ‘সমাজসেবক’। ‘নকল’ নয়, ‘আসল’ সমাজসেবকদের-ই বেছে তালিকায় করতে বলেছেন তিনি। দলীয় সূত্রের খবর, তিনি জানিয়ে দিয়েছেন দলে যাঁরা নিজেদের ‘সমাজসেবক’ পরিচয় দেন তাঁরা যেন ওই তালিকায় না থাকেন। প্রকৃতই যাঁরা সমাজসেবক তাঁদের নাম নথিবদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রত্যেক ব্লক থেকে অন্তত ছয় থেকে আটটি করে নাম চেয়েছেন পিকে। যা খুঁজে বের করতে কালঘাম ছুটে গিয়েছে তৃণমূল নেতাদের। আবার ‘সমাজসেবক’ হিসেবে নাম যাওয়াদের নিয়েও অনেক তৃণমূল নেতা আতঙ্কে রয়েছেন। তাঁদেরই একজনের কথায়, “কে, কী বলবেন বুঝতে পাচ্ছি না। তাই একটু টেনশন হচ্ছে আর কী।” তৃণমূল নেতারা অবশ্য এ সব নিয়ে কিছু বলতে চান না। তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “এই বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।”
সোমবারই কলকাতায় প্রত্যেক জেলার সভাপতি এবং কো-অর্ডিনেটরদের নিয়ে বৈঠক করেন পিকে। ওই বৈঠকে ছিলেন তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ এবং কো-অর্ডিনেটর পার্থপ্রতিম রায়। মঙ্গলবার একাধিক জেলার ব্লক পর্যায়ের যুব নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন পিকে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই বৈঠকেই প্রত্যেক নেতৃত্বকে গ্রামে গ্রামে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পিকে। যেভাবে দলের বিধায়করা গ্রামে গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, রাত কাটিয়েছেন, একইভাবে তৃণমূলস্তরের নেতাদেরও গ্রামে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পিকে। ওই নেতাদের কাছ থেকে আগেই ‘সমাজসেবক’দের তালিকাও নেন তিনি। এ ছাড়া পিকে’র টিম নিজেদের মতো করেও ‘সমাজসেবক’দের তালিকা তৈরি করছেন।
লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে বিজেপি জেতার পর বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল নেতাদের দেখলেই বিক্ষোভ হতে থাকে। এই অবস্থার পরিবর্তনে আসরে নামে টিম পিকে। দলীয় সুত্রের খবর, ‘দিদিকে বলো’ প্রচারের মাধ্যমে নেতাদেরকে গ্রামে গ্রামে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সংক্রান্ত ছবি, কর্মসূচি সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমেও ছড়িয়ে দিতে বলা হয়। তাতে কাজও হয়েছে বলে দলের নেতা, কর্মীরা মনে করছেন। প্রাথমিক জড়তা এবং লোকসভা ভোটের ফলের হতাশা কাটিয়ে দলের কর্মীদের মনোবল এখন বেশ কিছুটা চাঙ্গা করা গিয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে গ্রামে গ্রামে যোগাযোগ বাড়িয়ে তোলাও সম্ভব হয়েছে বলে তৃণমূল নেতাদের দাবি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এবার ‘সমাজসেবক’দের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে তুলে গ্রামে গ্রামে আরও প্রভাব বাড়ানো লক্ষ্য নিয়েছে পিকের টিম।
বিজেপি নেতৃত্ব অবশ্য দাবি করেছে, গ্রামের কোনও মানুষই এখন তৃণমূলকে চাইছে না। যারা সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত তাঁদের কেউই তৃণমূলের ধারে কাছে যাবেন না বলে তাঁদের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy