টালির চালের ঘর থেকে নিউটাউনের ভিলা! নিজস্ব চিত্র।
নারকেলডাঙা মেন রোডের টালির চালের বাড়ি থেকে নিউটাউনের বৈভবে টইমম্বুর ভিলা। এ যেন এক চোখধাঁধানো উত্থানের কাহিনি। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে বর্তমানে গ্রেফতার হওয়া প্রসন্নকুমার রায়ের জীবনখাতা দেখলে সিনেমা বলে ভুল হতে পারে। আনন্দবাজার অনলাইন হেঁটে এল প্রসন্নর উত্থানের সেই যাত্রাপথ ধরে।
৯৮ এইচ/১, নারকেলডাঙা মেন রোড। পাশাপাশি টালির চালের পর পর ঘর। সেই বাড়িরই একটি ঘরে পরিবার নিয়ে থাকতেন কৃষ্ণকান্ত রায়। ওই বাড়ির ঠিক উল্টো দিকে ছিল ৬৯ নম্বর নারকেলডাঙা মেন রোডে দোকান কৃষ্ণকান্তের। তিনি পেশায় শিক্ষক ছিলেন। অবসরের পর তিনি গৃহশিক্ষক হিসাবে পড়াতেন। গৃহশিক্ষক ঠিক করে দেওয়ার কাজ করতেন তিনি। সেই উপার্জনে কোনওমতে চলে যেত সংসার। সেই পরিবারই এখন নিউটাউনে বিপুল ভিলার বাসিন্দা। কী করে এমন ‘উল্লম্ব উন্নতি’ সম্ভব হল? নারকেলডাঙা মেন রোডের আনাচেকানাচে এখন তা নিয়ে কৌতূহল উপচে পড়ছে।
যে বাড়িতে দীর্ঘ দিন ভাড়া থেকেছেন প্রসন্নেরা, সেই বাড়ির মালিক শিবানী বিশ্বাস গ্রেফতারের খবর শুনেছেন। কিন্তু মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না। প্রসন্নকে তাঁরা রাকেশ (ডাকনাম) নামেই চেনেন। তিনি বলেন, ‘‘রাকেশরা এই বাড়িতে বহু দিন ভাড়া ছিল। আমি বিয়ে করে এ বাড়িতে আসার পর থেকেই দেখে আসছি। কয়েক বছর আগে ওরা এই বাড়ি ছেড়ে নিউটাউনের বাড়িতে চলে যায়।’’ কেমন দেখেছিলেন প্রতিবেশীকে? শিবানী বলেন, ‘‘রাকেশের বাবা শিক্ষকতা করতেন। গোটা পরিবারটাই শিক্ষাক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল। আমাদের সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক। যতদূর মনে পড়ছে, ২৫০-৩০০ টাকা ভাড়া দিতেন ওঁরা। কী ভাবে এই ঘটনায় জড়িয়ে পড়ল রাকেশ, বুঝতে পারছি না।’’
বাড়ি মালিক শিবানীর মেয়ে জয়শ্রী আর প্রসন্ন পিঠোপিঠি বড় হয়েছেন। রাকেশের কথা শুনে ভেঙে পড়েছেন তিনিও। তিনি বলছেন, ‘‘আমরা তো ওঁকে রাকেশদা বলেই ডাকি। রাকেশদা’র ব্যবসা বড় হল, আর ওঁরা সবাই নিউটাউন চলে গেলেন। আমাদের সঙ্গে রাকেশদা’র খুবই ভাল সম্পর্ক। বলতে পারেন, আমরা একই সঙ্গে বড় হয়েছি। দাদা যে এই মামলায় জড়িয়ে পড়বে, আমরা ভাবতে পারছি না।’’
বিজ্ঞানে স্নাতক রাকেশ যে বহু কোটি টাকার দুর্নীতিতে অভিযুক্ত হয়ে পড়বেন, তা বিশ্বাস করতে চাইছেন না তাঁর একদা প্রতিবেশীরা। তাই প্রসন্নের পুরনো পাড়ায় এখন কেবলই দীর্ঘশ্বাস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy