—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
আলোচনা থেকেই বেরিয়ে এল আপাতত সমাধান। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজেদের মধ্যে আলোচনার পরে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিল বাংলার প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। পূর্ব বর্ধমানে সমিতির রাজ্য কমিটির বৈঠকের পর ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। বুধবার রাত থেকে পুনরায় হিমঘর থেকে আলু বার করা হবে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাজারে বাজারে আলু সরাবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
ভিন্রাজ্যে আলু ‘রফতানি’ নিয়ে জটিলতার জেরে সোমবার মধ্যরাত থেকে ধর্মঘট শুরু করেছিল প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। তবে জটিলতা কাটাতে তার আগে চেষ্টা করেছিল সরকার পক্ষ। সোমবার খাদ্য ভবনে হিমঘর মালিক সংগঠন ও আলু ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতরের মন্ত্রী বেচারাম মান্না। প্রায় তিন ঘণ্টার ওই বৈঠকের পর সমাধান সূত্র মেলেনি বলেই জানিয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা এ-ও জানিয়েছিলেন পূর্বঘোষণা মতো ধর্মঘট চলবে। ব্যবসায়ীদের সমর্থনে এগিয়ে আসেন হিমঘর মালিকরাও। তার পর মঙ্গলবার সব হিমঘরের দরজাতেই তালা দেখা গিয়েছে।
অন্য দিকে, মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে বেশি দামে আলু বিক্রি হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ লাইন বাজার, স্টেশন বাজার, নীলপুর বাজার— সব জায়গায় খোলা বাজারে জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে ৩৬ টাকা কিলো দরে। চন্দ্রমুখী আলু বিক্রি হয় কিলো প্রতি ৪০ টাকা। খুচরো সব্জি বিক্রেতারা জানান, সোমবার পর্যন্ত ওই আলুই তারা কেজিতে পাঁচ থেকে ছয় টাকা কম নিয়েছেন। আলুর জোগান কম থাকায় দাম বৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, ধর্মঘটের পর থেকে প্রতি বস্তায় ২০০ টাকা বেশি দিয়ে আলু কিনতে হচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবে খোলা বাজারে দাম বেড়েছে।
তবে মঙ্গলবার দুপুরে বিধানসভার বাইরে থেকে বেচারাম অবশ্য জানান, সরকার আলুর জোগান ঠিক রাখার কাজ করছে। তিনি বলেন, ‘‘টানা বৃষ্টির জন্য নতুন আলুচাষ ১৫ দিন পিছিয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ, যে নতুন আলু আমরা ডিসেম্বরের ২০ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে বাজারে পেতাম, এ বার তা পেতে পেতে জানুয়ারি মাস। তাই পুরনো আলুর উপরই ভরসা করতে হবে। আমাদের রাজ্যে এখন যা আলু আছে, তা আগামী ৪০-৪৫ দিনের জন্য পর্যাপ্ত। এই পরিস্থিতিতে আলু বাইরে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।’’ অন্য দিকে, বুধবার পূর্ব বর্ধমানের ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে বেচারহাটে আলু ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে দীর্ঘ ক্ষণ বৈঠক হয়। তার পর ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় বুধবারই হিমঘর থেকে আলু বার হবে। বাজারে সরবরাহও আগের মতো হবে।
কী ভাবে রফাসূত্র বেরিয়ে এল? কেন সিদ্ধান্ত বদল? প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধর্মঘট শুরু হতেই রাজ্যের বিভিন্ন খুচরো বাজারে আলুর দাম বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিল। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের সমস্যা হচ্ছিল। সে কথা চিন্তা করে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সোমবার রাজ্যের কৃষি বিপণন দফতরের মন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, ধর্মঘট প্রত্যাহার করলে ভিন্রাজ্যে আলু রফতানি নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা হবে। সে জন্য আমরা আশাবাদী হয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহারের পথে গেলাম।’’
প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সভাপতি জগৎবন্ধু মণ্ডলও বলেন, ‘‘আমরা সাধারণ মানুষের কথা ভেবে কর্মবিরতি তুলে নিচ্ছি। বুধবার রাত থেকে হিমঘর থেকে আলু বার হবে।’’ লালু জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে রাজ্যের হিমঘরগুলিতে যা আলু মজুত রয়েছে, তাতে কোনও ভাবে আলুর জোগানে টান পড়বে না। মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের জন্য আপাতত অপেক্ষা করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy