Advertisement
E-Paper

মুখে কম্পিউটার চালান! ৫০ লক্ষের চাকরি ছেড়ে খড়্গপুর আইআইটি থেকে ডিগ্রির প্রস্তুতি তুহিনের

খড়্গপুর শহরের মালঞ্চ এলাকার বাসিন্দা তুহিনের দু’হাত এবং দু’পা অচল। তবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কখনও তাঁর লক্ষ্যপূরণে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি।

Tuhin Dey

কম্পিউটারে মগ্ন খড়্গপুরের মালঞ্চের বাসিন্দা তুহিন দে। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৭
Share
Save

বসতে হলে হুইলচেয়ারই ভরসা। হাত এবং পা না-চললেও দারুণ ‘মুখ চালান’ পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরের বাসিন্দা তুহিন দে। মুখে কলম এবং পেনসিল ধরে পরীক্ষা দিয়েছেন। পড়াশোনায় আগাগোড়া ভাল এই যুবক কম্পিউটার সায়েন্সে বিটেক করেছেন। কম্পিউটার চালাতেও তাঁর অস্ত্র মুখ। মুখে কলম দিয়ে কিবোর্ডে টাইপ করেন। আরও পড়াশোনা করবেন বলে সদ্য বিদেশি কোম্পানিতে চাকরির সুযোগ ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। লক্ষ্য, আইআইটি খড়্গপুর থেকে এমটেক এবং পিএইচডি করবেন। ৩ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস। সেই উপলক্ষে তুহিনের হাতে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তরফে তুলে দেওয়া হয়েছে ‘অ্যাকাডেমিক এক্সেলেন্সি অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ ওয়ার্কস্’ সম্মান।

খড়্গপুর শহরের মালঞ্চ এলাকার বাসিন্দা তুহিনের দু’হাত এবং দু’পা অচল। তবে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কখনও তাঁর লক্ষ্যপূরণে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। হুইলচেয়ার সঙ্গী হলেও এর জন্য আলাদা কোনও সুযোগ নিতে চান না ওই যুবক। খড়্গপুর আইআইটি ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে মাধ্যমিক পাশ করেন তুহিন। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন রাজস্থানের কোটা থেকে। তার পর শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে বিটেক করেছেন। পরীক্ষার সময় তুহিন কখনও কারও সাহায্য নেননি। মুখে কলম এবং পেন্সিল নিয়ে লেখালিখি করতে কোনও সমস্যা হয় না তাঁর। তুহিনের কথায়, ‘‘আমি মুখ দিয়েই পেন বা পেনসিল দিয়ে লিখি। কোনও সমস্যা হয় না। আর পরীক্ষার সময় অতিরিক্ত সময়ও নিই না। তবে পরীক্ষার সময় কাগজ নেমে গেলে বা পাতা ওল্টানোর সময় শিক্ষকেরা সাহায্য করেছেন। ছবি আঁকা হোক বা কম্পিউটার চালানো, কোনও কিছুতেই অসুবিধা হয় না।’’

Tuhin Dey

বাবা-মায়ের সঙ্গে তুহিন দে। —নিজস্ব চিত্র।

আমেরিকার একটি ব্যাঙ্ক এবং একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে মোটা মাইনের চাকরির সুযোগ এসেছিল। কিন্তু বছরে ৫০ লক্ষ টাকা আয়ের হাতছানি থেকে আপাতত দূরে তুহিন। আরও পড়াশোনা করতে চান। লক্ষ্য, খড়্গপুর আইআইটি থেকে এমটেক করার। তার পর পিএইচডি। এখন এমটেকের প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

তুহিনের বাবা সমীরণ দে পেশায় ব্যবসায়ী। মা সুজাতা দে। দু’জনেই চান, ছেলে আরও পড়াশোনা করুক। আরও বড় হোক। সুজাতা বলেন, ‘‘ছেলেকে খাবার পর্যন্ত খাইয়ে দিতে হয়। ও যখন পড়াশোনা করে বইয়ের পাতা উল্টে দিতে হয়। লেখার সময় পেন বা পেনসিল ওর মুখের সামনে রাখি। ও মুখ দিয়ে তুলে নেয়। নিজের চেষ্টাতেই এগিয়ে যাচ্ছে ও। আমরা সর্বদা ওর সঙ্গে আছি।’’ তুহিনের বাবা সমীরণ জানান, ছেলের চিকিৎসার জন্য বহু জায়গায় গিয়েছেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে কখনও বাধা হিসাবে দেখেনি ছেলে। বরং ও এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছে। পড়াশোনায় খুব আগ্রহী। ও নিজের স্বপ্নপূরণের দিকে পদক্ষেপ করুক। আমরা ওর সঙ্গে আছি।’’

United Nations' International Day of Persons with Disabilities Kharagpur handicapped Inspirational story

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।