এই পোস্টারই দেখা গিয়েছে জায়গায় জায়গায়। —নিজস্ব চিত্র।
এ বার নবান্ন থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে পোস্টার। তাতে না আছে দলীয় প্রতীক, না আছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও ছবি। বরং বনমন্ত্রী একাই স্বমহিমায় বিরাজ করছেন। ছবির নীচে লেখা, ‘আমরা রাজীবপন্থী’। সোমবার সকালে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপর কলকাতা অভিমুখে নবান্নের কাছে এই পোস্টার দেখা গিয়েছে। কোনা এক্সপ্রেসওয়ে বরাবর বিভিন্ন জায়গাতেও এই পোস্টার ঝুলতে দেখা গিয়েছে।
মেদিনীপুরে সভা সেরে এ দিন কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ধরেই ফেরার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রাজ্য সরকারের ভিভিআইপি নেতা এবং আমলাদের যাতায়াতও এই পথেই। তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে তৃণমূলের রাজীব-অনুগামীরাই এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। তবে কোথাও দলের নাম পর্যন্ত উল্লেখ নেই। বরং সব জায়গাতেই পোস্টারের নীচে লেখা, ‘আমরা দাদার কর্মী’। শুধু তাই নয়, কোথাও কোথাও পোস্টারে ‘যেখানে অন্যায়, সেখানে প্রতিবাদ,’ ‘জননেতা একজনই, তিনি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়’, এমনও লেখা হয়েছে।
কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ছাড়াও হাওড়া পুর নিগমের মূল ফটকের সামনে, হাওড়া জেলা আদালত, ড্রেনেজ ক্যানাল-সহ রাজীবের বিধানসভা কেন্দ্র ডোমজুড়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরেও এই ধরনের পোস্টার দেখা যায়। তাতেই প্রশ্ন উঠছে, শুভেন্দু অধিকারীর পর রাজীবকে নিয়েও কি অন্তর্দ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠেছে জোড়াফুল শিবিরে? এ ব্যাপারে একমত হাওড়ায় বিজেপির সদর জেলা সভাপতি সুরজিৎ সাহা। তিনি বলেন, ‘‘এটা শাসকদলের অন্তর্দ্বন্দ্ব। তাই বার বার এই ধরনের ঘটনা ঘটছে।’’
আরও পড়ুন: শুভেন্দুকে নিয়ে জল্পনার মধ্যে মেদিনীপুরে মমতা, কী বার্তা দলনেত্রীর
ডিসেম্বর মাসটা তৃণমূলের পক্ষে শুভ হবে না বলেও মন্তব্য করেন সুরজিৎ। এমনকি বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আদৌ টিকবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। নির্বাচনের আগে মমতার ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পকে ‘যমের দুয়ারে সরকার’ বলে কটাক্ষ করেন। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করলে জানিয়ে দেন, বিজেপিতে ব্যক্তির চেয়ে সংগঠন আগে। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কোনও নেতা এলে তাঁরা স্বাগত জানাবেন।
তবে রাজীবকে একহাত নিয়েছেন সমবায় মন্ত্রী তথা হাওড়া সদর জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান অরূপ রায়। তিনি বলেন, ‘‘ব্যাকমেল করে বেশিদিন চালানো যায় না।চালাকির দ্বারা কোনও মহৎ কাজ সম্পন্ন হয় না।’’ তাঁর বক্তব্য, দলেরর শীর্ষ নেতৃত্ব সব কিছু জানেন। দলের অভ্যন্তরে শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি রয়েছে। তারাই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। রাজীবের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করলে অরূপ বলেন, ‘‘দলে নেতা বদলায়, কিন্তু কর্মী বদলায় না। হাওড়া সদরে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করছেন।’’
আরও পড়ুন: উত্তরকন্যার ৪ কিমি আগেই দিলীপ- সায়ন্তনদের আটকে দিল পুলিশ
শুভেন্দুকে নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে বেসুরো মন্তব্য করে গত সপ্তাহে বিতর্ক উস্কে দেন রাজীব। একটি ‘অরাজনৈতিক’ মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘‘স্তাবকতা করলেই নম্বর বাড়ে। আমি পারিনি, তাই নম্বরও বাড়েনি।’’ এর পরেই উত্তর কলকাতার একাধিক জায়গায় রাজীবের সমর্থনে পোস্টার পড়ে। তাতে তাঁর তৃণমূল ছাড়া নিয়ে জল্পনা জোর পায়। এমন পরিস্থিতিতে সংযম দেখানোর পরিবর্তে রাজীবকে তিরস্কার করেন অরূপ রায়। বরাবর রাজীব-বিরোধী হিসেবে পরিচিত অরূপ বলেন, ‘‘চোরের মায়ের বড় গলা। কাজ না করে খালি বড় বড় কথা। যিনি দুর্নীতি করছেন, তিনিই বড় বড় কথা বলছেন।’’ তৃণমূল একটা মহাসমুদ্র, তা থেকে এক বালতি জল তুলে নিলে কিছু যায় আসে না বলেও মন্তব্য করেন অরূপ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy