মৃত অসীমা প্রামাণিক।
মেয়েকে নিয়ে পুজোর বাজার করে ফিরছিলেন বারুইপুর এলাকার মদারহাটের বছর চল্লিশের গৃহবধূ অসীমা প্রামাণিক। বারুইপুর স্টেশনে এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে চার নম্বরে যাওয়ার জন্য রেললাইন টপকে যাওয়ার সময়ে তাঁর মাথায় ভেঙে পড়ল ওভারব্রিজের চাঙড়। মারা গেলেন অসীমাদেবী। গুরুতর জখম হলেন ছবি নস্কর নামে বছর ষাটেকের আর এক মহিলাও। শুক্রবার রাত আটটার এই ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন অসীমার মেয়ে মৌসুমী।
রাজ্যে সেতু নিয়ে বিপত্তির যেন শেষ নেই। চলতি মাসেই ভেঙে পড়েছে মাঝেরহাট সেতু। তার এক সপ্তাহের মধ্যেই চেতলা সেতুর চাঙড় মাথায় পড়ে আহত হয়েছিলেন এক মহিলা। একই মাসে সেতু ভেঙেছে উত্তরবঙ্গের ফাঁসিদেওয়া থেকে দক্ষিণবঙ্গের কাকদ্বীপে। স্টেশনের ফুট-ওভারব্রিজগুলির দুর্দশা নিয়ে অভিযোগ ওঠে মাঝেমধ্যেই। স্থানীয়দের অভিযোগ, বারুইপুর স্টেশনের ওই ওভারব্রিজটি বহু দিন ধরেই জরাজীর্ণ। সেটি সংস্কারের জন্য অনেক বার স্টেশনের আধিকারিকদের বলেও লাভ হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানাচ্ছে, অনেক যাত্রীই ওভারব্রিজের বদলে রেললাইন দিয়ে প্ল্যাটফর্ম বদল করেন। এ দিন সে ভাবেই লাইন পেরোচ্ছিলেন অসীমারা। মৌসুমী বলেন, ‘‘মা আমার পিছনে হেঁটে আসছিল। হঠাৎ একটা হুড়মুড় শব্দে চমকে উঠে ছিটকে যাই। তাকিয়ে দেখি, মা মাটিতে পড়ে। মাথা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। আর এক মহিলাও মাটিতে পড়ে কাতরাচ্ছেন।’’
দুর্ঘটনা: ওভারব্রিজের এই অংশ খসে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, চাঙড়গুলি বেশ বড় ছিল। তা অসীমাদেবীর ঠিক মাথায় পড়ায় বেশি চোট পেয়েছিলেন তিনিই। ছবিদেবীর পায়ে চাঙড় পড়ে। এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ‘‘দু’জনকেই আমরা অটোতে চাপিয়ে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাই। চিকিৎসকেরা অসীমাদেবীকে মৃত ঘোষণা করেন। ছবিদেবীর পা ভেঙেছে। তাঁর বাড়ি বারুইপুর এলাকার বেগমপুরে।’’
এই ঘটনায় বারুইপুর স্টেশন এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, ‘‘ওভারব্রিজ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা দুই অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সাত দিনের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গড়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার।’’ ইতিমধ্যে রেলের ‘কমন ইউটিলিটি’, ইঞ্জিনিয়ারিং ও সুরক্ষা, এই তিনটি বিভাগের কাছ থেকে অন্তর্বর্তী রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রাতে ঘটনাস্থলে যান শিয়ালদহ ডিভিশনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা।
ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy