Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কবেই ছিঁড়েছে সরকারি জুতো, খালি পায়ে স্কুলে

সুতিঘাটার ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মহম্মদ হিলালউদ্দিন বলেন, “গত বছর ওরা জুতো পেয়ে খুব খুশি হয়েছিল। এখন ফের যে-কে-সেই।”

বেহাল: বাদ পড়া জুতো নিয়ে ডোমকলে পড়ুয়া। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম।

বেহাল: বাদ পড়া জুতো নিয়ে ডোমকলে পড়ুয়া। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
ডোমকল শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১৬
Share: Save:

ছোটদের পা বাড়ে, জুতো বাড়ে না। জুতো পুরনো হয়, ফাটে, ছেঁড়ে। দু’টো মেঠো বর্ষা পার করলে তার আর থাকে কী?

গত বছর জানুয়ারিতে বোলপুর থেকে কলকাতায় ফেরার সময়ে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় দাঁড়িয়ে গিয়েছিল বর্ধমানের কাঁকসায়। রাস্তার পাশে ধুলো-পায়ে খেলছে স্কুলফেরত ক’টা ছেলেমেয়ে। পায়ে জুতো নেই কেন?

সমস্ত প্রাথমিক পড়ুয়াকে জুতো দেওয়ার জন্য তৎক্ষণাৎ শিক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কাঁকসা দিয়েই শুরু হয়েছিল জুতো বিলি। প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সমস্ত পড়ুয়া পেয়েছিল জুতো।

দু’টো বর্ষা পেরিয়ে সে সব জুতোর বেশির ভাগই আর পরার যোগ্য নেই। সামনে ফুটো, সুকতলা খুলে গিয়েছে। যে সব পড়ুয়ার বাবা-মা পেরেছেন, তাঁরা ফের জুতো কিনে দিয়েছেন। যাঁরা পারেননি, তাঁদের ছেলেমেয়েরা খালি পায়েই আবার স্কুল যাতায়াত শুরু করেছে।

মুর্শিদাবাদে হরিহরপাড়া থানার ট্যাংরামারি প্রাথমিক স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া ইয়াসিন শেখ, মিনুকা খাতুনদের বাড়ি থেকে চপ্পল কিনে দিয়েছে। বেলডাঙার সুতিঘাটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া মুনায়েম শেখ বা সাবিনা খাতুনদের অবশ্য তা জোটেনি। তারা আসছে খালি পায়েই। তাদের কথায়, “গত বছরের জুতো আগেই ছিঁড়ে গিয়েছে। নতুন জুতো কিনে দেওয়ার টাকা বাবার নেই।”

সুতিঘাটার ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক মহম্মদ হিলালউদ্দিন বলেন, “গত বছর ওরা জুতো পেয়ে খুব খুশি হয়েছিল। এখন ফের যে-কে-সেই।” ট্যাংরামারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসীমকুমার অধিকারী বলেন, “জুতো দেওয়া হয়েছিল গত বছর জুনে। এত দিন তা টেকে? পরে আর জুতো আসেনি।”

নদিয়ার হোগলবেড়িয়ায় নতুন চামনা প্রাথমিক স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে সৌরিক মণ্ডল। তার বাবা সপ্তম মণ্ডল বলেন, “ছোটদের এমনিতেই বছরে দু’জোড়া জুতো লাগে। সেখানে দু’টো বর্ষা গিয়েছে!” নাকাশিপাড়ার ধর্মদা প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রীবাসচন্দ্র দাস বলেন, “কিছু পড়ুয়া চপ্পল পায়ে আসছে, বাকিরা খালি পায়ে।’’ কৃষ্ণনগরে শ্রীরামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ শিক্ষায়তনের প্রধান শিক্ষক গৌতম মিত্রও একই কথা জানিয়েছেন।

কবে আসবে নতুন জুতো? আদৌ আর আসবে কি?

অন্য বিষয়গুলি:

Poor student barefoot Domkal Primary school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE