মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অর্ডিন্যান্স জারির নির্দেশের পর কেটে গিয়েছে দু’দিন। সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দাদের আশা, তিনদিনের মাথায় অর্ডিন্যান্স জারি হবে। এর পরেই জমির অধিকার পাবেন তাঁরা। সেই আলোচনাতেই এখন মশগুল দিনহাটার পোয়াতুরকুঠি থেকে মাথাভাঙার নলগ্রাম। তা নিয়ে চড়ছে রাজনীতির পারদও।
সাবেক ছিটের বাসিন্দাদের কয়েকজনের কথায়, “দেখতে দেখতে তিন বছর পার হয়ে গিয়েছে। আর অপেক্ষার ইচ্ছে করছে না। এখন মনে হচ্ছে জমির কাগজপত্র কবে হাতে পাব। তা পেলে কিছু কাজ করতে পারি আমরা।” মুখ্যমন্ত্রীর ওই নির্দেশের পরে মাঠে নামার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বিরোধীরাও। বিজেপির দাবি, এ বারে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও জমি ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু না হলে রাস্তায় নামবে তারা। ভূমি রাজস্ব দফতরের কোচবিহার জেলা আধিকারিক তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক ডিকি ভুটিয়া বলেন, “কলকাতায় ওই কাজ হচ্ছে। তা অনেকটাই এগিয়েছে। কাছে নির্দেশ পৌঁছলেই কাজ শুরু হবে।”
২০১৫ সালের ৩১ জুলাই রাতে ছিটমহল বিনিময় চুক্তি সম্পন্ন হয়। ওই সময় ভারতীয় ভূখণ্ডে ঘেরা ৫১টি বাংলাদেশি ছিটমহল ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। বর্তমানে সাবেক ওই ছিটমহলগুলিতে জনসংখ্যা প্রায় পনেরো হাজার। বাসিন্দাদের দাবি, চুক্তি অনুযায়ী ওই সাবেক ছিটমহলে থাকা জমির অধিকার তাঁদের হাতে তুলে দেবে সরকার। কিন্তু, তিন বছর পরেও জমির অধিকার দেওয়ার কোনও প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। তা নিয়েই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে সাবেক ছিটমহলে। বাসিন্দারা নানা ভাবে জমি সমস্যার সমাধান চেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন বহুবার। এ বারে মুখ্যমন্ত্রীর অর্ডিন্যান্স জারির ঘোষণার পরে জমি সমস্যা সমাধানের আশা করছেন তাঁরা। সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দা যুবক সাদ্দাম হোসেন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী এ বার জন্য সময় বেঁধে দিয়েছেন। তাই জমি সবাই খুব দ্রুত পেয়ে যাব বলেই আশা করছি।”
ভূমি রাজস্ব দফতর সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়ার পরেই ভূমি সংস্কার দফতরের প্রধান সচিব মনোজ পান্থ সে ব্যাপারে প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন। সাবেক ছিটমহলে ভূমি সংস্কার দফতর ৬৯০০ একর জমির উপরে সমীক্ষা করেছেন। ইতিমধ্যেই তাঁদের হাতে জমি সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য রয়েছে। বিজেপি এই বিষয়টিকেই হাতিয়ার করতে চাইছে বলে দল সূত্রে খবর। উন্নয়নের নামে দুর্নীতির অভিযোগ ও জমির অধিকারের দাবিতেও বিজেপি আগে সরব হয়েছে বলে নেতারা দাবি করেছেন।
ছিটমহল আন্দোলনের সঙ্গে দীর্ঘসময় যুক্ত ছিলেন বিজেপি নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত। তিনি বলেন, “জমির অধিকার বহু আগেই ওই মানুষদের দেওয়া উচিত ছিল। এতদিনে হয়নি কেন, সেটাই বড় প্রশ্ন। এ ছাড়া এখন যদি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ তিনদিনের মধ্যে অর্ডিন্যান্স জারি করে জমির অধিকার দেওয়ার কাজ শুরু হয় কি না সেদিকে লক্ষ্য রাখছি। তেমন না হলেই আন্দোলনে নামব।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলার এক নেতা পাল্টা বলেন, “বিজেপি কেন্দ্রে আছে। উন্নয়নের টাকা তারা ঠিকমতো দিচ্ছে না। সাবেক ছিটমহলের জন্য ভাবছেন একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশ মতোই কাজ হবে। বিজেপির এখানে কথা বলার জায়গা নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy