—প্রতীকী ছবি।
অ্যাম্বুল্যান্স চেয়েও না পেয়ে বাড়িতে পড়ে থেকে এক চা শ্রমিকের মৃত্যু নিয়ে পারস্পরিক চাপানউতোর বাড়াল তৃণমূল এবং বিজেপি। ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরে জমা পড়ল রিপোর্টও। শনিবার জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারে সভা ছিল রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর। আলিপুরদুয়ারের পথে বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমেই ঢেকলাপাড়া চা বাগানের শ্রমিক-মৃত্যু নিয়ে সরব হন তিনি। তবে শুভেন্দুকে পাল্টা আক্রমণ করেছে তৃণমূল।
জলপাইগুড়ি মেডিক্যালে স্ট্রেচার না পাওয়ায় স্বামী-পুত্রের বৃদ্ধার দেহ নিয়ে হাঁটা, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে অ্যাম্বুল্যান্স না মেলায় কালিয়াগঞ্জের এক বাবার মৃত শিশুসন্তানের দেহ বাজারের ব্যাগে ভরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা, মালদহের বামনগোলার অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে খাটিয়ায় চাপিয়ে রোগিণীকে নিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বাগডোগরায় শুভেন্দুর কটাক্ষ, ‘‘এই উন্নয়ন উত্তরবঙ্গের লোক পেয়েছেন! অ্যাম্বুল্যান্সের ন্যূনতম পরিষেবা, শববহনকারী গাড়ির তেলের ব্যবস্থা যে সরকার করতে পারে না, তাদের চোখে, তার মুখ্যমন্ত্রীর চোখে উত্তরবঙ্গের অবহেলিত, বঞ্চিত মানুষ অবস্থায় রয়েছেন, তা বারে বারে প্রমাণিত হয়েছে। নতুন কিছু নয়।"
হাসপাতালের কাছে অ্যাম্বুল্যান্স চেয়েছিল পরিবার। তবে বিকল থাকায় তা মেলেনি। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ডন্য অন্য গাড়ি ডাকার আর্থিক ক্ষমতা ছিল না মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের ঢেকলাপাড়া চা বাগানের শ্রমিক সুশীল ওরাওঁয়ের পরিবারের। বৃহস্পতিবার বিকেলে মারা যান তিনি।
আলিপুরদুয়ার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (ভারপ্রাপ্ত) কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, “ঢেকলাপাড়া চা বাগানের শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালের তরফে জেলা স্বাস্থ্য দফতরে একটি রিপোর্ট জমা পড়েছে। সেখানে অ্যাম্বুল্যান্স খারাপ থাকার কথাই বলা ছিল। তবে অ্যাম্বুল্যান্স সারাতে দেওয়া হয়েছে। হয়তো সোমবারের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে।” তিনি জানান, এ ব্যাপারে মাদারিহাটের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের থেকেও রিপোর্ট তলব করা হয়েছে।
জলপাইগুড়ির সভায় শুভেন্দু বলেন, ‘‘চা বাগানের এক জন মারা গিয়েছেন। অ্যাম্বুল্যান্স পর্যন্ত পাননি। এমনিই অবস্থা আমাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। এখানে আপনারা ‘আয়ুষ্মান ভারত’ পান না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য-সুবিধা প্রকল্প মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পেতে দেন না।” এ দিন দুপুরে মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা মৃত শ্রমিকের বাড়িতে যান। তাঁর অভিযোগ, “চা বাগানগুলোতে আগে ডাক্তার থাকতেন। কিন্তু তৃণমূল সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে, তাঁরা আর নেই।”
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহের মন্তব্য, “চা শ্রমিকের মৃত্যু এতটুকুও কম দুঃখের নয়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে চা বাগান ও আদিবাসী সমাজের উন্নয়নের জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা ও কাজ করে চলছেন। তার পরেও কিছু দুর্ঘটনা ঘটে যায়।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘যে কোনও মৃত্যুর গন্ধ পেলেই শুভেন্দু অধিকারী যে ভাবে উত্তরবঙ্গের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে ছুটে আসেন, সেটা কাম্য নয়।” রাজ্যসভার সদস্য তথা তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি প্রকাশ চিক বরাইকের আশ্বাস, “ঢেকলাপাড়া চা বাগানের শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় কারও কোনও গাফিলতি থাকলে, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হবে।” তৃণমূলের স্থানীয় নেতারাও এ দিন মৃত শ্রমিকের বাড়িতে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy