জখম বাসন্তী থানার এএসআই দেবাশিস মারিক। বৃহস্পতিবার বাসন্তী ব্লক হাসপাতালে। ছবি: সামসুল হুদা।
শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জখম হলেন তিন জন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর খেড়িয়া মোড়ের কাছে ওই ঘটনার পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশও। মাথা ফেটে গেল এক অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টরের। তবে গভীর রাত পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাসন্তীতে ঝামেলার খবর পেয়েছি। পুলিশকে বলেছি, নিরপেক্ষ তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দিতে।’’ স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন বিকেলে বাসন্তী পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সহ-সভাপতি মাজেদ মোল্লা দলেরই তিন কর্মীর সঙ্গে মোটরবাইকে চেপে ক্যানিং স্টেশনে যান। মাজেদকে পৌঁছে দিয়ে ফকির শেখ, সফিকুল খান এবং মহিম মল্লিক নামে ওই তিন তৃণমূল কর্মী বাসন্তীতে ফিরছিলেন। অভিযোগ, সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ খেড়িয়া মোড়ের কাছে তৃণমুলের বাসন্তী ব্লক সভাপতি মন্টু গাজির অনুগামীরা তাঁদের আক্রমণ করে। ফকির শেখেরা তিন জনই জখম হন। তাঁদের বাসন্তী হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়।
এর পরেই দলে মাজেদ এবং ফকিরের ঘনিষ্ঠেরা ভাঙনখালির কাছে বাসন্তী হাইওয়েতে কাঠের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি তোলেন। বাসন্তী থানার পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে জনতা বাধা দেয়। পুলিশ লাঠি চালালে জনতা ইট ছোড়ে। ইটের ঘায়ে মাথা ফাটে বাসন্তী থানার এএসআই দেবাশিস মারিকের। তাঁকেও ভর্তি করাতে হয় বাসন্তী হাসপাতালে। পরে তিনি একটি অভিযোগ দায়ের করেন। র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স নিয়ে গিয়ে সিআই (ক্যানিং) রতন চক্রবর্তী, এসডিপিও (ক্যানিং) সৌম্য রায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। লাঠি চালানোর অভিযোগ অবশ্য মানতে চায়নি পুলিশ।
তৃণমূল অন্দরের খবর, দলের ভিতরে এই বিরোধের সূত্রপাত পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে, এলাকায় প্রভাব বিস্তারের সূত্রে। মাজেদ মোল্লা তথ্য লুকিয়ে ভোটে লড়েছেন অভিযোগে সরব হন মন্টু গাজিরা। পদ থেকে সাময়িক সরতে হলেও কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পদে ফেরেন মাজেদ। তার পর থেকে দু’গোষ্ঠীর ঝামেলা লেগেই রয়েছে।
মাজেদ মোল্লার বক্তব্য, ‘‘দলে আমার বিরুদ্ধ-গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে আমাকে প্রাণে মারার পরিকল্পনা করছিল। ওরা ভেবেছিল, ফকিরদের সঙ্গে আমি মোটরবাইকে আছি। আমাকে না পেয়ে ওরা বন্দুকের বাঁট, লোহার রড দিয়ে ফকিরদের মারধর করে।’’ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে মন্টু গাজির দাবি, ‘‘ফকির সমাজ-বিরোধী। এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। মাজেদ মোল্লারা মিথ্যা বলছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy