বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর আদালতে সবংয়ে ছাত্র খুনের মামলার চার্জশিট জমা পড়েছে। আর শুক্রবারই সেই চার্জশিট নিয়ে প্রশ্ন তুললেন ধৃত ছাত্র পরিষদ (সিপি) কর্মীদের আইনজীবীরা। তাঁদের দাবি, আদালতে জমা পড়া চার্জশিট অসম্পূর্ণ। কারণ, পুলিশ ১৭ পাতার যে চার্জশিট দিয়েছে তাতে সাক্ষীদের জবানবন্দি, গোপন জবানবন্দি, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাগজ নেই।
এ দিন মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে ধৃত টিএমসিপি কর্মীদের জামিনের আবেদন জানান আইনজীবী গৌতম মল্লিক। তবে জামিনের আর্জি নাকচ হয়ে গিয়েছে। আজ, শনিবার মেদিনীপুর জেলা আদালতে ধৃত তিন টিএমসিপি কর্মীর জামিনের আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল। জেলা আদালতে আবেদন করেছিলেন গৌতমবাবুই। এ দিন তিনি শুরুতে ওই আবেদন প্রত্যাহার করেন। পরে মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে জামিনের আবেদন জানান। শুনানি চলাকালীন চার্জশিট নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ভারপ্রাপ্ত সিজেএম সুতপা মল্লিকের এজলাসে দু’টি পিটিশন জমা দেন ধৃত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সৌমেন গঙ্গোপাধ্যায়ের আইনজীবী অলোক মণ্ডল। একটিতে দাবি করা হয়, চার্জশিট অসম্পূর্ণ। অন্যটিতে দাবি করা হয়, সৌমেনের অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা শুরু হলেও চার্জশিট পেশের আগে নোটিস পাঠিয়ে পুলিশ তাঁর বক্তব্য জানেনি। অলোকবাবুর কথায়, “চার্জশিট অসম্পূর্ণ। পুলিশ নথিপত্রের প্রতিলিপিও দেয়নি।”
এই দু’টি পিটিশনের প্রেক্ষিতে সরকারপক্ষের আইনজীবী অসীম চট্টোপাধ্যায় আদালতের কাছে সময় চান। অসীমবাবুর দাবি, চার্জশিট অসম্পূর্ণ নয়। প্রয়োজনীয় নথি রয়েছে। প্রচুর কাগজ। তাই এক ফাইলে রাখা যায়নি। চার্জশিট জমা পড়ার পরে আদালত যে অর্ডার দেয়, সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলেন আইনজীবী অলোকবাবু। তাঁর দাবি, “ওই অর্ডার আগে থেকেই লেখা ছিল। জমা পড়ার পরে শুধুমাত্র দুু’টো শব্দ লেখা হয়েছে।” ভারপ্রাপ্ত সিজেএম সুতপাদেবী অবশ্য জানিয়ে দেন, এ নিয়ে কিছু বলার থাকলে তা লিখিত ভাবে জানাতে।
এ দিন ধৃত তিন টিএমসিপি কর্মী শেখ মুন্না আলি, সানোয়ার আলি এবং অসীম মাইতির জামিনের আবেদন জানান গৌতমবাবু। ধৃত সিপি কর্মী অনুপম আদকের জামিনের আবেদনও জানান আইনজীবী হরিসাধন ভট্টাচার্য। দীর্ঘ সময়ের পরে জামিন নাকচের নির্দেশ শোনান বিচারক। পরবর্তী শুনানি হবে ২৯ সেপ্টেম্বর।
গত ৭ অগস্ট সবং সজনীকান্ত কলেজ চত্বরে সিপি কর্মী কৃষ্ণপ্রসাদ জানাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ওঠে। সেই মামলায় সাত জন গ্রেফতার হন। চার জন সিপি-র। তিন জন টিএমসিপি-র। চার্জশিটে যে ২১ জনের নাম রয়েছে, তার মধ্যে ১৯ জনই সিপি-র। দু’জন টিএমসিপি- র। সিপি-র ১৮ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে খুন-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারা। টিএমসিপি-র ধৃতদের মধ্যে অসীম মাইতির নাম চার্জশিটে নেই। অন্য দু’জনের বিরুদ্ধে মারধরের মতো জামিন যোগ্য ধারা েদওয়া হয়েছে।
এ দিন আদালতকক্ষে ধৃত সিপি- টিএমসিপি আইনজীবীদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ও হয়। শুনানি চলাকালীন অলোকবাবু বলেন, “পুলিশ এমন চার্জশিট জমা দিয়েছে, যার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে।” গৌতমবাবু জানালে অলোকবাবু বলেন, “আদালতে গায়ের জোর দেখাবেন না। পুলিশ আপনাদের জন্যই তো কেঁদে ভাসিয়ে দিচ্ছে।” গৌতমবাবু পাল্টা বলেন, “আপনারা আদালতকে ভুল বোঝাচ্ছেন।” ধৃত সিপি কর্মীর আইনজীবী হরিসাধনবাবুও বলেন, “চার্জশিটে স্পষ্ট, প্রকৃত দোষীদের আড়াল করতে চাইছে পুলিশ।” এরপর ভারপ্রাপ্ত সিজেএম আদালতকক্ষে এমন কথার্বাতা না বলতে বলেন।
আজ, শনিবার মেদিনীপুর জেলা আদালতে সিপি নেতা সৌমেনের জামিনের আবেদনের শুনানি রয়েছে। ৮ জন সিপি কর্মীর আগাম জামিনের আবেদনেরও শুনানি রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy