Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

আন্দামানের জেলে ‘বান্টি’, এখনও অধরা ‘বাবলি’

গয়না চুরি করে পোর্ট ব্লেয়ার থেকে কলকাতায় আসা যুগল ‘বান্টি-বাবলি’ সম্পর্কে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ছিল তারা স্বামী-স্ত্রী। তদন্ত এগোতে জানা গেল, ওই যুগল আদৌ স্বামী-স্ত্রীই নয়!

সিসি ক্যামেরা ফুটেজে এ ভাবেই দেখা গিয়েছে অনিতাকে।

সিসি ক্যামেরা ফুটেজে এ ভাবেই দেখা গিয়েছে অনিতাকে।

সুনন্দ ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৯ ০৩:১০
Share: Save:

তদন্তের পরতে পরতে উঠে আসছে নতুন নতুন গল্প!

গয়না চুরি করে পোর্ট ব্লেয়ার থেকে কলকাতায় আসা যুগল ‘বান্টি-বাবলি’ সম্পর্কে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ছিল তারা স্বামী-স্ত্রী। তদন্ত এগোতে জানা গেল, ওই যুগল আদৌ স্বামী-স্ত্রীই নয়!

গত ১৮ জুন পোর্টব্লেয়ার থেকে স্পাইসজেটের বিমানে করে তারা কলকাতায় নামে। তাদের সম্পর্কে খবর আসে কলকাতা বিমানবন্দরে। অভিযোগ, আট থেকে দশ লক্ষ টাকার সোনার গয়না চুরি করে পালিয়ে আসছে তারা। কলকাতা বিমানবন্দরে বান্টি তথা বিনোদ ঠাকুর ধরা পড়ে গেলেও বাবলি তথা অনিতা গয়না নিয়ে পালিয়ে যায়।

অভিযোগ, সে পোর্ট ব্লেয়ার থেকেই সমস্ত চুরির গয়না গায়ে পড়ে নিয়েছিল। কলকাতা বিমানবন্দরে নেমে পুলিশি তৎপরতা দেখে শৌচালয়ে ঢুকে পোশাক বদলে পালিয়ে যায় অনিতা। এখনও সে অধরা।

আন্দামান পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে ভাবা হয়েছিল বিনোদ ও অনিতা স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু, জেরার মুখে উঠে এসেছে এক অন্য গল্প। বছর দেড়েক আগেও নাকি তারা একে অপরকে চিনত না। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের বাসিন্দা অনিতার বিয়ে হয় এক যুবকের সঙ্গে। অনিতাকে বিয়ে করে আগ্রায় নিয়ে চলে যায় সেই যুবক। বছর খানেক আগে স্বামীর কাছ থেকে পালিয়ে দিল্লি যায় অনিতা। কেন সে পালিয়ে গিয়েছিল, সে সম্পর্কে অবশ্য এখনও আঁধারে তদন্তকারীরা।

আন্দামানের আবেরদিন থানার বড়বাবু সঞ্জয় কুমার রবিবার জানান, দিল্লি যাওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই বিনোদের সঙ্গে আলাপ ও প্রেম হয় অনিতার। তার স্বামী তাকে সর্বত্র খুঁজে বেড়াচ্ছে বুঝতে পেরে, বিনোদকে নিয়ে অনিতা পালিয়ে আসে পোর্ট ব্লেয়ারে। সেখানে পৌঁছনোর কয়েক দিন পর থেকেই পকেটে টান পড়তে শুরু করে তাদের। তখন স্থানীয় ব্যবসায়ী আশুতোষ কর্মকারের সঙ্গে যোগাযোগ হয় বিনোদের। তাঁর লন্ড্রিতে কাজ পায় বিনোদ। পাশেই ছিল আশুতোষবাবুর সোনার গয়নার দোকান, যেখানে তিনি নিজে বসতেন। প্রতিদিন সোনার দোকান খোলা-বন্ধ করার সময়ে বিনোদ আশুতোষকে সাহায্য করত।

সঞ্জয়বাবু জানান, ওই গয়না দেখে বিনোদ-অনিতার লোভ বাড়ে। তাদের পরিকল্পনা ছিল, সোনার গয়না লুট করে তারা দিল্লি গিয়ে নতুন করে ঘর বাঁধবে। পরিকল্পনা মতো সোনার দোকানের নকল চাবি বানিয়ে ফেলে বিনোদ। আগে থেকেই ১৮ জুনের বিমানের টিকিট কেটে রাখে। কিন্তু, পোর্ট ব্লেয়ার থেকে তো দিল্লিরও উড়ান রয়েছে। যদি দিল্লি যাওয়া মনস্থই করত, তবে সরাসরি দিল্লির টিকিট কেন কেটে নিল না?

সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘এ সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর বিনোদ দিচ্ছে না। আমরা শনিবার কলকাতা থেকে ওকে আন্দামানে নিয়ে এসেছি। শনিবারেই তাকে পোর্ট ব্লেয়ারের আদালতে তোলা হয়েছিল। চার দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে নিয়ে যতটা পারছি তথ্য বার করার চেষ্টা করছি। এখন আমাদের লক্ষ্য গয়না উদ্ধার করা। কলকাতায়, ক্যানিংয়ে অনেক খুঁজেও অনিতাকে পাওয়া যায়নি।’’

আশঙ্কা, অনিতা পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে অন্যত্র গা ঢাকা দিয়েছে। তবে তদন্তকারীরা মনে করছেন, শীঘ্রই তাকে ধরা যাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime CCTV Police Port Blair
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy