ট্রলি-কাণ্ডে রহস্যের পর্দা অনেকটা উঠলেও এখনও অধরা বহু প্রশ্নের উত্তর। যেমন এখনও স্পষ্ট নয়, কী কারণে ধৃত মা এবং মেয়ে পিসিশাশুড়ির দেহ নিয়ে মধ্যমগ্রাম থেকে কলকাতার কুমোরটুলি ঘাটে গেলেন। লালবাজার সূত্রে খবর, ফাল্গুনী ঘোষের বাবা, অর্থাৎ আরতি ঘোষের স্বামী আগে আহিরীটোলা অঞ্চলে থাকতেন। তাই সেখানকার অলিগলি হাতের তালুর মতো চেনা মা-মেয়ের। সেই কারণেই দেহ ফেলার জন্য কুমোরটুলি ঘাট এলাকাকে ওই দু’জন বেছে নিয়েছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতেই অভিযুক্ত ফাল্গুনীকে নিয়ে মধ্যমগ্রামের বীরেশপল্লীতে তাঁর ভাড়াবাড়িতে গিয়েছিল কলকাতার নর্থ পোর্ট থানার পুলিশ। সঙ্গে ছিল ফরেন্সিক দলও। ভাড়াবাড়ি থেকে ২০টি জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, যে ইট দিয়ে পিসিশাশুড়ি সুমিতা ঘোষের মাথা, মুখ এবং ঘাড়ে আঘাত করেছিলেন ফাল্গুনী, সেটিও উদ্ধার করা গিয়েছে। ওই ইট বাড়ির বাইরে বাগানে ফেলে দিয়েছিলেন ফাল্গুনী।
ভাড়াবাড়ির অন্তত পাঁচটি জায়গা থেকে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা। মৃতের মোবাইল, ভোটার কার্ড, আধার কার্ড এবং ভ্যানিটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে, মা ও মেয়ের কাছে থাকা তিনটি মোবাইলও। আগেই জানা গিয়েছিল পিসিশাশুড়ির দেহ ট্রলি ব্যাগে ঢোকাতে ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে পা দুটো কেটে দিয়েছিলেন ফাল্গুনীরা। এই কাজে অন্য কেউ তাঁদের সাহায্য করেছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
মঙ্গলবার ভোরে যে ভ্যানে ট্রলি চাপিয়ে দোলতলা পর্যন্ত তাঁরা গিয়েছিলেন, সেই ভ্যানের চালক এই প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ভারী ট্রলি ব্যাগ নিয়ে মা আর মেয়ে ভ্যানে ওঠে। তার পর ভ্যানচালক দু’জনকে দোলতলায় নামিয়ে দিয়ে ১৩০ টাকা ভাড়া নেন। অস্বাভাবিক কিছু তাঁর নজরে আসেনি বলে জানিয়েছেন তিনি।
তবে যে ট্যাক্সি চেপে দোলতলা থেকে মা-মেয়ে কুমোরটুলি ঘাটে গিয়েছেন, সেই ট্যাক্সির চালক বলেন, “ভারী ব্যাগ দেখে সন্দেহ হয়। ওঁরা বলেছিলেন কুমোরটুলি ঘাটে নিয়ে যেতে। ভারী ব্যাগ নিয়ে প্রশ্ন করলে বলেন কাঁসার বাসন আর খাবার আছে।”