ঝাড়গ্রামের দিঘিশোলে আইনজীবীদের প্রতিনিধি দল। ছবি: দেবরাজ ঘোষ।
টনক নড়ল ধমকে। ‘মহান’ পুলিশ সুপারকে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ভর্ৎসনা করার তিন দিনের মধ্যেই ঝাড়গ্রামে এমপিএসের গুদামে থাকা মালপত্রের হিসেব নেওয়া হল। সোমবার পুলিশের উপস্থিতিতেই ওই হিসেব নেওয়ার কাজ চলে।
গত শুক্রবার এমপিএসের সহযোগী সংস্থার আইনজীবী হাইকোর্টে অভিযোগ করেন, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও ঝাড়গ্রামে সংস্থার গুদামগুলি খুলতে দেননি পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। এরপরই ক্ষিপ্ত প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর সরকারি আইনজীবীকে বলেন, ‘‘আপনার মহান পুলিশ সুপারকে বলে দেবেন, হাইকোর্ট যখন গুদামগুলি খুলে মজুত মালপত্রের হিসেব নিতে নির্দেশ দিয়েছে, সেটা বুঝেশুনেই দিয়েছে।’’
এরপরই এ দিন পুলিশের উপস্থিতিতে এমপিএসের সহযোগী সংস্থার গুদামের তালা খুলে মজুত মালপত্রের হিসেব নেওয়া হয়। সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ ঝাড়গ্রাম শহরের উপকন্ঠে দিঘিশোলে এমপিএসের বাণিজ্যিক ভবনে পৌঁছন আমানতকারী এবং এমপিএসের সহযোগী সংস্থার আইনজীবীদের ৬ সদস্যের দল। এসডিপিও (ঝাড়গ্রাম) বিবেক বর্মা এবং দু’পক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে এমপিএসের বাণিজ্যিক ভবনের সিল খুলে ৯টি গুদামের চাবি বার করে ফের বাণিজ্যিক ভবনটি সিল করে দেয় পুলিশ। এর পর দুপুর দু’টো পর্যন্ত প্রায় ঘন্টা তিনেক এমপিএসের সহযোগী সংস্থার ১২টি গুদামের মধ্যে ৯টি গুদামের তালা খুলে মজুত মালপত্রের হিসেব নেন আইনজীবীরা।
এমপিএসের সহযোগী সংস্থার আইনজীবী গৌরব দাস বলেন, “আগে পুলিশের অসহযোগিতায় মজুত মালের হিসেব করা যায়নি। কিন্তু এ দিন পুলিশ পূর্ণ সহযোগিতা করায় বাকি ৯টি গুদামের মজুত মালের হিসেব নেওয়া হয়েছে। আগামী ৯ জুন হাইকোর্টে হিসেব দাখিল করা হবে।” ঝাড়গ্রামে এমপিএসের প্রকল্প আধিকারিক তপনকুমার দাস জানান, ৯টি গুদামে মজুত চাল, গুঁড়ো মশলা, জ্যাম, জেলি, আটা, পাঁপড় প্রভৃতি জিনিসের হিসেব নিয়েছেন আইনজীবীরা। এ দিন পুলিশের ভূমিকায় খুশি আমানতকারীদের আইনজীবী শুভাশিস চক্রবর্তীও।
হাইকোর্টের নির্দেশে গত ৫ মে ঝাড়গ্রামে এমপিএসের সহযোগী সংস্থার ১২টি গুদামের মধ্যে তিনটি গুদামের চাবি খুলে মালপত্রের হিসেব নেওয়া হয়েছিল। বাকি ৯টি গুদামের চাবি খোলা হয়নি। সিল করা বাণিজ্যিক ভবনের আলমারিতে ওই ৯টি গুদামের চাবি ছিল। অভিযোগ, ওই গুদামগুলি খোলার ব্যাপারে পুলিশ সহযোগিতা করেনি। পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ অবশ্য অসহযোগিতার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।
এমপিএসের সব অফিস বন্ধের পরে লগ্নিকারীদের টাকা ফেরাতে সংস্থার যাবতীয় সম্পত্তির খতিয়ান পেশের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। ঝাড়গ্রামে এমপিএসের সহযোগী সংস্থার অফিস ও গুদামে কত জিনিস মজুত রয়েছে, তার দাম কত, সে সবও হিসেব করে আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছিল। এই সব জিনিস বিক্রির ৯০ শতাংশ টাকা হাইকোর্টে জমা রাখা হবে বলে আগেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy