নাবালিকা-সহ যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া মহিলাদের নাম গোপন রাখার বিষয়ে এ বার বাহিনীকে সচেতন করতে নেমেছে রাজ্য পুলিশ। প্রশাসনের খবর, রাজ্যের পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্বামী বিবেকানন্দ স্টেট পুলিশ অ্যাকাডেমিকে এর রূপরেখা তৈরি করতে বলা হয়েছে। প্রশিক্ষণে যুক্ত থাকবে রাজ্য জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমিও। পুলিশের একাংশ মানছে, আদালত নির্যাতিতাদের নাম প্রকাশ করতে নিষেধ করলেও খামতি থাকছে পুলিশের। ফের এমন একটি ঘটনা সামনে আসায় রাজ্য জুডিশিয়াল অ্যাকাডেমিকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে বলে আদালত। সেই নির্দেশ মেনেই এই পদক্ষেপ। রাজ্য পুলিশের তরফে বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার, রেল পুলিশ সুপার ও নগরপালদেরও এ ব্যাপারে বাহিনীর বাকি সদস্যদের সচেতন করার কথা বলা হয়েছে।
পুলিশের একাংশ মানছে, যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া মহিলা ও নাবালিকাদের প্রতি সংবেদনশীলতার অভাব আছে বাহিনীর অনেকের মধ্যেই। আর জি কর-কাণ্ডের পরে কলকাতার তৎকালীন নগরপাল বিনীত গোয়েলের বিরুদ্ধে নির্যাতিতার নাম-পরিচয় প্রকাশের অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা বিচারাধীন। পুলিশকর্তারা জানান, নিয়ম অনুযায়ী নাম-পরিচয় প্রকাশ তো দূর, নথি বা কেস ডায়েরিতেও তা রাখা যায় না।
রাজ্য পুলিশের বিভিন্ন থানার আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ধারা অনুযায়ী, যৌন নির্যাতনের শিকার মহিলা ও নাবালিকাদের নাম যাতে প্রকাশ্যে না আসে, তার জন্য বিভিন্ন সময়ে বাহিনীর সদস্যদের বলা হয়েছে। তবে অনেকেই এখনও সচেতন হননি। তাই ফের সচেতন করা হচ্ছে। তদন্তকারী অফিসারদের এ ব্যাপারে সচেতন করার উপরে বিশেষ ভাবে জোর দেওয়া হচ্ছে। উল্লেখ্য, শুধু পুলিশ নয়, যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া কারও নাম-পরিচয় কেউই সংবাদমাধ্যম বা সমাজমাধ্যমেও প্রকাশ করতে পারেন না। এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশও আছে। পরিচয় প্রকাশ করলে কোর্ট বা প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থাও নিতে পারে বলে পুলিশের দাবি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)