বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
নির্দেশ মেনে প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে হাজিরা দিলেন সিবিআইয়ের বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) প্রধান অশ্বিন শেণভি। তাঁর বক্তব্য শোনার পরেই বুধবার জোড়া নির্দেশ দিলেন উচ্চ আদালতের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সিটের আধিকারিকদের ‘পুলিশি হেনস্থা’র মুখে পড়ার অভিযোগ শুনে বিচারপতির নির্দেশ, সিটের কোনও আধিকারিককে আর হয়রান করতে পারবে না কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ। রাজ্যের মুখ্যসচিবের মাধ্যমে বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরেও আনতে চান বিচারপতি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ওঁদের (সিবিআই সিটের আধিকারিকদের) যেন টাচ (ছোঁয়া) না করা হয়। দুর্নীতির সঙ্গে কোনও আপস নয়।’’ এরই পাশাপাশি, আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক অর্পণ চট্টোপাধ্যায়কেও আগামী ৪ অক্টোবরের মধ্যে বদলির নির্দেশ দিলেন বিচারপতি।
সিবিআই তদন্তের ‘ধীর গতি আর গা-ছাড়া মনোভাবের’ কড়া সমালোচনা করে গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিবিআই সিটের প্রধানকে আদালতে তলব করেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই মতোই বুধবার হাজিরা দেন অশ্বিন। তাঁর কাছে বিচারপতি জানতে চান, তদন্ত করতে গিয়ে কোনও বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে কি না তদন্তকারীদের। তার জবাবে অশ্বিন দাবি করেন, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি কুন্তল ঘোষের অভিযোগের প্রেক্ষিতে আধিকারিকদের ‘পুলিশি হেনস্থা’র মুখে পড়তে হচ্ছে। তার প্রেক্ষিতে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানান, রাজ্য এবং কলকাতা পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দক্ষতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করে। তাদের দক্ষতা নিয়ে তিনি কিছু বলতে চান না। কিন্তু যেখানে আদালতের নির্দেশে কোনও তদন্ত চলছে, সেখানে কোনও ভাবেই তাদের ঢোকা উচিত নয় বলেই মত বিচারপতি। কলকাতা পুলিশ এবং রাজ্য পুলিশের উদ্দেশে তাঁর নির্দেশ, তারা সিটের কোনও আধিকারিককে আর হয়রান করতে পারবে না। আদালতের এই নির্দেশ না মানলে পুলিশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হতে পারে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘রাজ্যের মুখ্যসচিবের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনতে চাই যে, ইডি এবং সিবিআইয়ের সিটের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ পুলিশ যেন না করে।’’
প্রসঙ্গত, কুন্তলের অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে পুলিশি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক চট্টোপাধ্যায়। আদালতে শেণভির আরও অভিযোগ, আলিপুর আদালতে চার জন কবুল করেছিলেন যে, তাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন। ওই চার জনকে সিবিআই নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিল। কিন্তু বিচারক চট্টোপাধ্যায় চার জনকেই জেল হেফাজতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এর পরেই আলিপুরের আদালতের বিচারকের প্রসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সিবিআই বিচারকের কোনও ভাবেই হাই কোর্টের অর্ডারে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। এটি তাঁর এক্তিয়ার-বহির্ভূত কাজ। শুনেছি, বিচারক অপর্ণ চট্টোপাধ্যায়ের বদলির নির্দেশ হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তাঁর মাথায় কারও হাত রয়েছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে।’’ এর পরেই বিচারক চট্টোপাধ্যায়ের বদলির নির্দেশ দেন হাই কোর্টের বিচারপতি। তাঁর নির্দেশ, আগামী ৪ অক্টোবরের মধ্যে বিচারককে বদলি করাতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। তাঁর এই নির্দেশ পালন হল কি না, তা জানিয়ে রিপোর্টও দিতে হবে হাই কোর্টের রেজিস্ট্রারকে। বিচারপতি বলেন, ‘‘ওই পদটি এখন ফাঁকা রয়েছে। ওই বিচারক অন্তর্বর্তী দায়িত্বে রয়েছেন। তাই ওই পদটিতে ৪ অক্টোবরের মধ্যে নতুন বিচারককে বসাতে হবে। আমি নির্দেশ দিচ্ছি, বিচারক চট্টোপাধ্যায় নিয়োগ দুর্নীতির আর কোনও মামলা শুনতে পারবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy