বিজেপির সমর্থকদের সঙ্গে সংঘর্ষে ইটের ঘায়ে মাথা ফেটেছে এক সাব ইনস্পেক্টরের। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপি-র ‘অভিনন্দন যাত্রা’কে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর। পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের তুমুল মারামারিতে ইটবৃষ্টির সঙ্গে লাঠি, কাঁদানে গ্যাসের পাশাপাশি গুলি চলার অভিযোগও উঠেছে। শনিবার দুপুরের ওই ঘটনায় বেশ কয়েক জন পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ার এবং বিজেপি কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এ দিন বিকেল পর্যন্ত আটক করা হয়েছে ১০ জনকে।
লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে বিজেপি ভাল ফল করেছে। সে কারণেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দলের তরফে নাগরিক সম্বর্ধনা, অভিনন্দন যাত্রার মতো কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। বিজেপি সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন বুনিয়াদপুরে সেই কর্মসূচিতেই অংশ নিয়েছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বালুরঘাটের সদ্য জেতা বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। বুনিয়াদপুরের কর্মসূচি সেরে বালুরঘাট যাওয়ার পথে দুপুর ১টা নাগাদ দিলীপবাবুরা এসে পৌঁছন গঙ্গারামপুরে। সেখানে কালীতলায় দিলীপবাবুর নাগরিক সম্বর্ধনা সেরে বিশাল এক মিছিল নিয়ে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা বাসস্ট্যান্ডের দিকে এগোন। ওই মিছিলেরই একেবারে সামনে ছিলেন দিলীপবাবুরা।
পুনর্ভবা সেতুর কাছে পৌঁছতেই পুলিশ ওই মিছিলকে আটকে দেয় বলে বিজেপি-র অভিযোগ। ব্যারিকেড করে রাস্তা আটকে রাখে বিশাল পুলিশ বাহিনী। বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকদের জানিয়ে দেওয়া হয়, এলাকায় ১৪৪ ধারা রয়েছে। তাই মিছিল করা যাবে না। এর পরেই বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের বচসা বেধে যায়। মিনিট কয়েকের মধ্যেই শুরু হয় ইটবৃষ্টি। উড়ে আসা সেই ইটের ঘায়ে আহত হন বেশ কয়েক জন। তাদের মধ্যে ১০-১২ জন পুলিশ কর্মীও রয়েছেন। মাথা ফেটে যায় বিভু ভট্টাচার্য নামে গঙ্গারামপুর থানার এক সাব ইনস্পেক্টরের। পুলিশ এর পর পাল্টা লাঠিচার্জ করা শুরু করে। পরিস্থিতি আচমকাই হাতের বাইরে চলে যায়। দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয়ে য়ায় প্রবল মারপিট। শেষে উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায়। বিজেপি-র দাবি পুলিশ তিন রাউন্ড গুলিও চালিয়েছে। তারা আরও দাবি করে, গোটা ঘটনায় তাদের দলের ১০-১৫ জন আহত হয়েছেন। যদিও পুলিশের তরফে গুলি চালানোর কথা স্বীকার করা হয়নি।
বিজেপি-র ‘অভিনন্দন যাত্রা’য় দিলীপ ঘোষ।
আরও পড়ুন: আলিগড়ে শিশু খুনের অভিযুক্ত জেল খেটেছিল নিজের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে!
আরও পড়ুন: নিজেরা লড়াই করে দলটাকে হারিয়ে দিলেন: মমতা
ঘটনার সময় দিলীপ ঘোষের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে নিরাপদ জায়গায় রাস্তার পাশেই সরিয়ে নিয়ে যান। পরে তিনি বলেন, ‘‘আমরা রাস্তায় হাঁটলে সমস্যাটা কী? পুলিশ দিয়ে আগে থেকে রাস্তা বন্ধ করে রেখেছে। কেন ১৪৪ ধারা? এটা কি কাশ্মীর? মুখ্যমন্ত্রীর এমন অদ্ভুত কাণ্ডকারখানা, এ নিয়ে কী বলব!’’ তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘‘গঙ্গারামপুর গুন্ডা-মস্তানদের জায়গা। দুষ্কৃতিকারী আর পুলিশ মিলে এটা করেছে। এই জেলার পুলিশ সুপারের মদতেই এ সব হয়েছে।’’
ভাঙচুর করা হয়েছে পুলিশের গাড়িতে। নিজস্ব চিত্র।
বালুরঘাটের প্রাক্তন সাংসদ তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি অর্পিতা ঘোষ এ দিনের ঘটনার জন্য বিজেপিকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘গোটা রাজ্য জুড়ে অসভ্যতা করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বার বার শান্তি বজায় রাখার কথা বলছেন। ওরা অশান্ত করে তুলছে। উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবেই এটা করা হচ্ছে। প্রশাসনের সঙ্গে যে ব্যবহারটা আজ ওরা করল, খুবই নিন্দনীয়। মানুষ সব দেখছে।’’
এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কোনও ভাবে যোগাযোগ করা যায়নি। ঘটনাস্থলে বাহিনীর দায়িত্বে থাকা দক্ষিণ দিনাজপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ওয়াংডেন ভুটিয়া এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করে না চাইলেও তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ১০-১২ জন পুলিশ কর্মী, সিভিক ভলান্টিয়ার আহত হয়েছেন। এক সাব ইনস্পেকটরের মাথা ফেটেছে। আহতদের গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy