গাড়ির ধাক্কায় জখম এক বৃদ্ধের চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহে নেমে বিপাকে পড়ল দেবীপুর ব্যবসায়ী সমিতি। রবিবার রাতে জলঙ্গির ওই ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি, সম্পাদক- সহ মোট ১৩ জন কর্মকর্তাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সুপার সি সুধাকর বলেন, ‘‘পুলিশকে মারধর, সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার মতো বেশ কয়েকটি অভিযোগে ওঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাহী সদস্য সুখেন্দু দাস অবশ্য এমন অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি জানান, রবিবার সন্ধ্যায় দেবীপুর বাজারে বসে কয়েকজন তাস খেলছিল। জখম ওই বৃদ্ধের চিকিৎসার জন্য অন্যদের মতো তাঁদের কাছেও সাহায্য চাইতে যান ব্যবসায়ী সমিতির তিন সদস্য। আচমকা সেখানে পুলিশ হাজির হয়। তাস খেলার লোকজন পালিয়ে যান। অর্থ সংগ্রহ করতে যাওয়া ব্যবসায়ী সমিতির তিন জনকে পুলিশ ধরে ও তাঁদের কাছ থেকে ২৮৮০ টাকা কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরেই ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকার মানুষ পুলিশকে ঘেরাও করে। রাতে সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক- সহ মোট ১৩ জন কর্মকর্তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও আসামি ছিনতাইয়ের মতো ৮টি ধারায় মিথ্যা মামলা রুজু করেছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ী সমিতির।
শনিবার বিকালে দেবীপুর বাজারে ব্রজেন্দ্রনাথ মণ্ডল নামে বছর ষাটেকের এক বৃদ্ধ গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর জখম হন। তিনি মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ব্রজেন্দ্রনাথ দেবীপুর বাজারে একটি চায়ের দোকানে কাজ করেন। চিকিৎসার জন্য রবিবার সন্ধ্যায় ব্রজেন্দ্রনাথের ছেলে সুখেন মণ্ডলকে সঙ্গে নিয়ে অর্থ সংগ্রহে বের হন সমিতির তিন সদস্য— সূর্যকান্ত ঘোষ, বিভূতি ঘোষ ও বিপুল সরকার। বিভূতিবাবু জানান, তাসের ঠেকের লোকজন পালিয়ে যাওয়ার পরেই বাজার ব্যবসায়ী সমিতির ওই তিন জনকে গাড়িতে তোলে পুলিশ। তখনই খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্থানীয় লোকজন। পুলিশের গাড়ি ঘেরাও করে তাঁরা ওই তিন জনকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি তোলেন। ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে সুশান্ত দাস বলেন, ‘‘মারমুখী জনতার হাত থেকে বাঁচাতে পুলিশকর্মীদের একটি ঘরে নিয়ে যান ব্যবসায়ী সমিতির কর্তারা। তখন পুলিশ বিভূতিদের ছেড়ে দেয়। ২৮৮০ টাকাও ফেরত দেয়। পুলিশের গাড়িতে ছিল কাজিপাড়া গ্রামের মদের ঠেক থেকে ধৃত ৪ জন। তারাও পালিয়ে যায়।’’
পুলিশের দাবি, তাঁদের কর্মীদের মারধর করেছে দেবীপুরের লোকজন। কাজিপাড়া থেকে ধৃত ৪ জনকে ধরে দিতে এবং দেবীপুরে তাসের ঠেক থেকে পলাতকদের নামধাম জানানোর জন্য ব্যবসায়ী সমিতির কর্তাদের চাপ দেয় পুলিশ। দেবীপুর ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাহী সদস্য সুখেন্দু দাস বলেন, ‘‘পুলিশের দাবি না মানলে ব্যবসায়ী সমিতির কর্তাদের গ্রেফতার করা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। পরে পুলিশ কর্তাদের গ্রেফতার করে।’’
ধৃতদের আইনজীবী মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধৃতদের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। ওই মামলার কেস ডায়েরি ও পুলিশকে মারধরের বিষয়ে মেডিক্যাল রিপোর্ট ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদালতে জমা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy