বুধবার দুপুর দুটো থেকে রাত পর্যন্ত কয়েক হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা রাজা এস সি মল্লিক রোডে বিক্ষোভে অংশ নেন। নিজস্ব চিত্র।
বেতন বৈষম্যের অভিযোগ তুলে প্রায় সাত ঘণ্টা বাঘাযতীনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষকদের একটা অংশ। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর বুধবার সমাধানসূত্র মেলেনি। রাস্তা অবরোধ তুলে নিলেও, প্রাথমিক শিক্ষকরা রাতভর পাশের একটি পার্কে অবস্থানে বসেছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলার নাম করে থানায় ডেকে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল যাদবপুর থানার পুলিশের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে সিপিএম এবং এসএফআই।
পুলিশ জানিয়েছে, আন্দোলনকারীদের মধ্যে ১১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মধ্যে ‘উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’–এর নেত্রী পৃথা বিশ্বাস-সহ সাত জনের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এ দিনই তাঁদের আলিপুর আদালতে তোলা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
এই গ্রেফতারি প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অপদার্থ সরকার। বেতন বৈষম্যের বিষয়টি যাঁরা সরকারকে মনে করিয়ে দিতে চাইছেন, গায়ের জোরে তাঁদেরই গ্রেফতার করছে এই সরকারের পুলিশ। তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি।’’ একই রকম ভাবে বিষয়টির নিন্দা করছেন সিমিএমের ছাত্র সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বেতন বৈষম্যের দাবি জানিয়ে শিক্ষকরা কোনও বেআইনি কাজ করেননি যে তাঁদের গ্রেফতার করতে হবে।নিন্দনীয় কাজ করছে সরকার।’’
আরও পড়ুন: বিদেশবাসের উচ্চাকাঙ্ক্ষা! আত্মীয় ডাক্তার পরিবারের সকলকে খুন করে লুঠের ছক কষেছিল টিয়া
বুধবার দুপুর দুটো থেকে রাত পর্যন্ত কয়েক হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা রাজা এস সি মল্লিক রোডে ওই বিক্ষোভে অংশ নেন। তার জেরে বাঘাযতীন, রানিকুঠি, নাকতলা, নেতাজিনগর থেকে গড়িয়া পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা হয়রানির মুখে পড়েন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ির দিকে রওনা হন আন্দোলনকারীরা। যদিও বাঘা যতীন মোড়ে ব্যারিকেড করে মিছিল আটকায় পুলিশ। ব্যারিকেড করা হয় সুলেখা মোড়েও। এ ভাবেই তাঁরা প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে রাস্তা অবরোধ করেন। পরবর্তী ক্ষেত্রে রাতে ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে তারা অবস্থানে বসতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা বাধে। এ ভাবেই সারা রাত পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এ দিন সকালে শিক্ষকদের গ্রেফতারের পর আরও বড়সড় আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে সংগঠনের পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুন: কলকাতা ও শহরতলিতে ফের তিন প্রাণ নিয়ে দৌরাত্ম্য ডেঙ্গির, ভরা হেমন্তেও ছড়াচ্ছে আতঙ্ক
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, সরকার যে ভাবে বেতনক্রম বাড়ানোর কথা বলেছিল, তা হয়নি। গ্রেড পে–এর সঙ্গে পে ব্যান্ডও পরিবর্তন হবে বলে দাবি করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, প্রাথমিক শিক্ষকদের বেসিক গ্রেড পে-তে মাত্র ৩০০ টাকা বেড়েছে। সরকারি বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে বাস্তবে অনেকের বেতন কাঠামো মিলছে না। বেতন কাঠামোর বৈষম্য নিয়ে নতুন করে সমাধান না হলে ফের অনশনের পথে তারা হাঁটবে বলে জানানো হয়েছে ‘উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর তরফে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy