Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

মেয়ে হারিয়ে গিয়েছে, খুঁজতে বেরোতে গাড়িভাড়া চাইছে পুলিশ!

বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, বিষয়টি দেখা হচ্ছে। কিন্তু অভিযোগ নেওয়ার চার দিন হয়ে গেলেও কেন নিখোঁজ নাবালিকা উদ্ধার হল না, পাঁচ দিন পরেও তার উত্তর মেলেনি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দীক্ষা ভুঁইয়া
শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৯ ০২:৪৯
Share: Save:

স্কুল থেকে মেয়ে বাড়ি না-ফেরায় রাতে নিখোঁজ ডায়েরি করতে থানায় গিয়েছিলেন মা। অভিযোগ, থানা মায়ের বক্তব্যে কান দেয়নি। সে-রাতে কোনও অভিযোগও নেয়নি। উল্টে এক দিন পরে এফআইআর নিলেও মেয়েটিকে খুঁজে আনার জন্য টাকা দিতে হবে বলে দাবি করেন থানার এক অফিসার। টাকা কিসের? ওই অফিসার গাড়িভাড়া বাবদ টাকা চান বলে অভিযোগ। ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানা এলাকার।

বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, বিষয়টি দেখা হচ্ছে। কিন্তু অভিযোগ নেওয়ার চার দিন হয়ে গেলেও কেন নিখোঁজ নাবালিকা উদ্ধার হল না, পাঁচ দিন পরেও তার উত্তর মেলেনি।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জানাচ্ছে, বিষ্ণুপুর থানা এলাকার একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এক কিশোরী পড়ুয়া বুধবার স্কুল যাবে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি। মা রাতেই বিষ্ণুপুর থানার দ্বারস্থ হন। অভিযোগ, সব জানানোর পরেও থানা সে-রাতে কোনও অভিযোগ নিতে রাজি হয়নি। নিরুপায় হয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাছে যান মা। পরের দিন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার লোকজন থানায় যাওয়ার পরে পুলিশ এফআইআর নেয়।

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বক্তব্য, বছর চোদ্দোর নাবালিকা নিখোঁজ হলে অপহরণের মামলা রুজু করে সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত শুরু করটাই দস্তুর। কিন্তু পাঁচ দিনেও ওই কিশোরীর কোনও খোঁজ আনতে পারেনি পুলিশ। উল্টে শনিবার থানায় গেলে তদন্তকারী অফিসার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও কিশোরীর মাকে জানান, মেয়েকে খুঁজে এনে দিতে গেলে টাকা লাগবে।

ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জানাচ্ছে, তারা একটি সূত্রে খবর পেয়েছে, মেয়েটি এখন কলকাতায় আছে। কিন্তু পুলিশ তাকে উদ্ধার করে আনার ব্যবস্থা করেনি। উল্টে টাকা দাবি করায় তারা রীতিমতো শঙ্কিত। অভিযোগ, সংস্থার লোকজন কিশোরীর মাকে নিয়ে শনিবারেও বিষ্ণুপুর থানার বড়বাবুর সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু থানা থেকে জানানো হয়, বড়বাবুর সময় নেই, দেখা করতে পারবেন না। নিখোঁজ কিশোরীর মায়ের অভিযোগ, ‘‘আমাদের বলা হয়, ২ জুলাইয়ের আগে কিছু করা সম্ভব নয়। থানায় লোক কম। আরও অনেক কাজ আছে পুলিশের।’’ পরে সেকেন্ড অফিসারের সঙ্গে কাছে গেলে তিনি কোনও কথা বলতে রাজি হননি বলে কিশোরীর মায়ের অভিযোগ। পুলিশের ধমক খেয়ে নিখোঁজ কিশোরীর মাকে খালি হাতেই বাড়ি ফিরতে হয়েছে।

রাজ্যের যে-সব জেলা থেকে মেয়ে পাচার বেশি হয়, সেই তালিকার উপরের দিকেই আছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা। সাম্প্রতিক কালে ওই জেলার বিভিন্ন প্রান্তের উধাও হয়ে যাওয়া বেশ কয়েক জন মেয়েকে দিল্লি, মুম্বই-সহ দেশের নানা জায়গা থেকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তৎপর হওয়ার বদলে পুলিশ হাত গুটিয়ে বসে আছে এবং টাকা চাইছে বলে অভিযোগ ওঠায় নারী কল্যাণে কর্মরত সংস্থা-সহ বিভিন্ন শিবির উদ্বিগ্ন।

অন্য বিষয়গুলি:

Police Missing Girl Girl Trafficking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE