প্লাস্টিক দিয়ে মাথা ঢেকে বৃষ্টি থেকে বাঁচার চেষ্টা চালাচ্ছেন অনশনরত এসএসসি চাকরিপ্রার্থীরা। রবিবার ধর্মতলায়। ছবি: সুদীপ ঘোষ
চৈত্রের তীব্র তাপে যাঁরা অনশন করছিলেন, রবিবার সন্ধ্যার প্রবল বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতেই তাঁরা তা চালিয়ে যান। স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র পরীক্ষা পাশ করে অনশনরত ওই চাকরিপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন কবি শঙ্খ ঘোষ। একটি লিখিত বয়ানে স্বাক্ষর করে শঙ্খবাবু এসএসসি-কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন, এই চাকরিপ্রার্থীদের বিষয়টি ভেবে দেখা হোক।
রবিবার ১৮ দিনে পড়ল ওই শিক্ষকপদ প্রার্থীদের অনশন। তাঁদের অভিযোগ, বিভিন্ন জেলার স্কুলে স্কুলে বহু পদ খালি। তা সত্ত্বেও নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বহু শিক্ষকপদে প্রার্থীর নাম ওয়েটিং লিস্টে তুলে এসএসসি-কর্তৃপক্ষ চুপচাপ বসে আছেন। শূন্য পদের বিষয়টি ‘আপডেট’ বা হালতামামি করা হচ্ছে না। তাই প্রার্থীরা চাকরি পাচ্ছেন না। অবিলম্বে তাঁদের নিয়োগের ব্যবস্থা করার দাবিতে মেয়ো রোডে প্রেস ক্লাবের সামনে বসে অনশন করছেন অন্তত ৪০০ চাকরিপ্রার্থী। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ৫০ জন অনশনকারী।
এ দিন তানিয়া শেঠ নামে এক অনশনকারী জানান, শুক্রবার বিকেলে চার জন প্রতিনিধি তাঁদের অবস্থার কথা জানাতে শঙ্খবাবুর বাড়িতে যান। ‘‘শঙ্খবাবু আমাদের কথা মন দিয়ে শোনেন। তার পরে আমাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন। উনি আমাদের সমর্থনে কিছু কথা বলেন। সেগুলো আমরা লিখে নিই। সেই লেখা কিছু সংশোধন করে নীচে স্বাক্ষর করে দেন শঙ্খবাবু,’’ বলেন তানিয়া। রবিবার এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শঙ্খবাবু বলেন, ‘‘এসএসসি-র চাকরিপ্রার্থীরা আমার কাছে এসেছিলেন। ওঁদের অনশন ১৮ দিনে পড়ল। ওঁদের প্রতি আমি সহানুভূতি প্রকাশ করেছি।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
যে-লেখার নীচে শঙ্খবাবু স্বাক্ষর করেছেন, তাতে লেখা রয়েছে, ‘‘রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে এঁদের মধ্যে জনা পঞ্চাশেক গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় স্থানান্তরিত হয়েছেন। শহরের প্রায় কেন্দ্রস্থলে সবারই চোখের সামনে এমনও যে ঘটে চলেছে, তার জন্য রাজ্যবাসী হিসাবে লজ্জা হওয়া উচিত। এই লজ্জা থেকে ত্রাণ পাওয়ার কোনও উপায় বার করা যায় কি না, কর্তৃপক্ষকে সে-কথাটা এক বার ভেবে দেখার অনুরোধ জানাই।’’ শঙ্খবাবু ফোনে এই বক্তব্য সমর্থন করেন।
কবি শঙ্খ ঘোষের স্বাক্ষর
গত দু’দিনে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে অনশনরত চাকরিপ্রার্থীদের বেশ কয়েক জন খোলা আকাশের নীচে কার্যত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভিজেছেন। কয়েক জন প্রার্থী জানান, এলাকাটি সেনাবাহিনীর। তাই ওখানে খুঁটি পুঁতে ত্রিপল টাঙানো যাবে না। তাই প্রবল বৃষ্টির মধ্যে অনশনকারীদের বাঁচাতে তাঁদেরই কয়েক জন উঁচু করে ত্রিপল তুলে ধরে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেই ত্রিপলের তলায় কয়েক জন আশ্রয় পান। তবে তাতেও ঝড়বৃষ্টি থেকে বাঁচা যায়নি বলে জানান প্রার্থীরা। রবিবার সন্ধ্যার পরে শিলাবৃষ্টিতেও তাঁদের নাকাল হতে হয়।
অনশনকারীদের দাবিদাওয়ার ব্যাপারে এখনও কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। এসএসসি-র চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার জানান, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে নিয়োগের জন্য পর্যায়ক্রমে তৃতীয় দফার কাউন্সেলিং চলছে। কোন বিষয়ে শূন্য পদ কত, কবে কাউন্সেলিং, তা এসএসসি-র ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের চাকরি হবে শূন্য পদ অনুযায়ী। ‘‘ট্রেনে ওয়েটিং লিস্টে থাকা সব যাত্রীর কি একই ট্রেনে জায়গা হয়,’’ প্রশ্ন তুলেছেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy