রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) বিরোধিতার প্রশ্নে সিপিএমের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের সাম্প্রতিক পশ্চিমবঙ্গ সফর সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে শনিবার তিনি বলেন, ‘‘সম্প্রতি যে পার্টির (সিপিএমের) পেপার বেরিয়েছে তা পড়ে দেখবেন, তাতে ফ্যাসিস্ট শব্দটি বাদ রাখা হয়েছে। আমরা পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতাদের এনে কোথাও কোনও সভা করিনি। আজ তৃণমূল যে রাজনৈতিক দোষে দুষ্ট, সেই একই রাজনৈতিক দোষে দূষ্ট অন্য রাজনৈতিক দলগুলিও। এই হিম্মত কোনও রাজনৈতিক দলের নেই।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমরা কেউ বিজেপিকে কোনও সময় ফ্যাসিস্ট বলি, কেউ বর্বর বলি। আবার কখনও কেউ তাকে সেই বন্ধনী থেকে বাইরে রাখি। কিন্তু কংগ্রেসের মতাদর্শ, কংগ্রেসের আদর্শ নিয়ে রাহুল গান্ধী প্রত্যেক দিন লড়াই করছেন। মল্লিকার্জুন খড়্গে লড়ছেন।’’
বেশ কয়েক বছর আগে সিপিএমের এক ইংরেজি মুখপত্রে তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক তথা বর্তমান কো-অর্ডিনেটর প্রকাশ কারাট লিখেছিলেন, ‘‘বিজেপিকে আধা-ফ্যাসিস্ট বলা হলেও, সম্পূর্ণ ভাবে ফ্যাসিস্ট এখনই বলা যাবে না।’’ আর সম্প্রতি প্রকাশিত সিপিএমের সর্বভারতীয় সম্মেলনের খসড়াতেও এমনই উল্লেখ রয়েছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। আর সিপিএম পার্টির এই দলিলের উপর ভিত্তি করেই শুভঙ্কর এমন মন্তব্য করেছেন বলেই মত বিধান ভবনের একাংশের। সঙ্গে ১৯৮৯ সালে রাজীব গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরাতে কলকাতার শহিদ মিনারে বিজেপি নেতাদের নিয়ে সিপিএমের যে সভা হয়েছিল, সে কথাও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। বেশ কয়েকটি নির্বাচন একে অপরের সঙ্গে জোট করে লড়াই করার পর, আগামী বিধানসভা ভোটে সিপিএম-কংগ্রেস আবারও জোট বাঁধবে কি না, তা নিয়েও জোর জল্পনা চলছে দু’দলের অন্দরেই। আর সেই আবহেই এমন মন্তব্য করলেন কংগ্রেস সভাপতি।
আরও পড়ুন:
সঙ্ঘ প্রধানের বাংলা সফরের সময় কেন কংগ্রেস বিরোধিতা করে রাস্তায় নামেনি? এমন প্রশ্নের জবাবে শুভঙ্কর বলেন, ‘‘সেই সময় মাধ্যমিক পরীক্ষা চলছিল। সেই বিধি মেনেই আমরা কর্মসূচি করিনি। তবে সাংবাদিক বৈঠক করে আমরা আমাদের কথা বলেছিলাম। কিন্তু কোনও রাজনৈতিক দলকে প্রতিবাদ করতে দেখিনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিজেপি তো করবে না। কিন্তু মতাদর্শের লড়াইয়ে কংগ্রেস ছাড়া আর কোনও রাজনৈতিক দল আরএসএসের বিরুদ্ধে লড়াই করে না। তারা যদি লড়াই করত, তবে এ ভাবে ময়দান ছেড়ে দিত না।’’
উল্লেখ্য, বিধানসভা ভবনে প্রদেশ কংগ্রেস সদস্যদের নিয়ে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই কর্মসূচিতে অংশ নেন পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক গোলাম আহমেদ মীর, প্রাক্তন সাংসদ অধীর চৌধুরী, প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য প্রমুখ।