বিজেপির ছাতার তলায় থাকা সরকারি কর্মচারী পরিষদ বেতন কমিশন অভিযান।—নিজস্ব চিত্র।
চলতি মাসেই জমা পড়ছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের নতুন বেতন কাঠামোর সুপারিশ। বিজেপির কর্মী ইউনিয়নকে বুধবার এ কথাই জানানো হল বেতন কমিশনের তরফে। কমিশনের চেয়ারম্যানের ইস্তফা চেয়ে এ দিন বিকাশ ভবন অভিযানের ডাক দিয়েছিল বিজেপির ইউনিয়ন ‘সরকারি কর্মচারী পরিষদ’। মিছিলকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত পৌঁছতে দেয়নি পুলিশ। কিন্তু সংগঠনের শীর্ষ নেতারা বেতন কমিশনের দফতরে গিয়ে স্মারকলিপি জমা দেন। চলতি মাসেই নয়া বেতনক্রমের সুপারিশ জমা দেওয়ার আশ্বাস তখনই দেওয়া হয়েছে বলে কর্মচারী পরিষদের দাবি।
২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে গঠিত হয়েছিল এই বেতন কমিশন। তার পরে সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে, কিন্তু নতুন বেতন কাঠামোর সুপারিশ এখনও রাজ্য সরকারের টেবিলে পেশ করতে পারেনি বেতন কমিশন। দফায় দফায় কমিশনের মেয়াদ বাড়িয়েছে রাজ্য সরকার আর এ রাজ্যের সরকারি কর্মীদের জন্য নতুন বেতনক্রম চালু করার প্রক্রিয়া ক্রমশ পিছিয়ে যেতে থেকেছে।
স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে কোনও বেতন কমিশনের মেয়াদ এত দীর্ঘায়িত হয়নি। তাই বেতন কমিশন এবং রাজ্য সরকারের সমালোচনায় অনেক দিন ধরেই মুখর হয়ে উঠেছে এ রাজ্যের বিভিন্ন কর্মী সংগঠন। বিজেপির ছাতার তলায় থাকা সরকারি কর্মচারী পরিষদ এ দিন বেতন কমিশন অভিযানের ডাক দিয়েছিল। অবিলম্বে বেতন কমিশনের সুপারিশ জমা দিতে হবে, না পারলে কমিশনের চেয়ারম্যান পদ থেকে অভিরূপ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে— মূলত এই দাবিতেই এ দিন অভিযানের ডাক দেওয়া হয়। সল্টলেকের করুণাময়ী থেকে মিছিল করে বিকাশ ভবনে বেতন কমিশনের দফতর পর্যন্ত যাওয়া কর্মসূচি নেওয়া হয়।
কংগ্রেসের সঙ্গে থাকা কর্মী সংগঠন কনফেডারেশনের একটি অংশও বিজেপির ডাকে সাড়া দেয়। কনফেডারেশনের রাজ্য স্তরের নেতা সুবীর সাহার নেতৃত্বে শ’দেড়েক সরকারি কর্মী এ দিন করণাময়ী যান এবং কর্মচারী পরিষদের কর্মসূচিতে সামিল হন।
আরও পড়ুন: রোজভ্যালি কাণ্ডে এ বার ঋতুপর্ণাকে ডেকে পাঠাল ইডি
মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন কর্মচারী পরিষদের রাজ্য আহ্বায়ক দেবাশিস শীল। অনেকেই এ দিনের মিছিলে কুকুরের মুখোশ পরে হাঁটেন। মহার্ঘ ভাতার (ডিএ) দাবিতে রাজ্য সরকারি কর্মীরা হইচই শুরু করায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক বার বলেছিলেন ‘ঘেউ ঘেউ করে লাভ নেই’। সেই মন্তব্যের প্রতীকী বিরোধিতার জন্যই কুকুরের মুখোশ পরে বেতন কমিশন অভিযানে অংশ নেন অনেকে।
কুকুরের মুখোশ পরে বেতন কমিশন অভিযান।—নিজস্ব চিত্র।
তবে মুখোশেই শেষ নয়। বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকারের কুশপুত্তলিকাও এ দিন দাহ করেন আন্দোলনকারীরা। কর্মচারী পরিষদের মিছিলকে অবশ্য পুলিশ এ দিন বিকাশ ভবন পর্যন্ত পৌঁছতে দেয়নি। ময়ূখ ভবনের সামনের মোড়েই আটকে দেওয়া হয় মিছিল। তাতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। কিছু ক্ষণের জন্য অবরূদ্ধ হয়ে পড়ে রাস্তা। পরে আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে একটি প্রতিনিধি দলকে বিকাশ ভবনে যেতে দেওয়া হয়। তাঁরাই স্মারকলিপি জমা দিয়ে আসেন।
আরও পড়ুন: হিন্দু মরুক! দিলীপ ঘোষের মন্তব্য ঘিরে তীব্র বিতর্ক, বিজেপির দাবি ভুয়ো ভিডিয়ো
বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকার অবশ্য স্মারকলিপি নেওয়ার জন্য উপস্থিত ছিলেন না। কমিশনের উপ-সচিব আন্দোলনকারী সরকারি কর্মীদের কাছ থেকে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। চলতি মাসে অর্থাৎ জুলাইতেই বেতন কমিশনের সুপারিশ জমা পড়ে যাবে, এই আশ্বাসও উপ-সবিচই দেন বলে সংগঠনটির নেতারা জানিয়েছেন।
কর্মচারী পরিষদের নেতা দেবাশিস শীলের কথায়, ‘‘বেতন কমিশনের উপ-সচিব আমাদের বলেন যে— চেয়ারম্যান আজ নেই, কিন্তু চেয়ারম্যানই আমাকে বলে গিয়েছেন আপনাদের স্মারকলিপি নিতে।’’ শুধু স্মারকলিপি জমা নিয়েই দায়িত্ব সারেননি বেতন কমিশনের উপ-সচিব। চলতি মাসেই নতুন বেতন কাঠামোর সুপারিশ জমা দেওয়ার যে দাবি উঠেছে, তা-ও মেনে নেওয়া হচ্ছে বলে উপ-সচিবই জানিয়েছেন। দাবি দেবাশিস শীলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy