বরাহনগর থেকে আসা রোগীকে ফিরে যেতে হল সাগর দত্ত হাসপাতাল থেকে। —নিজস্ব চিত্র।
বাবা অসুস্থ। বুকে জল জমেছে। নপাড়ার হাসপাতাল থেকে রেফার করায় সেই অসুস্থ বাবাকে সাগর দত্তে নিয়ে গিয়েছিলেন ছেলে। কিন্তু অভিযোগ, সেখানে তাঁর বাবাকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। তাঁকে বলা হয়েছে, হাসপাতালে ডাক্তার নেই। এই পরিস্থিতিতে বাবাকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরোনোর সময় ক্ষোভ উগরে দিলেন বরাহনগরের বাসিন্দা সৌমিত্রকুমার সোম। শুধু সৌমিত্রই নন, আরও অনেকেই একই অভিযোগ তুলেছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির জেরে রোগীদের রিপোর্টও দেখা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। আন্দোলনকারীরা অবশ্য এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্য সরকারকেই দুষছেন। তাঁদের বক্তব্য, পরিষেবা দেওয়া চিকিৎসকদের নৈতিক কর্তব্য হলেও বেশি দায় রাজ্য সরকারের।
রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল সাগর দত্তে। অভিযোগ, রোগীর পরিবারের সদস্যেরা হাসপাতালের চারতলায় উঠে গিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের উপর হামলা চালিয়েছিলেন। ভাঙচুর করা হয়েছিল মহিলাদের ওয়ার্ডে। এমনকি, মহিলা চিকিৎসকদের ঘর থেকে টেনে বার করে মারধরও করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এর পরেই নিরাপত্তার অভাবের অভিযোগ তুলে কর্মবিরতি শুরু করেন হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা। মঙ্গলবার তা চার দিনে পা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রোগীর পরিবারদের অভিযোগ, ঠিক মতো পরিষেবা মিলছে না। জুনিয়র ডাক্তারেরা কর্মবিরতিতে থাকায় আউটডোরে পরিষেবা দিতে হচ্ছে সিনিয়র চিকিৎসকেরা। ফলে সমস্ত বিভাগেই রোগী পরিষেবা ব্যাহত।
এই পরিস্থিতির জেরে বিপাকে পড়েছেন সৌমিত্রের মতো অনেকে। সৌমিত্র বলেন, ‘‘নপাড়া থেকে রেফার করল। এখানে নিয়ে এলাম। কিন্তু ভর্তি করা গেল না। বলছে ডাক্তার নেই। খুবই সমস্যায় পড়েছি। এই হাসপাতাল থেকে সেই হাসপাতাল ঘুরতে হচ্ছে। এখন দেখি কোথায় যাই! ভাবছি মেডিক্যালে যাব।’’ এক মহিলাও জানান, তিনি তাঁর শিশুকে নিয়ে ১০ দিন ধরে ঘুরে যাচ্ছেন। কিন্তু চিকিৎসা পাচ্ছেন না।
এর প্রেক্ষিতে মনোজিৎ মুখোপাধ্যায় নামে এক জুনিয়র চিকিৎসক বলেন, ‘‘পরিস্থিতিটা বুঝতে পারছি। আমরা ডাক্তার। আমাদের নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। খুবই ঠিক কথা। কিন্তু এই দায়িত্বটা যতটা না আমাদের, তার চেয়ে অনেক বেশি সরকারের। এ দিকে সরকার নিজের দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতির জন্য আমরা দুঃখিত। কিন্তু সরকারকেই এর দায়িত্ব নিতে হবে। পরিকাঠামোগত দুর্বলতা সর্বত্র। তা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। দীর্ঘ দিন নিয়োগ হয়নি। এর জন্য ডাক্তারকে দায়ী করলে হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy