Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

অমিল চোখের ইঞ্জেকশন, দুর্ভোগে রোগীরা

উত্তর ২৪ পরগনার বেড়াচাঁপার বাসিন্দা ৬৬ বছরের আয়ুব মণ্ডল এবং বাঁশদ্রোণীর ৮২ বছরের পরিতোষ কর্মকার অধিকর্তাকে জানান, ওই ইঞ্জেকশন এ বারেও পাননি তাঁরা। আরও দেরি হলে পুরো দৃষ্টিই চলে যাবে।

স্বাস্থ্য ভবনকে লেখা সেই চিঠি।

স্বাস্থ্য ভবনকে লেখা সেই চিঠি।

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৯ ০৩:০৭
Share: Save:

দৃষ্টি বাঁচাতে পাঁচ বার ঘুরে গিয়েছেন হাসপাতালের বহির্বিভাগে, তবু মেলেনি জরুরি ইঞ্জেকশন। ফলে আরও অনেক রোগীর মতো দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি হারানোর আশঙ্কা করছেন ওঁরাও। রাজ্যে চোখের চিকিৎসার একমাত্র রেফারাল হাসপাতাল রিজিয়োন্যাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজিতে (আরআইও) চিকিৎসা করাতে আসা দুই বৃদ্ধ শেষ ভরসা হিসেবে ছুটে গিয়েছিলেন অধিকর্তার কাছে। কিন্তু, নিরাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে তাঁদের।

উত্তর ২৪ পরগনার বেড়াচাঁপার বাসিন্দা ৬৬ বছরের আয়ুব মণ্ডল এবং বাঁশদ্রোণীর ৮২ বছরের পরিতোষ কর্মকার অধিকর্তাকে জানান, ওই ইঞ্জেকশন এ বারেও পাননি তাঁরা। আরও দেরি হলে পুরো দৃষ্টিই চলে যাবে। পরিতোষবাবুর আক্ষেপ, ‘‘এই বয়সে টিভি দেখতাম আর পত্রিকা পড়তাম। মনে হচ্ছে সেটুকুও যাবে।’’ দুই বৃদ্ধকে আরআইও-র অধিকর্তা অসীমকুমার ঘোষের আশ্বাস, ‘‘স্বাস্থ্য ভবনে চিঠি লিখে টাকা চেয়েছি। রোগীদের নাম-ঠিকানা লিখে রাখা হচ্ছে। ইঞ্জেকশনের জোগান এলেই ডেকে পাঠানো হবে।’’

কী এই ইঞ্জেকশন? কেনই বা এর অভাবে সরকারি হাসপাতালে সঙ্কট তৈরি হয়েছে?

দৃষ্টিশক্তি বাঁচানোর গুরুত্বপূর্ণ এই ইঞ্জেকশনটি হল র‌্যানিবিজুম্যাব। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি, রেটিনার সমস্যা, চোখের স্ট্রোক, সময়ের আগে জন্মানো

শিশুর দৃষ্টিশক্তির সমস্যায় এই ইঞ্জেকশনই ভরসা। প্রতিটির দাম ১৮ হাজার টাকা। অভিযোগ, রাজ্য সরকারকে এই ইঞ্জেকশন সরবরাহ করে যে সংস্থা, সরকারের থেকে তাদের বহু টাকা বকেয়া রয়েছে। শুধু আরআইও থেকেই এক কোটি টাকারও বেশি পাবে ওই সংস্থা। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজেও টাকা বাকি বলে তারা সেখানে সরবরাহ বন্ধ করেছে। এ দিকে, ওই ইঞ্জেকশন বাইরে থেকে কেনার মতো আর্থিক ক্ষমতা বেশির ভাগ রোগীরই নেই।

স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, শুধু আরআইও-তে‌ প্রতি মাসে এই ইঞ্জেকশন লাগে ৩০০-৩৫০টি। সেখানে চলতি বছরের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত ৬০০টি ইঞ্জেকশন এসেছে। জুনে শেষ বার এসেছে ১৫০ ভায়াল। অসীমবাবু স্বীকার করেছেন, সময়ের মধ্যে এই ইঞ্জেকশন না পেলে‌ দৃষ্টিশক্তি হারাবেন অসংখ্য রোগী।

আরআইও সূত্রের খবর, তাদের বহির্বিভাগে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির রোগী আসেন সব থেকে বেশি। গত ৩০ জুলাই আরআইও কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য ভবনকে চিঠি দিয়ে র‌্যানিবিজুম্যাব ও আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ওষুধের জন্য দু’কোটি টাকা চেয়ে পাঠিয়েছেন।

কী ভাবছে সরকার? রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গোটা পরিস্থিতি গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy