বাস ধরার তাড়া যাত্রীদের। ফাইল চিত্র।
লকডাউন ক্রমশ শিথিল হলেও গণপরিবহণ কবে স্বাভাবিক হবে? সদুত্তর মেলেনি কারও কাছেই। তাই আগামিকাল, সোমবার পথে বেরিয়ে জনতার হয়রানির আশঙ্কা ষোলো আনা। অথচ কাল, সরকারি অফিসে কর্মী-সংখ্যা বাড়বে, খুলবে শপিং মল, রেস্তরাঁ, হোটেল এবং অনেক ধর্মস্থান। পথে নামবেন অনেক বেশি নাগরিক।
পরিবহণ দফতরের বক্তব্য, তারা এক হাজারেরও বেশি বাস নামাতে চায়। কিন্তু তা দিয়ে কলকাতায় স্বাভাবিক পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। বাস ও মিনিবাস যে সংখ্যায় নামতে পারে, তা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম। কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে ২৪ হাজার বেসরকারি বাস চলে, সরকারি বাস চলে ২৫০০টি। কিন্তু বেসরকারি বাস মালিকদের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, সোমবার এর ৩০ শতাংশ বাসও নামবে কি না সন্দেহ। কলকাতায় সরকারি বাস প্রায় পূর্ণ সংখ্যায় নামানো হলেও সোমবার জেলায় ৬০ শতাংশ বাস নামানো যাবে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর। ফলে স্বাভাবিক পরিষেবা দেওয়া কার্যত অসম্ভব। তবে পরিবহণ দফতরের একটি সূত্রের আশ্বাস, আগামিকাল, সোমবার সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ১০টা, এই অফিসের সময়ে তুলনায় বেশি বাস চালানো হবে।
বেসরকারি বাস-মিনিবাস মালিক সংগঠন সূত্রে বলা হচ্ছে, বাস চালিয়ে পর্যাপ্ত যাত্রী হচ্ছে না। তাই অতিরিক্ত বাস চালিয়ে লোকসানের বোঝা বাড়াতে নারাজ মালিকেরা। এক বাস মালিকের কথায়, ‘‘সরকার বলেছে, তাই রুট রাখতে বাস চালাচ্ছি। কিন্তু খালি বাস নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারব না।’’ মিনিবাস মালিকদের সংগঠনেরও বক্তব্য, মিনিবাসে আসন কম। ফলে কম যাত্রী নিয়ে তাদেরই বা লাভ কী? অনেকেই বলছেন, সঙ্কটের সময়েও এই লাভের অঙ্ক নিয়ে কড়া অবস্থান এবং ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে সরকার ও বাস মালিকদের দড়ি টানাটানিতে হাঁসফাঁস করছে সেই জনতাই। এ বিষয়ে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে ফোন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
আরও পড়ুন: বাস ভাড়া নিয়ে জট কাটাতে আজ বৈঠকে কমিটি
গত ক’দিনের মতো এ দিনও শহরের রাস্তায় দুর্ভোগের ছবি ধরা পড়েছে। সপ্তাহান্তে শুক্রবারের থেকেও বাস কম রাস্তায় ছিল। কিন্তু বহু বেসরকারি অফিস, দোকান-বাজার খুলে যাওয়ায় লোকজনকে বেরোতেই হয়েছে। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ এয়ারপোর্ট এক নম্বর গেটে
বিবাদী বাগগামী বেসরকারি বাস আসতেই পড়িমরি করে লোকজন ছুটলেন। দূরত্ববিধি তখন শিকেয় উঠেছে। অরূপ চট্টোপাধ্যায় নামে এক যাত্রী জানান, তিনি একটি শপিং মলে চাকরি করেন। আগামিকাল, সোমবার শপিং মল খোলার কথা। তাই ট্রায়াল রান চলছে। তিনি বলেন, ‘‘শনিবার বলে ভেবেছিলাম, ফাঁকায় ফাঁকায় যাব। কিন্তু এত ভিড় হবে ভাবতে পারিনি। করোনা পরিস্থিতিতে ভিড় বাসে অফিস যেতেও ভয় লাগে।’’
এ দিন সরকারি বাসের মধ্যে বহু এসি বাস চালানো হয়েছে। কিন্তু তাতে তেমন ভিড় ছিল না। উল্টোডাঙা মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা মিলন বসু নামে এক অফিসযাত্রী বলেন, ‘‘এসি বাসে ভাড়া বেশি। সবার তো সেই সামর্থ্য নেই। বেশি টাকা দিতে পারলে তো শেয়ার ট্যাক্সিতেই যেতে পারতাম। অফিসের সময়ে নন-এসি বাস দিলেই উপকার হয়।’’ বাস কম থাকার সুযোগ নিয়ে ইচ্ছে মতো ভাড়া চাইতে দেখা গিয়েছে ট্যাক্সিচালকদের একাংশকে।
বিকেলে অফিসফেরত যাত্রীদের হয়রানির ছবিও সকালের থেকে আলাদা নয়। হাজরা মোড়, রবীন্দ্রসদন, ধর্মতলা মোড়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকেছেন লোকজন। বাসে গাদাগাদি করে ওঠার চেষ্টাও করেছেন অনেকে। ধর্মতলায় দাঁড়ানো এক অফিসযাত্রী বলেন, ‘‘সোমবার থেকে সব অফিস খুলে যাবে। সে দিনও বাস কম থাকলে অফিস পৌঁছতেই পারব না! আর পৌঁছলেও ফিরতে প্রাণ বেরিয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy