কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক পরকলা প্রভাকরের। ডান পাশ ব্রাত্য বসু, বাঁ পাশে ওমপ্রকাশ মিশ্র। ছবিঃ দেশকল্যাণ চৌধুরি।
দেশের বর্তমান শাসক দল এবং নেতৃত্ব ক্ষমতায় ফিরলে ফের ভোট হওয়া নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। রাজনৈতিক অর্থনীতিবিদ পরকলা প্রভাকর (যিনি দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের স্বামী) বৃহস্পতিবার তাঁর নতুন বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে কলকাতায় এসে দেশের চলতি ভোট ব্যবস্থাই গোলমেলে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
শুধু তা-ই নয়, সরকার-বিরোধী কথা বলার জন্য তাঁর নিজের জীবনের আশঙ্কা আছে বলেও মনে করছেন প্রভাকর। তিনি বলেন, “এ দেশে দু’জন মুখ্যমন্ত্রী জেলে। অনেক সাধারণ লোকের ল্যাপটপে ভুয়ো তথ্য ঢুকিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। অনেক নিরপরাধ জামিন পাচ্ছেন না। আমার সঙ্গেও যে কোনও সময় যা কিছু ঘটতে পারে।’’
সদ্য প্রকাশিত প্রবন্ধ সংকলন ‘দ্য ক্রুকেড টিম্বার অব নিউ ইন্ডিয়া’য় নব্য ভারত বলতে কী বুঝিয়েছেন, এ দিন তারই ব্যাখ্যা করেছেন প্রভাকর। রাজ্যের প্রাক্তন উপাচার্যদের একটি সংগঠন ‘দ্য এডুকেশনিস্টস ফোরাম’-এর ডাকে বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রবীণ অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্রকে প্রভাকর প্রথমেই বলেন, তিনি ‘প্রধানমন্ত্রীর মন কি বাত’-এর মতো একতরফা বক্তৃতা দিতে চান না। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় আগ্রহী। প্রভাকর বলেন, “এই ভারতে স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, এমন ব্যক্তি বা মঞ্চই সব থেকে বড় দেশভক্ত। ছোট ছোট গোষ্ঠী গণহত্যার ডাক দিচ্ছে। এই নেতৃত্ব ফিরলে লালকেল্লা থেকেও এমন হিংসার আহ্বান আসতে পারে। মণিপুরের মতো পরিস্থিতি সব রাজ্যে হতে পারে। ভোট তাই খুব সাবধানে দেওয়া উচিত।’’
পরকলা এ-ও বলেন, “অনেক ক্ষেত্রেই নির্বাচন কমিশন মোট ভোটের হিসেব না-দিয়ে শতকরা হার বলছে। এই হার কিছু ক্ষেত্রে পাল্টেও যাচ্ছে। ভোটে কারচুপির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’’ রাজ্যে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর অবশ্য দাবি করছে, অন্য রাজ্যের কথা বলা না-গেলেও এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের ভোটে এই সমস্যা হয়নি। দফায় দফায় ঘোষণা করা ভোটের শতকরা হার পাল্টায়নি। ভোটার সংখ্যাও মিলেছে।
অনুষ্ঠানে সাংসদ তথা প্রাক্তন আমলা জহর সরকার, মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়রাও দেশে নির্বাচনী বন্ড কেলেঙ্কারি, অর্থনৈতিক অসাম্য, ভক্ত মিডিয়া ইত্যাদি নিয়ে কথা বলেন। রাজ্যে দুর্নীতির প্রসঙ্গও ওঠে। প্রভাকর বলেন, “দেখা যাচ্ছে শাসক দলে ঢুকলে দুর্নীতির সাত খুন মাফ। আর নির্বাচনী বন্ড কেলেঙ্কারি তো বিশ্বের সব থেকে বড় কেলেঙ্কারি। আনকোরা বা ভুঁইফোঁড় সংস্থার মাধ্যমে নানা সুবিধার বিনিময়ে প্রভাবশালী দলকে টাকা দেওয়ার রাস্তা খোলা হয়েছে।’’
জহর সরকার এ দিন বলেন, “দেশের জিডিপি-র বৃদ্ধির হারও (৭ শতাংশ) সন্দেহজনক। অনেকে মনে করেন ঠিক ভাবে জিডিপি মাপলে তা চার শতাংশের কম হত।’’ দেশের বেকারত্ব এবং খাদ্য সঙ্কট নিয়ে আক্ষেপ করেও প্রভাকর বলেন, “এক সঙ্গে পাঁচ বছরে ৮১ কোটি লোককে নিখরচার রেশনের কথা বলা হয়েছে। অন্য সরকার বড় জোর এক বছরের জন্য ঘোষণা করে। এতেই পরিষ্কার, দেশে আয়, চাকরি, কৃষি বা গ্রামীণ অর্থনীতির কাহিল দশা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy