পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে।—ছবি সংগৃহীত।
রাতের অন্ধকারে ছাত্র ভর্তির ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ায় শোরগোল পড়েছে পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে। উঠেছে টাকা লেনদেনের অভিযোগও। অভিযোগকারী আবার তৃণমূলেরই নেতা। আর কাঠগড়ায় শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের আর এক নেতা ও তৃণমূল উপ-পুরপ্রধান ।
কলেজে ছাত্র ভর্তিতে আর্থিক লেনদেন, দুর্নীতি ঠেকাতেই চালু হয়েছে অনলাইন প্রক্রিয়া। এ বছর শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, অনলাইন ভর্তি প্রক্রিয়া এমন ভাবেই এগোবে যে ক্লাস শুরুর দিনে প্রথম কলেজে পা রাখবেন প্রথম বর্ষের পড়ুয়ারা।
কিন্তু বৃহস্পতিবার পাঁশকুড়া বনমালী কলেজে ভর্তির শেষ দিনে টিএমসিপি নেতাদের উপস্থিতিতেই ছাত্র ভর্তি প্রক্রিয়া এগোচ্ছে বলে ওই ভিডিয়োয় (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) দেখা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, অন্ধকার ক্যাম্পাসে আলো জ্বেলে ফর্মপূরণ চলছে। এক ছাত্রীর অভিভাবক বলছেন, ‘‘এখনও টাকা লাগেনি। কাজ হয়ে গেলে কলেজের অনুষ্ঠানের জন্য টাকা দিতে হবে।’’
ওই ভিডিয়ো বৃহস্পতিবার রাতের বলে দাবি টিএমসিপির প্রাক্তন সহকারী সম্পাদক তথা পাঁশকুড়া পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা হিরা খানের। এই ভিডিয়ো হাতিয়ার করেই তাঁর অভিযোগ, উপ-পুরপ্রধান সইদুল ইসলাম খান টাকার বিনিময়ে রাতের অন্ধকারে টিএমসিপি নেতাদের মাধ্যমে নিয়ম ভেঙে ছাত্র ভর্তি করাচ্ছিলেন। ছাত্র পিছু ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার লেনদেন হচ্ছে বলে হিরার দাবি। এ ক্ষেত্রে অধ্যক্ষের মদত রয়েছে বলেও তাঁর অভিযোগ। হিরার কথায়, ‘‘কলেজে অনেক আসন ফাঁকা থাকলেও অধ্যক্ষ তা চেপে রেখে পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সইদুল ইসলাম খানের কথায় টাকার বিনিময়ে ছাত্র ভর্তি করছিলেন। ওই কাজে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছাত্র নেতা অরূপ জানা।’’ এ নিয়ে অরূপের সঙ্গে হিরার ধস্তাধস্তির ছবিও ভিডিয়ো-বন্দি হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে সেই গোলমালের খবর পেয়ে কলেজে পুলিশও এসেছিল বলে খবর।
কলেজের প্রাক্তন ছাত্র টিএমসিপি নেতা অরূপের দাবি, ‘‘আমি বনমালী কলেজের সংগঠন দেখি। ওই দিন বোনকে ভর্তি করতে কলেজে এসেছিলাম। তখন হিরা হঠাৎ আমার উপর চড়াও হয়ে মারধর করে। বলে আমি নাকি টাকা নিয়েছি।’’ হিরা এখন বিজেপি করেন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিথ্যা অভিযোগ করছেন বলেও দাবি অরূপের। যদিও হিরার দাবি, তিনি তৃণমূলেরই স্থানীয় নেতা। স্থানীয় বিজেপি নেতা সিন্টু সেনাপতিও বলেন, ‘‘হিরা খান নামে পাঁশকুড়ায় বিজেপির কোনও নেতা নেই।’’
কিন্তু অনলাইনেই যদি যাবতীয় ভর্তি প্রক্রিয়া হয়, তা হলে রাতের অন্ধকারে ফর্ম পূরণ হচ্ছিল কেন?
অধ্যক্ষ নন্দন ভট্টাচার্যের মোবাইল দিনভর বন্ধ ছিল। আর অরূপের ব্যাখ্যা, ‘‘ফর্মের ভেরিফিকেশনে সময় লাগায় রাত হয়ে গিয়েছিল।’’
গোটা ঘটনায় দলের যোগ মানতে চাননি তৃণমূল উপ-পুরপ্রধান সইদুল ইসলাম খান। তিনি দুষছেন হিরাকেই। তাঁর দাবি, ‘‘হিরা অসামাজিক কার্যকলাপে যুক্ত। ব্রাউন সুগারের নেশা করে। টাকার দরকার হলেই এই ভাবে ঝামেলা করে ও।’’ ছাত্র ভর্তির জন্য দল বা ছাত্র সংগঠনের তরফে কোনও সুপারিশ করা হয়নি বলেও তাঁর দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy