Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Panchayat Election 2023

এক দিনেই ভোট, কেন্দ্রীয় কমিশনের নজরদারিও নয়, বুধবার হাই কোর্টের জোড়া রায় গেল রাজীবের পক্ষেই

রাজীব সিংহের কমিশন প্রথম থেকেই এক দফায় ভোটের পক্ষেই সওয়াল করে এসেছে। বুধবার তাতেই সিলমোহর দিল হাই কোর্ট। জানিয়ে দিল, পঞ্চায়েত ভোট এক দিনেই হবে।

An image of Rajiva Sinha with CF and High Court

—প্রতীকী চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২৩ ০১:০৮
Share: Save:

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ মতো ৮২২ কোম্পানি দিয়েই পঞ্চায়েত ভোট হবে রাজ্যে। উচ্চ আদালতের এই নির্দেশের পরেই একাধিক দফায় ভোটের সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে এসেছিল। কিন্তু তা নিয়ে জট রাজ্য নির্বাচন কমিশনের গলায় কাঁটার মতো বিঁধেছিল। কারণ, রাজীব সিংহের কমিশন প্রথম থেকেই এক দফায় ভোটের পক্ষেই সওয়াল করে এসেছে। বুধবার তাতেই সিলমোহর দিল হাই কোর্ট। জানিয়ে দিল, পঞ্চায়েত ভোট এক দিনেই হবে। শুধু তা-ই নয়, জাতীয় মানবাধিক কমিশনের পর্যবেক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাতেও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষেই রায় দিল উচ্চ আদালত।

কলকাতা হাই কোর্টে পঞ্চায়েত ভোটের দফা বৃদ্ধির আর্জি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক তথা আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। পরে একই আর্জি জানিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। নওশাদের যুক্তি ছিল, হয় পঞ্চায়েত ভোটে আদালতের নির্দেশ মতো পর্যাপ্ত বাহিনী আনা হোক অথবা পঞ্চায়েত ভোটের দফা বৃদ্ধি করা হোক। কিন্তু সোমবার সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। তখন থেকেই বিভিন্ন মহলে সংশয় তৈরি হয়, কেন্দ্রের কাছ থেকে ‘পর্যাপ্ত সংখ্যায়’ বাহিনী আসার আশ্বাস মেলার পর কি আর একাধিক দফায় হবে পঞ্চায়েত ভোট!

মঙ্গলবার তা নিয়ে কোনও শুনানি হয়নি। তবে বুধবার অধীরের মামলা খারিজ করে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ বলে দিল, শনিবার এক দফাতেই রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত ভোট হবে। ভোটের দফা বাড়ানোর প্রয়োজন নেই। আদালতের পর্যবেক্ষণ, সুশৃঙ্খল ভাবে ভোটের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। এই পরিস্থিতিতে ভোটের দফা বৃদ্ধির দরকার নেই।

দফা-জট খুললেও বুথ এবং ভোটকেন্দ্রে বাহিনী মোতায়েন সংক্রান্ত হিসাব নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে। কমিশন সূত্রে খবর, হাই কোর্টের নির্দেশে পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যে আসছে ৮২২ কোম্পানি (প্রায় ৮২ হাজার সদস্য) কেন্দ্রীয় বাহিনী। তাদের মধ্যে সরাসরি ভোটের কাজে ব্যবহার করা যাবে অন্তত ৬৫ হাজার কেন্দ্রীয় জওয়ান এবং অফিসারকে। মঙ্গলবার রাজ্য সরকারি কর্মীদের দায়ের করা মামলার শুনানিতে ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল বিল্বদল ভট্টাচার্য জানান, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৬৫ হাজার এবং রাজ্য পুলিশের ৭০ হাজার কর্মীকে সমান অনুপাতে ব্যবহার করলে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে। এর পর হাই কোর্ট বিএসএফের আইজি-কে নির্দেশ দেয়, রাজ্য জুড়ে সমান ভাবে বাহিনী মোতায়েন করার।

সাধারণত, কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের ক্ষেত্রে একটি দলে ন্যূনতম চার জন জওয়ান রাখার নিয়ম রয়েছে। ফলে ওই নিয়ম মেনে রাজ্যের ৪৪ হাজার ৩৮২টি ভোটকেন্দ্রের ৬৩ হাজার ২৮৩ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা যাবে না। এমনকি, প্রতি ভোটকেন্দ্রেও চার জন করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে অবশ্য কোর্টের নির্দেশ, সব ভোটকেন্দ্রে বাহিনী মোতায়েনের জন্য দরকারে সেই নিয়ম শিথিল করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ জারি করতে হবে। বাহিনীর সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা বিএসএফের আইজি সেই নির্দেশ জারি করবেন।

কিন্তু মোতায়েন পরিকল্পনা এখনও স্পষ্ট না হওয়ায় তা নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠি দিয়েছে কমিশন। সেই চিঠিতে বিষয়টি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন রাজীব।

পঞ্চায়েত ভোটের আবহে বুধবারও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। কংগ্রেস প্রার্থীর বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে চাপানউতর শুরু হয়েছে মুর্শিদাবাদে। নদিয়ার নাকাশিপাড়াতেও তৃণমূল প্রার্থী এবং তাঁর স্বামীর উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় বোমার আঘাতে মৃত কিশোরের বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।

পঞ্চায়েত ভোট এক দফাতেই

পঞ্চায়েত ভোটের দফা বৃদ্ধি করার আর্জি জানিয়ে সোমবার হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন বহরমপুরের সাংসদ তথা কংগ্রেস নেতা অধীর। হাই কোর্টে তাঁর আইনজীবী বেশ কয়েকটি কারণ তুলে ধরে জানিয়েছিলেন, কেন একাধিক দফায় ভোট করা জরুরি। অধীরের আগে একই দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। আইএসএফ নেতা নওশাদের যুক্তি ছিল, হয় পঞ্চায়েত ভোটে আদালতের নির্দেশ মতো পর্যাপ্ত বাহিনী আনা হোক অথবা পঞ্চায়েত ভোটের দফা বৃদ্ধি করা হোক। রাজ্যে গত দশ বছরে জেলার সংখ্যা, ভোটার এবং বুথের সংখ্যা বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে তিনি কয়েক দফায় ভোট করানোর কথা বলেছিলেন। অধীরের আইনজীবীর যুক্তিও ছিল কিছুটা একই রকম। অধীরের আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় হাই কোর্টে বলেছিলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রতি দিনই অশান্তির ঘটনা ঘটছে। গুলি চলছে। পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী নেই। ফলে তৃণমূল স্তরে বাহিনী পৌঁছতে পারছে না। তাই যদি এই বাহিনী দিয়েই ভোট করাতে হয়, তবে একাধিক দফাতে ভোটগ্রহণ হোক।’’

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে ‘না’

বাংলার পঞ্চায়েত ভোটে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পর্যবেক্ষক নিয়োগের প্রয়োজন নেই— জানিয়ে দিল হাই কোর্ট। ভোটে অশান্তির কথা জানিয়ে রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে নিজেদের পর্যবেক্ষক নিয়োগের কথা বলেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থাটি। কিন্তু রাজ্য নির্বাচন কমিশন তার বিরোধিতা করে। কলকাতা হাই কোর্টে নির্বাচন কমিশন বলে, ভোট সংক্রান্ত যে কোনও বিষয়ে নজরদারি এবং যে কোনও সমস্যা সমাধানের দায় নির্বাচন কমিশনের। তারাই এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশন তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করতে পারে না। মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত মামলাটির শুনানি ছিল কলকাতা হাই কোর্টে। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয় মামলাটির। কিন্তু মামলার রায়দান স্থগিত রেখেছিল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। বুধবার রায় ঘোষণা হল। কলকাতা হাই কোর্ট জানিয়ে দিল, পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রের মানবাধিকার কমিশনের পর্যবেক্ষক নিয়োগের কোনও প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ, এ ব্যাপারে পরোক্ষে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপরেই আস্থা রাখল হাই কোর্ট।

দেগঙ্গায় মৃত্যু নাবালকের

পঞ্চায়েত ভোটের দোরগোড়ায় উত্তপ্ত উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা এলাকা। মঙ্গলবার দেগঙ্গার একাধিক এলাকায় তৃণমূল এবং আইএসএফের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তাতে আহত হন প্রায় ১৫ জন। রাতেই বোমার আঘাতে এক তৃণমূল কর্মীর ছেলের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় সিপিএম এবং আইএসএফ-এর বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে রাজ্যের শাসক দল। স্থানীয় সূত্রে খবর, দেগঙ্গার শোয়াইসেতপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গাঙার্টি গ্রামে মিছিল করে যাচ্ছিলেন তৃণমূল সমর্থকেরা। অভিযোগ, সেই মিছিলকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হন ১৭ বছরের তরুণ ইমরান হোসেন। একাদশ শ্রেণির ওই পড়ুয়াকে রক্তাক্ত অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয় দেগঙ্গা ব্লকের বিশ্বনাথপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

পুত্রহারার বাবার সঙ্গে কথা রাজ্যপালের

উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় বোমার আঘাতে মৃত কিশোরের বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বললেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মৃত ইমরান হোসেনের বাবা ইন্দাদুল হোসেন জানান, তাঁর কাছে সুবিধা-অসুবিধার কথা জানতে চেয়েছেন রাজ্যপাল। পরে তিনি ঘটনাস্থলে আসতে পারেন বলেও জানিয়েছেন। রাজভবন সূত্রে খবর, কয়েক মিনিট ইন্দাদুলের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। মৃতের বাবার কাছে রাজ্যপাল জানতে চান, ঠিক কী ঘটেছে। পুলিশ প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করেছে কি না তা-ও জানতে চান তিনি। ইন্দাদুলের কথায়, ‘‘আমার ছেলের সম্পর্কে জানতে চাইলেন উনি (রাজ্যপাল)। ছেলে কী করত, কোন ক্লাসে পড়াশোনা করত, এ সব জানতে চান। কোনও অসুবিধা থাকলে তাঁকে জানতে বলেছেন। তিনি আরও বলেছেন, সেটা পরেও জানালেও হবে।’’

তৃণমূল-নির্দলে দলাদলি

পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আবারও উত্তপ্ত উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর। এ বার জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল গোষ্ঠীর সঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীর অনুগামীদের সংঘর্ষে জখম হলেন অন্তত ১২ জন। গুরুতর জখম হয়েছেন পাঁচ জন। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুরের রামগঞ্জ-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বসাকপাড়া এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার প্রচার শেষে স্থানীয় একটি দোকানে যান তৃণমূল প্রার্থী রাখি বসাক রায়ের স্বামী স্বপন বসাক। সেই সময় নির্দল সমর্থকেরা তাঁকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। তাঁকে ধারালো অস্ত্রের কোপ মারা হয় বলেও অভিযোগ। তার পরেই তৃণমূল এবং নির্দল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। একে অপরের দিকে ইটবৃষ্টি শুরু করেন তাঁরা। গুলি চালানো এবং বোমাবাজিও হয় বলে দাবি করেছেন স্থানীয়েরা।

রানিনগরে অশান্তি চলছেই

পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশ ইস্তক বার বার রাজনৈতিক সংঘর্ষ দেখা গিয়েছে রানিনগরে। তৃণমূল এবং কংগ্রেস— দু’পক্ষ একে অন্যের বিরুদ্ধে হামলা, সন্ত্রাসের অভিযোগ করছে। বোমাবাজি, গুলি চালানোর মতো ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার রাতে আবার অশান্তির খবর প্রকাশ্যে এসেছে। দলীয় প্রার্থীর হয়ে প্রচার সেরে বাড়ি ফেরার সময় তাঁর উপর হামলার অভিযোগ করলেন এক তৃণমূল কর্মী। অভিযোগের আঙুল কংগ্রেসের দিকে। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের রানিনগর থানার আমিরাবাদ এলাকায়। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তৃণমূল কর্মীকে উদ্ধার করে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় এলাকায় পুলিশি টহলদারি শুরু হয়েছে।

কুলতলিতে জখম তৃণমূল নেতা

রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তেজনা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কুলতলি ব্লকে। কুলতলির গোপালগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪৩ নম্বর বুথের তৃণমূল সভাপতি সনাতন নাইয়ার অভিযোগ, কৈখালি থেকে ভোটপ্রচার করে বাড়ি ফেরার সময় বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা তাঁদের উপর হামলা চালান। তাতে তিনি এবং তাঁর সহকর্মী রাজারাম নস্কর গুরুতর আহত হয়েছেন। গুরুতর জখম অবস্থায় সনাতন এবং রাজারামকে উদ্ধার করে জয়নগর কুলতলি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন তাঁরা। অন্য দিকে, হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, তাদের কর্মীদের উপরেও হামলা হয়েছে।

পোলেরহাট ও বাসন্তীতে অশান্তি

পোলেরহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় জমি জীবিকা বাস্তুতন্ত্র ও পরিবেশ রক্ষা কমিটির প্রার্থী নুরজাহান বিবির বাড়িতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ভাঙড়-২ ব্লকের রঘুনাথপুর গ্রামের ১৯৭ নম্বর বুথের আইএসএফ প্রার্থী ভারতী মণ্ডলের বাড়িতে ঢুকে শাসকদল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে কাশীপুর থানার পুলিশ পৌঁছয়। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা বলেন, ‘‘পোলেরহাট-২ এলাকায় জমি কমিটি তৃণমূলের পতাকা ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছে। বাড়িতে হামলা করছে। হুমকি দিচ্ছে।’’ অশান্তির ঘটনা ঘটেছে বাসন্তীতেও।

কংগ্রেস প্রার্থীর বাড়িতে বিস্ফোরণ

মুর্শিদাবাদের শক্তিপুরে কংগ্রেস প্রার্থীর বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটল। স্থানীয় সূত্রে খবর, সেখানে দু’জন জখম হয়েছেন। তাঁদের প্রথমে শক্তিপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের স্থানান্তরিত করা হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। মঙ্গলবার রাতে শক্তিপুর থানার কোরাল পুকুর এলাকায় কংগ্রেস প্রার্থী হায়দার মল্লিকের বাড়ি থেকে বিস্ফোরণের জোরালো শব্দ শোনা যায়। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। স্থানীয়েরা ছুটে এসে দেখেন, বিস্ফোরণে দু’জন জখম হয়েছেন। এলাকাবাসীর দাবি, সেই সময় ঘটনাস্থল থেকে দু’জন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু পড়শিরা তাঁদের আটকে রেখে পরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। হায়দার ১৬৩ নম্বর বুথের কংগ্রেস প্রার্থী। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁর বাড়ির দোতলার একটি ঘর সিল করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, সেখানেই নাকি বোমা বাঁধা হচ্ছিল। বেলডাঙা-২ পশ্চিম ব্লকের তৃণমূল সভাপতি ইন্দ্রনীল প্রামাণিক বলেন, ‘‘ভোটের সন্ত্রাস চালাতে কংগ্রেস প্রার্থী এবং তাঁর ছেলের কথায় বোমা বাঁধতে এসেছিল দুষ্কৃতীরা।’’ এই অভিযোগ হায়দার অস্বীকার করেছেন। বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘বোমা বাঁধতে গিয়ে ঘটেছে না কি বোমা মারা হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখুক পুলিশ।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE