—প্রতীকী চিত্র।
‘নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা’ বোধহয় একেই বলে! রাজ্য পুলিশের প্রতীক আঁকা লোহার গার্ডরেল দিয়ে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে চার দিক থেকে ঘিরে রাখা হয়েছে ভোটকেন্দ্র। বহিরাগতদের দল ভোটার দেখলেই রে রে করে তেড়ে যাচ্ছিল তাঁদের আটকাতে। শহর নিউ টাউনের রাস্তায় বসে দিনভর শাসকদল তৃণমূলের হয়ে এ ভাবেই ভোটারদের তাড়াল বহিরাগতেরা। তাদের ঠেকাতে পুলিশ বা নির্বাচন কমিশন, কারও দেখাই মেলেনি বলে অভিযোগ। ক্ষুব্ধ ভোটারদের প্রশ্ন, বহিরাগত দুষ্কৃতীরা পুলিশের গার্ডরেল হাতে পায় কী করে?
নিউ টাউন এ বার আটটি আসন ও ১২টি বুথে বিভক্ত হয়ে জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া (২) পঞ্চায়েতের অধীনে এসেছে। এ দিন সকাল থেকে সেন্ট্রাল মলের পিছনে বিএ ব্লকে এ পি জে আব্দুল কালাম কলেজে ভোট দিতে যান নাগরিকেরা। কিন্তু কাউকে ভোটকেন্দ্রের কাছে ঘেঁষতেই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। জয়পুরিয়া কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ, ৭৫ বছরের জয়ন্ত আচার্যের অভিজ্ঞতা, ‘‘১৯৭৭ সালে পরীক্ষায় গার্ড দেওয়ার সময়ে টুকতে না দেওয়ায় শাসানি শুনেছিলাম। সেই স্মৃতি টাটকা হয়ে উঠল। হুমকি ও শাসানি শুনে ফিরে এলাম। বলা হল, আমার ভোট পড়ে গিয়েছে।’’
নিউ টাউনে পঞ্চায়েতের আটটি আসনের মধ্যে সাতটিতে বাইরের বাসিন্দাদের প্রার্থী করেছে তৃণমূল। বরং সিপিএম ও বিজেপি নিউ টাউন থেকেই প্রার্থী বাছাইয়ে গুরুত্ব দিয়েছিল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহিরাগতদের দাপাদাপিতে নিউ টাউন উপদ্রুত অঞ্চলের মতো হয়ে ওঠে। বিধাননগর পুর এলাকার যুব নেতা পার্থ সরকার, বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবরাজ চক্রবর্তীকে দেখা যায় গার্ডরেলের বাইরে লোকজন নিয়ে ঘুরে বেড়াতে। সংবাদমাধ্যমকে দেখলেই রুমাল বা ওড়নায় মুখ ঢাকছিল বহিরাগতেরা। ভোট দিতে চেয়ে জোরাজুরি করায় কয়েক জন ভোটদাতা মারধর খান বলেও অভিযোগ। হাত ভাঙে এক বৃদ্ধের।
জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া পঞ্চায়েতের ২৪ নম্বর আসনের সিপিএম প্রার্থী তথা বিএ ব্লকের বাসিন্দা সৈয়দ আসিফ হোসেনের অভিযোগ, ‘‘বাড়ির বাইরে বেরোতেই আমাকে ঘিরে ধরা হয়। হুমকি দিয়ে দিনভর ঘরে আটকে রাখা হয়। একই ঘটনা ঘটেছে আমাদের সব প্রার্থীর সঙ্গে।’’ নিউ টাউনের বাসিন্দা তথা বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য অনুপম ঘোষের অভিযোগ, ‘‘একটি আধুনিক শহরে এই অরাজকতা ভাবা যায় না! আমাদের প্রার্থীরা তৃণমূলের হার্মাদদের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেননি। লজ্জাজনক ভূমিকা পুলিশের।’’ নিউ টাউনের একমাত্র তৃণমূল প্রার্থী অনুপম মাইতির যদিও দাবি, ‘‘শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে।’’
নিউ টাউনকে পঞ্চায়েতে অন্তর্ভুক্ত করার বিরোধিতায় ‘নিউ টাউন ফোরাম অ্যান্ড নিউজ়’ নামে একটি সংগঠন ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে পোস্টার-হোর্ডিং দিয়েছিল। এ দিন সে সব দেখিয়ে ভোটারদের বহিরাগতেরা ফিরিয়ে দেয়।তার পরেই ওই সংগঠনকে দায়ী করেছে বাসিন্দাদের অন্য সংগঠন ‘নিউ টাউন সিটিজ়েন্স ওয়েলফেয়ার ফ্রেটারনিটি’। সংগঠনের সম্পাদক সমীর গুপ্তের অভিযোগ, ‘‘ভোট বয়কটের ডাকের আড়ালে লুকনো কর্মসূচি আজ সামনে এল।’’ যদিও ফোরামের সম্পাদক সমরেশ দাসের দাবি, ‘‘আমরা পঞ্চায়েত শাসনের বিরোধিতা করেছি। কিন্তু ইচ্ছুক ভোটারদের ভোটদানে বাধা দেওয়ার পক্ষে নই। এটা অপপ্রচার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy