—ফাইল চিত্র।
ভিন্ রাজ্য থেকে শ্রমিকদের নিয়ে ট্রেন আসতে থাকায় যে ভাবে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে রেল ‘করোনা বাহক’ হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন শঙ্কিত মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যে জনজীবন স্বাভাবিক করতে লকডাউনের মধ্যে বেশ কিছু ক্ষেত্রে আরও ছাড় দেওয়ার ঘোষণাও তিনি করেছেন। পরিস্থিতির নিরিখে সরাসরি লকডাউন আরও কিছু দিন বাড়িয়ে দেওয়ার দাবি করছে বিজেপি। জনজীবন স্বাভাবিক করার প্রয়োজনীয়তা অস্বীকার না করলেও সংক্রমণ মোকাবিলার কী ধরনের পরিকল্পনার ভিত্তিতে রাজ্য সরকার এমন ঘোষণা করছে, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা চাইছে অন্য দুই বিরোধী সিপিএম ও কংগ্রেস।
শাসক তৃণমূলের তরফে অবশ্য পাল্টা বলা হচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেই জানতে চাওয়া উচিত, কেন পরিকল্পনা ছাড়া লকডাউন করা হয়েছে? তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, রাজ্যগুলিকে প্রস্তুত হতে সময় না দিয়েই পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে যেমন তেমন করে ট্রেন পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের মতে, সব খুলে দিয়ে লকডাউন মানতে বলার মূল দায় কেন্দ্রেরই।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ শুক্রবার বলেছেন, ‘‘প্রয়োজনে ১৫ দিন আরও লকডাউন বাড়াতে হবে। এখন বড় ধাক্কা এসেছে। সেই ধাক্কা সামলাতে গেলে লকডাউন বাড়াতে হবে।’’ ভিন্ রাজ্য থেকে শ্রমিকদের ফেরানোর নামে ট্রেনগুলিকে ‘করোনা এক্সপ্রেস’ করে তোলা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন এ দিন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার প্রেক্ষিতে দিলীপবাবুর বক্তব্য, ‘‘রাজ্যের মানুষ তো ঘরে ফিরতে চাইবেই। গত ৮ মে মহারাষ্ট্রকে চিঠি লিখেছিলেন যে, এই রাজ্যের শ্রমিকদের ফেরানো হোক। কিন্তু যেই ফেরানো হচ্ছে, এখন আপনারা আটকাচ্ছেন! সরকারি কোয়রান্টিন সেন্টারে কোনও রকম সুবিধা নেই। জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ হচ্ছে।’’
সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিভিন্ন বাম দলেরও বক্তব্য, পরিযায়ী শ্রমিকদের এক দিন না এক দিন ফিরতেই হত। সংক্রমণের সমস্যা মোকাবিলার জন্য যথাযথ কোয়রান্টিন সেন্টার করার দায়িত্ব ছিল রাজ্যেরই। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থবাবু পাল্টা বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেই জানতে চাওয়া উচিত, কেন পরিকল্পনা ছাড়া লকডাউন করা হল? কেন রাজ্যগুলিকে প্রস্তুত হতে সময় না দিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে এই রকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? যে ভাবে ট্রেনে তাঁদের পাঠানো হচ্ছে, তা অমানবিক এবং বিপজ্জনক!’’
প্রথমে বলা হয়েছিল, নির্দিষ্টসংখ্যক যাত্রী নিয়ে বাস চলবে। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেছেন, সব আসনে যাত্রী নিয়ে বাস চলতে পারবে তবে কেউ দাঁড়িয়ে যেতে পারবেন না। পরের সপ্তাহ থেকে ১০০% কর্মী নিয়েই সরকারি ও বেসরকারি অফিস খোলা যাবে। এমন ঘোষণার প্রেক্ষিতে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘সব বন্ধ করে রেখে দেওয়া যাবে না। খুলতে তো অবশ্যই হবে কিন্তু স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও দরকার। সরকারি, বেসরকারি অফিস পুরো খুললে কাজে যোগ দিতে ইচ্ছুক সব মানুষ বেরোলে বাস বা অটোয় বিধি মানা যাবে? সাধারণ মানুষকে পরীক্ষার গিনিপিগ করা হবে কেন?’’ একই সুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রের বক্তব্য, ‘‘লকডাউন সারা জীবনের মতো থাকতে পারে না। করোনা ও অর্থনীতির বিপর্যয় রোখার কাজ একসঙ্গেই করতে হবে, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে। সব কিছু খুলে গেলে সংক্রমণের যে আশঙ্কা তৈরি হবে, তা মোকাবিলার ক্ষমতা স্বাস্থ্য দফতরের আছে তো?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy