দলের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে গোলাম রব্বানি। —নিজস্ব চিত্র।
একদা রায়গঞ্জের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সির অনুগামী বলেই পরিচিতি ছিল তাঁর। ২০১১ সালে প্রথমবার কংগ্রেসের বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পরে দীপাদেবীর পরামর্শ ও নির্দেশ মেনেই তিনি দলীয় কাজকর্ম করতেন। আবার, রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি নিয়ে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দীপাদেবীর বিরোধ নতুন কিছু নয়। তৃণমূলের অন্দরের খবর, রাজ্যে পালাবদলের কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত গোয়ালপোখরের বিধায়ক গোলামবাবুকে দলে টানার চেষ্টা শুরু করেন মমতা। কেননা, গোয়ালপোখরে বরাবরই দীপাদেবীর আলাদা প্রভাব রয়েছে। ২০০৬ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত দীপাদেবী গোয়ালপোখরের বিধায়ক ছিলেন। তাই মমতার ধারণা ছিল, গোলামবাবুকে দলে টেনে ভাল পদ বা মন্ত্রীত্ব দেওয়া হলে গোয়ালপোখরে তৃণমূলের সংগঠন শক্তিশালী হবে। তৃণমূল নেত্রীর সেই চেষ্টা অবশ্য ব্যর্থ হয়নি। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতার অনুরোধে ২০১৪ সালের ২১ জুলাই গোলামবাবু কলকাতায় গিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার দুই বছরের মাথায় এ বারে দলনেত্রী তাঁকে মন্ত্রী করায় কিন্তু হতবাক গোয়ালপোখরের বিপ্রীত এলাকার বাসিন্দা তথা ইসলামপুর হাইস্কুলের শিক্ষক গোলামবাবু। দলনেত্রীর ওই সিদ্ধান্তে আবার হতাশ হয়ে পড়েছেন উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা ইটাহারের বিধায়ক অমল আচার্যের অনুগামীরা। দলের জেলা নেতাদের অনেকেরই ধারণা ছিল, জোটের প্রবল হাওয়ার মধ্যেও অমলবাবু এ বছর যে ভাবে জেলায় দলের চারটি আসন ধরে রেখেছেন, তাতে অমলবাবুকে দিদি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর পদে বসাবেন।
এই বিষয়ে অমলবাবুর বক্তব্য, ‘‘দল সবই জানে। আমার কিছু বলার নেই। দলনেত্রীর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। আমরা সকলে গোলামবাবুর পাশে রয়েছি।’’
গোলামবাবু বলেন, ‘‘দিদি আমাকে মন্ত্রী করবেন, তা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি। অমলবাবুর নেতৃত্বে ও দিদির সহযোগিতায় পিছিয়ে পড়া গোয়ালপোখর সহ গোটা জেলায় উন্নয়নের কাজ করাই এখন আমার প্রধান লক্ষ্য।’’ এদিকে গোলামবাবু মন্ত্রী হওয়ায় খুশি কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিতবাবুকে বার বার ফোন করা হলেও তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ ও জেলা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান অপূর্ব পাল বলেছেন, ‘‘পিছিয়ে পড়া গোয়ালপোখরের বিধায়ক গোলামবাবু মন্ত্রী হওয়ায় আমরা খুশি। আশা করব, তিনি গোয়ালপোখর সহ গোটা জেলার সার্বিক উন্নয়নের কাজ করবেন।’’
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে গোয়ালপোখর বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই দীপাদেবী প্রথমবার কংগ্রেস বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৯ সালে দীপাদেবী রায়গঞ্জ লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর প্রথমবার গোয়ালপোখর বিধানসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে হেরে যান গোলামবাবু। ২০১১ সালে গোয়ালপোখর বিধানসভা ভেঙে চাকুলিয়া বিধানসভা গঠিত হয়। ওই বছর গোয়ালপোখর বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়িয়ে জয়ী হন রব্বানি। তাঁর হয়ে সেই সময় টানা নির্বাচনী প্রচারও চালিয়েছিলেন দীপাদেবী। গত লোকসভা নির্বাচনে গোয়ালপোখর বিধানসভা কেন্দ্রে দীপাদেবীর প্রচারের প্রধান দায়িত্বে ছিলেন গোলামবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy