Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Open Air School

Open Air Schools: পাড়ার উঠোনেই পড়াশোনার আসর

মুর্শিদাবাদের অন্তত ১২টি ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ৮০টি প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ‘স্কুল’ খুলেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

করোনা-বিধি মেনে চলছে ‘স্কুল’।

করোনা-বিধি মেনে চলছে ‘স্কুল’। —নিজস্ব চিত্র।

বিমান হাজরা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২১ ০৬:১৯
Share: Save:

সপ্তম শ্রেণির আতিকুর সকাল বেলা থেকে জলে নেমে বাবা-কাকার সঙ্গে পাটের আঁশ ছাড়ায়। অষ্টম শ্রেণির সাহিদা মায়ের সঙ্গে রান্নাঘরে হাতে হাতে কাজ করে। যারা আর একটু বড়, তাদের দেখা মেলে চায়ের দোকানের মাচায়। কেউ কাজের খোঁজ করে দিনভর। স্কুল বন্ধ। বাড়িতে স্মার্ট ফোন নেই। পড়াশোনার পাট এক রকম চুকেই গিয়েছিল।

মাস খানেক হল অবস্থা বদলেছে কোথাও কোথাও। কখনও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে, কখনও কারও বাড়ির বারান্দায় বা সামনের নিকোনো উঠোনে সকালে বা বিকেলে বসছে ‘স্কুল’। কখনও দু’বেলাই। ছাত্রছাত্রীরা আসছে মাস্ক পরে। স্যানিটাইজ়ারের ব্যবস্থাও মজুত। দূরত্ব-বিধি মেনে বসে শুরু হয়েছে পড়াশোনা।

মুর্শিদাবাদের অন্তত ১২টি ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ৮০টি এমন প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ‘স্কুল’ খুলেছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। হাজিরা বাড়তে বাড়তে এখন কোনও কোনও দিন প্রায় একশো শতাংশে দাঁড়াচ্ছে। পড়াচ্ছেন ওই সংস্থার কর্মীরাই। কখনও তাঁদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসছেন বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষিতেরা। ওই সংস্থার দাবি, এখন সব মিলিয়ে তাঁদের বিদ্যায়তনে পড়ুয়ার সংখ্যা চার হাজার ছুঁইছুঁই।

আরও পড়ুন:

নওদা ব্লকের জগাইপুর গ্রামে ৪০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে স্কুল চালাচ্ছেন সংস্থার কর্মী কল্যাণ বিশ্বাস। বলছেন, “৭ দিনই সকাল ও বিকেলে স্কুল চলছে বিভিন্ন পাড়ায়। ফাঁকা জায়গা দেখে ক্লাস হচ্ছে। করোনার জন্য কারও বাড়িতে ক্লাস হচ্ছে না।” অরঙ্গাবাদের বারুইপাড়ায় ৪০ জন পড়ুয়ার সকলেই ছাত্রী। পড়াচ্ছেন এলাকারই মেয়ে পাপিয়া দত্ত। বলছেন, “সকালেই ৭ টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দুটো ব্যাচে ক্লাস হচ্ছে ৭/৮ জন করে। প্রথম ব্যাচ উত্তর পাড়ায়, তো দ্বিতীয় ব্যাচ দক্ষিণ পাড়ায়।’’ বহরমপুরের হাতিনগরে এমনই স্কুল চালাচ্ছেন সুদীপ্তা বার। সুদীপ্তা বলছেন, “কোভিড বিধি মেনে প্রতিদিন ৪টি করে ব্যাচে ৮ জন করে পড়ে।’’

কুলিগ্রামের বিড়ি শ্রমিক নীলুফা খাতুন জানাচ্ছেন, এমন ভাবে সুযোগ করে দেওয়ায় তাঁর ছেলেমেয়ে আবার পড়াশোনা করতে পারছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা তো নিরক্ষর। কী করে ওদের বাড়িতে সাহায্য করব? ক্লাবের বারান্দায় পড়ানো হচ্ছে দেখে ছেলেমেয়েদের পাঠিয়ে দেখি ওদের মধ্যেও উৎসাহ ফিরেছে। নইলে তো পড়াশোনা ভুলেই যেত।’’

সংস্থার জেলা আধিকারিক জয়ন্ত চৌধুরী বলছেন,“যত দিন না সরকারি স্কুলগুলি স্বাভাবিক হচ্ছে তত দিন পাড়ায় পাড়ায় স্কুল চালিয়ে যাওয়া হবে। এই স্কুলগুলি খুলে খুব ভাল সাড়া পেয়েছি। ভবিষ্যতে কন্যাশ্রীদের এর সঙ্গে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।” জেলা শিক্ষা দফতরও এই উদ্যোগে খুশি।

অন্য বিষয়গুলি:

Education Murshidabad Open Air School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy