ছবি পিটিআই।
কৃষকেরা যে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ফসল বেচবেন, দেশের তিন-তিনটি সংশোধিত কৃষি সংস্কার আইনে সেই ব্যাপারে নিশ্চয়তার কোনও ব্যবস্থাই করা হয়নি। তবে পঞ্জাব, হরিয়ানা বা তেলঙ্গনার তুলনায় পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও বিহারের কৃষক সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করেন কম।
কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের তথ্য বলছে, ২০১৮-১৯ সালে পঞ্জাবে ৯৫%, হরিয়ানায় ৭০%, তেলঙ্গানায় ৬২% চাষি সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করেছেন। ফলে নতুন কৃষি আইনে সহায়ক মূল্যের নিশ্চয়তা না-থাকায় সব চেয়ে বেশি কৃষক বিক্ষোভ হচ্ছে সেখানেই। ধান উৎপাদক অন্য রাজ্যগুলির মধ্যে উত্তরপ্রদেশে মাত্র ৩.৬%, ওড়িশায় ২০.৬% এবং বিহারে ১.৭% চাষি সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির সুযোগ পান। ওই সব রাজ্যের অবস্থা পশ্চিমবঙ্গের চেয়েও খারাপ। যদিও উত্তরপ্রদেশেই কৃষকের সংখ্যা দেশের মধ্যে সব চেয়ে বেশি।
খাদ্য দফতর জানাচ্ছে, ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী রাজ্যে কৃষকের সংখ্যা ৭১ লক্ষ। যদিও কৃষক বন্ধু প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত হয়েছে মাত্র ৪২ লক্ষ চাষির। অথচ ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে সরকারের কাছে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করেছেন ১২.৫ লক্ষ চাষি। যা নথিভুক্ত কৃষকের মাত্র ৩০ শতাংশ। খাদ্য দফতরের হিসেব, ২০১৮-১৯ সালে নথিভুক্ত ৪২ লক্ষের মধ্যে ১১.৫ লক্ষ চাষি ধান বিক্রি করেছিলেন সরকারের কাছে।
খাদ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, প্রাথমিক সমবায় সমিতি, রাজ্যের নিজস্ব ধান সংগ্রহ কেন্দ্র এবং চালকলগুলির মাধ্যমে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার ব্যবস্থা হলেও রাজ্যের তিন ভাগ চাষি সরকারি দরে ধান বিক্রি করতে পারেন না। বাংলার অধিকাংশ কৃষক খুব কম জমিতে চাষ করেন। তাঁদের জমির আয়তন আর ফসলের পরিমাণও কম। ফলে গ্রাম থেকে সরকারি সংগ্রহ কেন্দ্রে গিয়ে ধান বিক্রি করা তাঁদের পক্ষে মোটেই সুবিধাজনক নয়। পথ-খরচের টাকা জোটানোর চেয়ে গ্রামে ধান কিনতে আসা ফড়েদের কাছে সহায়ক মূল্যের চেয়ে কুইন্টাল-প্রতি ১০০-১৫০ টাকা কম দরে ধান বেচে দেন তাঁরা। দাম মেলে নগদে। সরকারি দরে ধান বেচতে হলে জমির রায়তি স্বত্ব, ব্যাঙ্কের কাগজপত্র দেখাতে হয়। এখনও বাংলার বহু চাষির জমির কাগজ নেই, ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট নেই। ফলে সরকারের ঘরে ন্যায্য দামের চেয়ে ফড়ের কাছে নগদে কম দামে ধান বেচতেই পছন্দ করেন তাঁরা। ফলত ৭৫% চাষির ‘অভাবী বিক্রির’ ধান সরকারের ঘরে জমা করে মোটা মুনাফা করেন চালকল-মালিকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy