Advertisement
২৭ নভেম্বর ২০২৪
Corona

প্রভাব ঠেকাতে প্রতিষেধক শুধু অ্যাপে নাম তুলে

প্রথম দফার টিকা প্রদানের তৃতীয় দিনে স্বাস্থ্য দফতরের এই নির্দেশিকার নেপথ্যে বিশেষ কারণ রয়েছে বলেই মনে করছেন চিকিৎসক ও রাজনৈতিক মহল।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:০২
Share: Save:

আজ, বুধবার থেকে আর অফ-লাইন নয়। কো-উইন অ্যাপে নাম নথিভুক্ত করা এবং ওই অ্যাপ থেকে নির্দিষ্ট করে দেওয়া গ্রাহকেরাই করোনার প্রতিষেধক পাবেন। মঙ্গলবার রাজ্যের সমস্ত জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও সুপারদের কাছে এই মর্মে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সূত্রের খবর, এখন প্রায় সর্বত্রই ঠিকমতো কাজ করছে অ্যাপ।

প্রথম দফার টিকা প্রদানের তৃতীয় দিনে স্বাস্থ্য দফতরের এই নির্দেশিকার নেপথ্যে বিশেষ কারণ রয়েছে বলেই মনে করছেন চিকিৎসক ও রাজনৈতিক মহল। তাঁদের ব্যাখ্যা, কোভিশিল্ড প্রদানের প্রথম ও দ্বিতীয় দিনে টিকা নিয়েছেন শাসকদলের বিধায়ক, পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য, রোগী কল্যাণ সমিতির পদাধিকারী ও জনপ্রতিনিধিরা। তাঁদের দাবি, ‘অন্যদের উৎসাহ দিতেই টিকা নিয়েছি।’ কিন্তু যেখানে স্পষ্ট নির্দেশিকা রয়েছে, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী-সহ সমস্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীদেরই প্রথম ধাপে টিকা দেওয়া হবে, সেখানে জনপ্রতিনিধিদের টিকাগ্রহণে স্বাভাবিক ভাবেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেকের প্রশ্ন, ‘‘কেন জনপ্রতিনিধিরা স্থানীয় স্তরে প্রভাব খাটিয়ে টিকা নেবেন? কেন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? প্রথম পর্বে জনপ্রতিনিধিরা টিকা নিতে পারবেন না, সেই বিষয়ে স্পষ্ট করে কোনও নির্দেশিকা কেন জারি করছে না রাজ্য সরকার? এ বিষয়ে স্পষ্ট উত্তর মেলেনি। প্রশাসনের ব্যাখ্যা, টিকাদানের বিষয়ে কেন্দ্রের নির্দেশিকা মেনেই সর্বত্র কাজ হচ্ছে। কয়েকটি জায়গা থেকে অল্পবিস্তর সমস্যার খবর আসছে। সেটাও সংশোধন করা হচ্ছে।

ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)-র রাজ্য সম্পাদক তথা সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‘প্রোটোকল অনুযায়ী চিকিৎসক-নার্স সহ স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারীদের প্রথমে টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু যাঁদের নাম ওই তালিকায় নেই, কিংবা টিকা নেওয়ার মতো অবস্থার মধ্যেও নেই, তাঁদের প্রথম সারিতে নেওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।’’

অ্যাপে নাম নথিভুক্ত করে তার মাধ্যমেই টিকা নেওয়া চালু হওয়াই জরুরি বলে মত চিকিৎসকদের একাংশেরও। কারণ, তাঁদের মতে অনেক সময় দেখা যাচ্ছে, অনেকেই নিজের পছন্দ মাফিক কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিচ্ছেন। যদিও তাঁর নাম রয়েছে অন্যত্র। নির্দেশিকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, ১) নাম নথিভুক্ত না থাকা সত্ত্বেও, জরুরি ভিত্তিতে কাউকে যুক্ত করতে হলে টিকা প্রদানের আগে তা চূড়ান্ত করতে হবে। ২) অফলাইন পদ্ধতিতে কাউকে টিকা দেওয়া হলে যাবতীয় তথ্য কো-উইন অ্যাপে নথিভুক্ত করতে হবে। ৩) লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য অন্তত ২০০ জনের নামের তালিকা তৈরি করে রাখতে হবে। ৪)টিকাদানের আগের দিন বেলা ১২টার মধ্যে গ্রাহকের তালিকা চূড়ান্ত করে ফেলতে হবে। ৫) প্রতিটি জেলায় স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিদের কাছে গ্রাহকের নামের তালিকার প্রিন্ট রাখতে হবে। ৬) সকলকে ফোন করে টিকা নিতে আসার বিষয়েও আগাম নিশ্চিত হতে হবে। ৭) ১০০ জনের বেশি গ্রাহক হওয়ার সম্ভবনা থাকলে অতিরিক্ত টিকা প্রদানকারীর ব্যবস্থা রেখে তাঁকেও কাজে লাগাতে হবে।

প্রতি সপ্তাহে সোম, মঙ্গল, শুক্র ও শনিবার টিকা প্রদানের দিন স্থির হয়েছে। কিন্তু ওই সমস্ত দিনে স্থানীয় বা জাতীয় ছুটি থাকলে সংশ্লিষ্ট জেলাকে টিকা প্রদানের চারটি দিন স্থির করারও অনুমতি দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। প্রতি সপ্তাহে কোন চার দিন টিকা দেওয়া হবে, তা-ও আগাম তৈরি রাখার পরামর্শ দিয়েছে দফতর। কলকাতা ও জেলায় টিকা কেন্দ্র বাড়ানোর অনুমতি দিয়েছে দফতর। বলা হয়েছে, এ বার জেলাতেও এক বা দুটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রতিষেধক কেন্দ্র চালু করা যাবে। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালের লিখিত সম্মতি প্রয়োজন। বেসরকারি ক্ষেত্রেও কো-উইন অ্যাপেই গ্রাহকের নাম নথিভুক্ত করতে হবে। এখন রাজ্যে ২০৭টি কেন্দ্র রয়েছে। আগামী শুক্রবার থেকে নতুন কেন্দ্র চালু হবে বলেও জানান স্বাস্থ্য আধিকারিকরা। আর টিকা নেওয়ার পরে আধ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ কক্ষে থাকার সময়ে গ্রাহকের হাতে ছাপানো শংসাপত্রও দিতে হবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy