যাদবপুরকাণ্ডে আরও এক পড়ুয়াকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত ছাত্রের নাম সৌপ্তিক চন্দ্র। তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ১ মার্চ রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তৃণমূল সমর্থিত কর্মী সংগঠন ‘শিক্ষাবন্ধু’র অফিসে অগ্নিকাণ্ড ঘটে যায়। তা নিয়ে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়। সেই মামলাতেই মঙ্গলবার বিকেলে যাদবপুর থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল সৌপ্তিককে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
ঘটনার রাতে ‘শিক্ষাবন্ধু’র অফিসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সৌপ্তিক-সহ আরও কয়েক জন পড়ুয়াকে মঙ্গলবার যাদবপুর থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। সেই তলবে সাড়া দিয়ে পড়ুয়ারা মিছিল করে থানায় যান। তার পর একে একে ওই পড়ুয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেই তালিকায় ছিলেন সৌপ্তিকও। সন্ধ্যার পর পুলিশের তরফে তাঁর গ্রেফতারির কথা জানানো হয়। সেই খবর জানাজানি হতেই থানার সামনে বিক্ষোভ দেখায় যাদবপুরের পড়ুয়াদের একাংশ। তাঁদের দাবি, পুলিশ মিথ্যা মামলায় পড়ুয়াদের হয়রানি করছে। পাল্টা পড়ুয়াদের অভিযোগ, তাঁরা থানায় যা অভিযোগ জানিয়েছেন, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত হচ্ছে না। থানার সামনেই স্লোগান দিয়ে গ্রেফতারির প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা।
গত ১ মার্চ তৃণমূলপন্থী অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলন ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। ওই সম্মেলনকে কেন্দ্র করেই উত্তেজনা ছড়ায় ক্যাম্পাসে। সম্মেলনে গিয়ে বাম এবং অতিবাম ছাত্র সংগঠনগুলির বিক্ষোভের মুখে পড়েন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তাঁকে ঘিরে ‘গোব্যাক’ স্লোগানও দেন এসএফআই, আইসা, ডিএসএফের সদস্যেরা। দফায় দফায় উত্তেজনা তৈরি হয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে। আবার পড়ুয়াদের অভিযোগ, শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির ধাক্কায় আহত হয়েছেন এক ছাত্র। ওই রাতেই ক্যাম্পাসে তৃণমূল সমর্থিত কর্মী সংগঠন ‘শিক্ষাবন্ধু’র অফিসে আগুনের ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়।
আরও পড়ুন:
সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদবপুরকাণ্ডের পরের দিনই কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা জানান, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাহিল আলিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও পরে আদালত থেকে জামিন পান তিনি। ওই একই মামলায় গত ১২ মার্চ সৌম্যদীপ ওরফে উজান নামে দর্শন বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পুলিশি হেফাজত শেষে মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে হাজির করানো হয়। তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক। কিন্তু তার পরই তাঁকে আবার গ্রেফতার করতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে পুলিশ। উল্লেখ্য, ক্যাম্পাসে ‘আজ়াদ কাশ্মীর’ পোস্টার লাগানোর অভিযোগ উঠেছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দায়ের হওয়া মামলায় আবার সৌম্যদীপকে গ্রেফতার করতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে পুলিশ।