প্রেসিডেন্সি জেলে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শুধু একা পার্থ নন, অসুস্থ সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’ও! মঙ্গলবার বিচার ভবনে এমন নানা প্রসঙ্গ উঠল বিচারকের সামনে। পাশাপাশি, প্রাথমিক নিয়োগ মামলার অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তল ঘোষ (বর্তমানে জামিনে মুক্ত) পুরী যেতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। আবার আদালতে অরুণ হাজরাকে তলব নিয়েও জটিলতা সৃষ্টি হয়। হাজিরার নির্দেশ থাকলেও সমন না পৌঁছোনোয় আদালতে হাজির হননি তিনি।
মঙ্গলবার প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ বিচারককে পার্থের শারীরিক অবস্থা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট পাঠান। সেই রিপোর্টে বলা হয়, জেলের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন পার্থ। তিনি দীর্ঘ দিন পা ফোলার সমস্যায় ভুগছেন। সেই সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় জেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। উল্লেখ্য, গত জানুয়ারিতেও জেলে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন পার্থ। তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। এর পরেই আদালতে পিটিশন জমা করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। আবেদনে পার্থ জানিয়েছিলেন, এসএসকেএমে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হতে পারছেন না তিনি। তাই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক তাঁকে। সেই আবেদন মঞ্জুর হয়। পার্থকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানোর অনুমতি দেন বিচারক। তবে শর্ত দেওয়া হয়, চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে হবে পার্থকেই। সেই শর্ত মেনে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হয় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি। তবে এক মাস কাটতে না কাটতে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লেন পার্থ।
শুধু পার্থ নন, অসুস্থ সুজয়কৃষ্ণও। মঙ্গলবার বিচার ভবনে তাঁর আইনজীবী অসুস্থতার কথা জানান। বিচারকের উদ্দেশে তিনি জানান, তাঁর মক্কেলের বুকে পেসমেকারের কিছু সমস্যা হয়েছিল। ১৬ তারিখ থেকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি।
অন্য দিকে, নিয়োগ মামলার অন্যতম অভিযুক্ত কুন্তল পুরী যেতে চেয়ে মঙ্গলবার আদালতে আবেদন করেন। আদালত শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দিয়েছে। বিচারক জানান, পুরী গেলেও নিয়মিত তদন্তকারী অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে তাঁকে। এক দিন অন্তর তদন্তকারী অফিসারকে ফোন করতে হবে কুন্তলকে। প্রসঙ্গত, নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় কুন্তলকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। প্রায় ২৩ মাস ধরে জেলে থাকার পর কুন্তল সিবিআইয়ের মামলায় সুপ্রিম কোর্ট থেকে জামিন পান গত নভেম্বরে। তার পর তিনি জেল থেকে মুক্তি পান। তবে জেল থেকে মুক্তি পেলেও তদন্তকারী অফিসারকে না জানিয়ে এলাকা ছাড়ার অনুমতি ছিল না তাঁর। কোথাও যেতে চাইলে প্রয়োজন ছিল আদালতের অনুমতিও। সেই কারণেই মঙ্গলবার আদালতে পুরী যেতে চেয়ে আবেদন করেন কুন্তল।
নিয়োগ মামলায় নাম জড়িয়েছে অরুণেরও। সিবিআই চার্জশিটে দাবি করেছে, প্রাথমিক শিক্ষক থেকে শুরু করে এসএসসি বা বিভিন্ন সরকারি চাকরির নামে প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তোলা হয়েছে। ওই টাকা তোলার কাজে একাধিক এজেন্টকে ব্যবহার করেছিলেন কুন্তল, অরুণেরা। মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে হাজিরার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যদিও তিনি হাজিরা দেননি। জানা গিয়েছে, এখনও আদালতের সমন পৌঁছয়নি। ২৫ এপ্রিল তাঁকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।