বাবাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির পথে ছেলে। —নিজস্ব চিত্র।
করোনাকালে রোগী দেখে বাড়ি ফিরলে অবশ্যই স্নান করতে হবে। স্ত্রীর বেঁধে দেওয়া এমন স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিতে পারেননি উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁর রেটপাড়ার বাসিন্দা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক কান্তি চক্রবর্তী। রাগে-দুঃখে ঘর ছেড়েছিলেন বছর বাষট্টির ওই বৃদ্ধ। সেই কান্তির খোঁজ মিলল অবশেষে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্নান করা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন কান্তি। তার জেরেই ক্ষোভে-দুঃখে গৃহত্যাগী হন ওই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক। কান্তির গিন্নি কড়া হুকুম দিয়েছিলেন, করোনা পর্বে রোগী দেখে বাড়িতে ঢুকতে গেলে স্নান অবশ্যই করতে হবে। তবে স্ত্রীর এই নিদান পছন্দ হয়নি কান্তির। তাঁর যুক্তি ছিল, শীতকালে এই বৃদ্ধ বয়সে স্নান করলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। এ নিয়ে অশান্তির জেরে শেষ পর্যন্ত গৃহত্যাগ করেন কান্তি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৫ জানুয়ারি বাড়ি ছেড়েছিলেন কান্তি। তার পর থেকে টানা নয় দিন ধরে বাড়ির গণ্ডি ছাড়িয়ে থেকে বহু ক্রোশ দূরে চলে গিয়েছিলেন তিনি। কান্তি জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি প্রথমে চেন্নাই চলে যান। সেখানে ভাল না লাগায় আবার রাজ্যের পথ ধরেন তিনি। ভুল করে হাওড়া-ব্যান্ডেল মেন লাইনের মানকুন্ডু স্টেশনে চলে আসেন তিনি। সোমবার ভোররাতে স্টেশন থেকে তাঁকে উদ্ধার করে ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে বৃষ্টি হচ্ছিল। মহেশ্বর মাজি নামে ভদ্রেশ্বর থানার এক আধিকারিক গাড়ি নিয়ে টহলে বেরিয়ে দেখতে পান, মানকুন্ডু স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে ঠকঠক করে কাঁপছেন কান্তি। কাছে যেতেই কান্তি তাঁকে গৃহত্যাগী হওয়ার ঘটনা শুনিয়ে সাহায্য চান। এর পর তাঁকে ভদ্রেশ্বর থানায় নিয়ে আসা হয়।
কান্তির ছেলে অর্পণ কর্মসূত্রে সল্টলেকে থাকেন। বাবা নিখোঁজ হওয়ার পর বনগাঁ থানায় তাঁরা নিখোঁজ ডায়েরিও করেন। মঙ্গলবার ভদ্রেশ্বর থানা থেকে গাড়িতে চড়িয়ে বাবাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান তিনি। বাবার এমন কাণ্ডে কিছুটা বিব্রত অর্পণ। বলেন, ‘‘প্রতিটি বাড়িতেই অশান্তি হয়। আমার সঙ্গে বাবার কোনও সমস্যা হয়নি। এ বার বাবা নিজেই বলতে পারবেন উনি কেন চলে গিয়েছিলেন। বনগাঁ থানায় মিসিং ডায়েরি করেছিলাম। সোমবার ভদ্রেশ্বর থানা থেকে ফোন যায়। বাবাকে ফিরে পেয়ে আনন্দ হচ্ছে। যাই হোক, সব ভাল যার শেষ ভাল তার।’’
রাগের বশে এমন কাণ্ড যে ঘটে যাবে তা বিন্দুমাত্র আঁচ করতে পারেননি কান্তি। তিনি বলছেন, ‘‘বাড়িতে অশান্তির জন্য পথে পথে বেরিয়ে পড়েছিলাম। তবে এখন বাড়ি ফিরে যাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy