কালীপুজোর রাতে একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছেন বড়ঞা থানার ওসি সন্দীপ সেন। ছবি: ভিডিয়ো থেকে সংগৃহীত।
পুলিশ আধিকারিক থেকে শুরু করে শাসকদলের নেতা-নেত্রীদের কাটমানির কত শতাংশ বখরা দেওয়া হয়, তার ফিরিস্তি দিচ্ছেন বড়ঞা থানার ওসি! কালীপুজোর রাতে একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে নিজের ভাষণে এ হেন বিতর্কিত মন্তব্য করছেন ওই থানার ওসি সন্দীপ সেন। এমনই একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়া নিয়ে তরজায় জড়ালেন শাসক-বিরোধীরা। যদিও ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
কালীপুজোর রাতে বড়ঞা বিধানসভা কেন্দ্রের শাওড়া অঞ্চলের তালবোনা গ্রামে ৩৫০ বছরের পুরনো শ্মশানকালী মন্দিরের পুজো ও সংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সন্দীপ। অভিযোগ, সেখানেই কাটমানি নিয়ে পুলিশ-সহ শাসকদলকে বিঁধেছেন তিনি। ভাইরাল ওই ভিডিয়োতে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘বড়ঞা থানার শাও়ড়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রাস্তা তৈরি করার জন্য ৪০ শতাংশ কম দর দিয়ে টেন্ডার পেয়েছিলেন স্থানীয় কন্ট্রাক্টর। সেই কন্ট্রাক্টর নিজে ২০ পার্সেন্ট খাচ্ছে। ব্লক অফিসে ৪ পার্সেন্ট দিয়েছে। আগের ওসিকে ৫ পার্সেন্ট দিয়েছে। আর খেঁকশিয়ালের বাচ্চাদেরকে আরও প্রায় ৫ শতাংশ টাকা দিতে হয়েছে। মোট ৭৫ পার্সেন্ট। মাত্র ২৫ শতাংশ টাকায় কী কাজ হবে আপনারাই বিচার করুন।’’
যদিও নিজের ভাষণে এক বারের জন্যও নির্দিষ্ট করে কোনও প্রাক্তন ওসির নাম করেননি সন্দীপ। বিতর্কিত ওই ভিডিয়োতে তাঁকে আরও চাঞ্চল্যকর দাবি করতে শোনা গিয়েছে। সন্দীপের দাবি, ‘‘থানার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই কাটমানি খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। এবং বর্তমান বিধায়কের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করে দিয়েছি, প্রত্যেক অঞ্চলের কন্ট্রাক্টর সেই অঞ্চলেই কাজ করবে।’’ এখন থেকে গ্রামবাসীদের কাজ বুঝে নিতেও বলেন তিনি।
এই ভিডিয়ো নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে কংগ্রেস এবং বিজেপি। বহরমপুরের সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘বড়ঞা থানার ওসি যা বলেছেন, তা তো সত্যি! কাটমানি আর দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবে রয়েছে এই সরকার।’’
যদিও ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। তাঁর দাবি, ‘‘আমার বিধানসভা এলাকায় কোনও অনৈতিক কাজকে প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। ওসি এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য না করলেই ভাল করতেন।’’
কিন্তু, শাসকদলের মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি। দলীয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘যাঁরাই রক্ষক, তাঁরাই ভক্ষক। পুলিশও টাকাপয়সা খাচ্ছে। এ দিকে পুলিশ নিজেরাই বলছে যে, টেন্ডার নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদেরকেও নেতা-নেত্রীদের মন জোগানোর জন্য ৭৫ শতাংশ করে দিতে হয়। আমাদের তো আর কিছুই বলতে হবে না। থানাগুলি মোটামুটি তৃণমূলের অফিস হয়ে গিয়েছে। কী ভাবে উন্নয়ন হবে? তোলাবাজ, সিন্ডিকেট নিয়ে তৃণমূলের সরকার চলছে। তৃণমূলের পুলিশের ওসির মুখে চুরি-জোচ্চুরির কথা শোনা যাচ্ছে। এর জবাব মানুষই দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy