Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Containment Zones

কন্টেনমেন্ট কমিয়ে স্বস্তি দিতে পাল্টে গেল সংজ্ঞা

রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ বলেন, ‘‘কন্টেনমেন্ট এলাকার সংখ্যা এখন রোজই কমতে থাকবে। বাড়বে আইসোলেশন ইউনিটের সংখ্যা। ”

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২০ ০৪:৫১
Share: Save:

খাস কলকাতা পুরসভা এলাকায় কন্টেনমেন্ট জ়োন বা এলাকার সংখ্যা ছিল দেড় হাজার। সংজ্ঞা বদলে দেওয়ায় এক ধাক্কায় তা কমে হল ১৮! করোনা সংক্রমণ হলে কন্টেনমেন্ট জ়োনের বদলে সংশ্লিষ্ট বাড়ি বা ফ্ল্যাট চিহ্নিত হবে ‘আইসোলেশন ইউনিট’ হিসেবে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৭ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত মহানগরে আইসোলেশন ইউনিটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮৭২। আর শনিবার পর্যন্ত কন্টেনমেন্ট জ়োন মাত্র ১৮।

রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ বলেন, ‘‘কন্টেনমেন্ট এলাকার সংখ্যা এখন রোজই কমতে থাকবে। বাড়বে আইসোলেশন ইউনিটের সংখ্যা। কারণ, কন্টেনমেন্ট এলাকায় চাপিয়ে দেওয়া নিয়মকানুন মানতে রাজি হচ্ছেন না অনেকে। অশান্তি হচ্ছে। তাই আইসোলেশন ইউনিট তৈরি করে শুধু সেই বাড়ি বা ফ্ল্যাটটিই চিহ্নিত করে দেওয়া হচ্ছে। ফলে সর্বত্র জনজীবন স্বাভাবিক থাকছে।’’

নবান্নের বক্তব্য, লকডাউন পর্ব কাটিয়ে দেশ এখন আনলক-২ পর্বে পৌঁছে গিয়েছে। প্রথমে এক জন করোনা রোগী মিললেই গ্রামীণ এলাকায় পুরো গ্রাম পঞ্চায়েত এবং শহরে পুরো ওয়ার্ডকে কন্টেনমেন্ট এলাকা ঘোষণা করা হত। তার বাইরে তিন কিলোমিটার পরিধির এলাকায় ছিল বাফার জ়োন। সংক্রমণ বাড়তে শুরু করার পরে গ্রামীণ এলাকায় একটি গ্রাম এবং শহরে লেন বা বাইলেন বন্ধ করে কন্টেনমেন্ট জ়োন তৈরি করা হচ্ছিল। সেই হিসেবেই কলকাতায় প্রায় ১৮০০ কন্টেনমেন্ট জ়োন তৈরি হয়ে গিয়েছিল। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ১৮০০ লেন ও বাইলেন।

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আক্রান্ত ৭৪৩ জন

স্বাস্থ্য দফতরের মতে, এখন সব কিছুই ধীরে ধীরে খুলে দেওয়া হচ্ছে। তাই একটি পজিটিভ কেস পাওয়া গেলে পুরো রাস্তা বন্ধ করে রাখার মানে হয় না। কোনও রাস্তা, লেন বা গলিতে অনেকে সংক্রমিত হলে সেই রাস্তাটি বন্ধ করে কন্টেনমেন্ট জ়োন করা হবে। দু’-একটি করোনা সংক্রমণ হলে সংশ্লিষ্ট বাড়িটিকে আইসোলেশন ইউনিট বলা হবে। আশপাশের বাড়ির বাসিন্দারা স্বাভাবিক জীবন কাটাবেন। কন্টেনমেন্ট এলাকায় পুলিশ রাস্তা বন্ধ করে জরুরি পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছিল। এলাকার সব বাসিন্দার লালারস পরীক্ষা করা হচ্ছিল। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘কোনও আবাসনে একটি ফ্ল্যাটে কারও করোনা হলে শুধু সেই ফ্ল্যাটটিকেই আইসোলেশন ইউনিট ঘোষণা করা হবে। বাকি সব ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা স্বাভাবিক জীবন যাপন করবেন।’’

এ ভাবে সংজ্ঞা বদলানো হল কেন? নবান্নের কর্তারা জানাচ্ছেন, এক সময়ে মাত্র এক জন সংক্রমিত হলে পুরো ওয়ার্ড বন্ধ রাখা হত। এখন কলকাতার ১৪১টি ওয়ার্ডেই করোনা মিলছে। তা হলে তো পুরো কলকাতা বন্ধ করতে হয়! অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, পরীক্ষিত নমুনার ১৮% মানুষের সংক্রমণ হয়ে গিয়েছে। ফলে ‘টেস্ট-ট্র্যাক-ট্রেস’ করার চেয়েও চিকিৎসায় জোর দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনিক কর্তারা বলছেন, ‘‘করোনা নিয়েই বাঁচতে হবে। এক জনের সংক্রমণের জন্য রাস্তা বন্ধ রাখতে হলে কলকাতায় আড়াই-তিন হাজার রাস্তা সব সময় বন্ধ রাখর পরিস্থিতি তৈরি হবে।’’ কর্তারা জানাচ্ছেন, আইসোলেশন ইউনিট নিয়ে জোর খাটানো হবে না। শুধু স্বাস্থ্য দফতর থেকে ফোনে অনুরোধ করা হবে, সংশ্লিষ্ট বাড়ি থেকে কেউ যেন না-বেরোন।

যদিও কলকাতার করোনা পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্যকর্তাদের চিন্তা কাটছে না। তাঁরা জানাচ্ছেন, দুশ্চিন্তার কারণ কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনায় ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ। শিলিগুড়িতেও সংক্রমণ বাড়ছে। হাওড়া এবং কলকাতা লাগোয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সংক্রমণ হলেও তা নির্দিষ্ট গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ। কলকাতায় অতিরিক্ত ১৫০-২০০ সংক্রমণ রোজ মিলছে। কলকাতায় সংক্রমণ বাড়ছে কেন? নবান্নের বক্তব্য, আনলক পর্বে বেসরকারি হাসপাতালগুলি খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে অন্য রোগের চিকিৎসা করাতে গেলেও তাঁদের প্রায় সকলের করোনা পরীক্ষা করানো হচ্ছে। তাতেই উপসর্গহীন করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Containment Zones Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy