দেশের বিমান পরিবহণে আরও এক নতুন পদক্ষেপ।
এ বার থেকে যে সব যাত্রীরা শুধু একটিমাত্র হাত ব্যাগ নিয়ে বিমানে উঠবেন, সঙ্গে কোনও চেক-ইন ব্যাগ থাকবে না, তাঁরা বিমানের টিকিটে বিশেষ ছাড় পাবেন। তবে, সংশ্লিষ্ট বিমানসংস্থায় সেই সুবিধা থাকলে তবেই সেই ছাড় পাওয়া যাবে। একে ‘জিরো ব্যাগ ফেয়ার’ বলা হচ্ছে।
সম্প্রতি ভারতের বিমান পরিবহণের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ)-এই ছাড়পত্র দিয়েছে। বলা হয়েছে, দেশের কোনও বিমানসংস্থা যদি চায়, তা হলে যাত্রীদের এই সুবিধা তারা দিতে পারে। বিমানে ওঠার সময়ে একজন যাত্রী একটি ছোট সর্বোচ্চ ৭ কিলোগ্রাম ওজনের ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে বিমানে উঠতে পারেন। একেই হাত ব্যাগ বলা হয়। আর সঙ্গে আরও বড় ব্যাগ থাকলে তা চেক-ইন করার সময়ে তুলে দিতে হয় বিমানসংস্থার হাতে। সেই ব্যাগ পাঠিয়ে দেওয়া হয় ওই বিমানের পেটের ভিতরে। পরে গন্তব্যে পৌঁছে সেই ব্যাগ ফিরে পান যাত্রী। একে চেক-ইন ব্যাগ বলা হয়।
নিয়ম অনুযায়ী এখন দেশের অভ্যন্তরে কোনও উড়ানে এক একজন যাত্রী সঙ্গে সর্বোচ্চ ১৫ কিলোগ্রাম ওজনের চেক-ইন ব্যাগ নিয়ে যেতে পারেন। তার চেয়ে ওজন বেশি হলে যাত্রীকে বিমানবন্দরে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হয়। বেসরকারি বিমানসংস্থাগুলির ক্ষেত্রে এই নয়ম থাকলেও সরকারি বিমানসংস্থা এয়ার ইন্ডিয়া সর্বোচ্চ ২৩ কিলোগ্রাম ওজনের ব্যাগ নিয়ে যেতে দেয়। আন্তজার্তিক উড়ানের ক্ষেত্রে সঙ্গে আরও বেশি ওজনের চেক-ইন ব্যাগ নিয়ে যেতে পারেন যাত্রীরা।
প্রতিযোগিতার বাজারে, যাত্রীদের আকর্ষণ করতে নিত্য নতুন অফার নিয়ে আসছে বিমানসংস্থাগুলি। কয়েক মাস আগে স্পাইসজেট একটি বিশেষ অফারের কথা ঘোষণা করেছিল। বলা হয়েছিল, কলকাতা-বাগডোগরা রুটে বিমানের টিকিটের দাম যদি ৩ হাজার টাকা হয়, তা হলে যে যাত্রী শুধু হাত ব্যাগ নিয়ে উঠবেন তিনি আরও ২০০ টাকা অতিরিক্ত ছাড় পাবেন। সারা দেশে স্পাইসজেটের সমস্ত উড়ানের ক্ষেত্রেই এই সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়। বলা হয়, কোনও যাত্রী ওই বিশেষ ছাড়ের টিকিট কাটার পরেও যদি পরে সিদ্ধান্ত বদলে বিমানবন্দরে কোনও চেক-ইন ব্যাগ নিয়ে যান, তা হলে তাঁর কাছ থেকে জরিমানা নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে প্রথম ১০ কিলোগ্রামের জন্য ৫০০ টাকা ও ১৫ কিলোগ্রামের জন্য ৭৫০ টাকা জরিমানা নেওয়া হবে।
সেই ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। প্রশ্ন ওঠে, ডিজিসিএ-এর নিয়ম অনুযায়ী একজন যাত্রী সঙ্গে ১৫ কিলোগ্রাম ওজনের ব্যাগ যদি নিতে পারেন তা হলে সম ওজনের ব্যাগ নেওয়ার জন্য তাঁকে কেন জরিমানা করা হবে? এই বিতর্কের মুখে স্পাইস, ইন্ডিগো-র মতো সস্তার বিমানসংস্থাগুলি সরকারের কাছে ওই জিরো ব্যাগ ফেয়ার চালু করার জন্য আবেদন করে। কিন্তু, কেন্দ্র সরকার তখনকার মতো সেই আবেদনে কান দেয়নি। তা নিয়ে এত দিন আলোচনা চলে। সম্প্রতি সেই সিদ্ধান্তকেই স্বাগত জানিয়েছে কেন্দ্র।
বিমানসংস্থার তরফে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, বিমানের ওজন যত কম হবে তত তার জ্বালানি খরচ কমবে। ফলে, বিমানের টিকিটে ছাড় দিলেও আখেরে লাভই হবে সংস্থাগুলির। এ বার ডিজিসিএ তাদের আবেদনে সাড়া দেওয়ার পরে স্বভাবতই খুশি তারা। স্পাইসটেজের তরফে জি পি গুপ্ত জানিয়েছেন, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে যাত্রীদের যেমন সুবিধা হবে তেমনই পরিবেশের ক্ষেত্রেও সুবিধা হবে। জ্বালানি কম পুড়লে বাতাসে দূষণও কম হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy