Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

চিকিৎসক-রক্ষার আইন আছে, কিন্তু পরোয়া করে না কেউ

গত অগস্টেও ডাক্তার-সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিকিৎসকদের দাবি, তখনও তিনি বলেছিলেন, ডাক্তার-নিগ্রহের ঘটনা ঘটলেই সর্বোচ্চ পর্যায়ে হস্তক্ষেপ করা হবে।

চিকিৎসক পরিবহ মুখোপাধ্যায়

চিকিৎসক পরিবহ মুখোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৯ ০২:০৬
Share: Save:

আইন রয়েছে খাতায়-কলমে। প্রয়োগের নামগন্ধ নেই! সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের সুরক্ষায় বছরের পর বছর ‘গা-ছাড়া ভাবের এই পরম্পরা’ই রাজ্য জুড়ে আন্দোলনের পথে ঠেলে দিয়েছে ডাক্তারদের। কার্যত ‘নিরুপায়’ হয়ে কর্মবিরতির পথ বেছে নেওয়ার কথা উঠে এসেছে বুধবার চিকিৎসকদের প্রতিবাদ-মঞ্চে।
এনআরএসের ইমার্জেন্সি ভবনের পাশেই ‘প্রতিবাদীদের’ মঞ্চ। সাধারণ মানুষ তথা রোগীদের পরিবার-পরিজনের একাংশও সেখানে সহমর্মিতা জানিয়ে গেলেন। প্রবীণ চিকিৎসক সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘‘বাম আমলেই সরকারি হাসপাতালে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে হিংসা বন্ধ ও সম্পত্তি ভাঙচুরের প্রতিবাদে আইন হয়েছিল। তাতে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের হওয়ার কথা। কিন্তু পরপর গোলমাল, ডাক্তারদের মারধরের ঘটনা ঘটে যায়। কেউ পরোয়া করে না।’’ এ রাজ্যে চিকিৎসকদের ছ’টি সংগঠনের প্রতিনিধিরাই যে এ দিন রাজনীতির রং নির্বিশেষে এক মঞ্চে মিশে গিয়েছিলেন, তার পিছনেও অন্যতম কারণ তাঁদের সুরক্ষায় প্রশাসনিক ‘নিস্পৃহতা’। একটি ডাক্তার সংগঠনের নেতা অর্জুন দাশগুপ্তের হিসেব, ‘‘গত দু’বছরে রাজ্যে চিকিৎসক-নিগ্রহের ২৩৪টি ঘটনা ঘটেছে। মাঝে হাতে গোনা ক’জনকে ধরেছে। ভোটের আগে একটু বন্ধ ছিল। এ বার ট্রাকে দলবল জুটিয়ে হামলা বুঝিয়ে দিচ্ছে, ডাক্তারদের সঙ্গে যা খুশি করা যায়।’’

গত অগস্টেও ডাক্তার-সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিকিৎসকদের দাবি, তখনও তিনি বলেছিলেন, ডাক্তার-নিগ্রহের ঘটনা ঘটলেই সর্বোচ্চ পর্যায়ে হস্তক্ষেপ করা হবে। এবং জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা হবে। রাজ্যে তার পরেও নিগ্রহ করা হয়েছে চিকিৎসকদের। কেন এমন পরিস্থিতি? স্বাস্থ্য কর্তারা বা পুলিশ— কেউই মুখ খুলতে চাননি।

বছর দুয়েক আগে এনআরএসেই আর এক জুনিয়র ডাক্তার-নিগ্রহের ধাক্কায় ‘প্যানিক বাটন’ চালু করা হয়েছিল। হাসপাতালের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আপৎকালীন বোতাম টিপে লাগোয়া পুলিশফাঁড়িতে খবর দেওয়ার ব্যবস্থা। এনআরএসে সোমবার সন্ধ্যায় সেই ডাক পেয়ে মাত্র দু’জন কনস্টেবল এসেছিলেন। কাজ হয়নি। চিকিৎসকদের দাবি, এনআরএসের অধ্যক্ষ শৈবাল মুখোপাধ্যায়কে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ডাকাডাকি করা হলেও তিনি আসেন রাত ১টায়। তত ক্ষণে দু’জন ইন্টার্ন গুরুতর আহত। ‘‘যা বলার, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা বলবেন’’— বলে জবাব এড়িয়েছেন শৈবালবাবু।

অনেক পোড়খাওয়া ডাক্তারেরই ক্ষোভ, ‘‘রোগীর মৃত্যুর পরে বাড়ির লোক-জুনিয়র ডাক্তারদের চাপান-উতোর বাড়তে দেওয়া ঠিক হয়নি। পুলিশ বা হাসপাতাল প্রশাসন— সকলেই ব্যর্থ।’’ স্বাস্থ্য ভবনের শীর্ষ কর্তাদের বৈঠকেও এ দিন আলোচনায় ছিল এই ‘ব্যর্থতা’।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

অন্য বিষয়গুলি:

NRS Junior Doctors Strike
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy