ফাইল ছবি
কলকাতার পুরভোটে বহিরাগতদের দাপাদাপির অভিযোগ উঠেছে। তবে রবিবার দুপুরের পর থেকে শীতের দাপটের মূলে যে বাইরের (উত্তুরে) হাওয়া এবং উত্তর-পশ্চিম ভারতের শৈত্যপ্রবাহেরই হাত রয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযোগের অবকাশ নেই।
সেই উত্তুরে হাওয়ার প্রতাপ এমনই যে, সামান্য মাথাচাড়া দিয়েই একলাফে স্বাভাবিকের থেকে কয়েক ধাপ নামার ইঙ্গিত দিয়েছে রাতের তাপমাত্রা। তার ফলে আজ, সোমবার কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গে হাড়কাঁপানো শীতের পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। এই হাড়কাঁপানো শীতের কারণ হিসেবে উত্তর-পশ্চিম ভারতের প্রবল শৈত্যপ্রবাহকেই চিহ্নিত করছেন আবহবিদেরা। রাজস্থানের চুরুতে এ দিন তাপমাত্রা শূন্যের থেকে প্রায় আড়াই ডিগ্রি সেলসিয়াস কম ছিল। উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে কনকনে ঠান্ডা উত্তুরে বাতাস পূর্ব ভারতে বয়ে আসছে বলে আবহবিদেরা জানান। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, হাড়কাঁপানো শীত চলবে অন্তত দু’দিন।
গত দিন দুয়েক সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের নীচে। সেই তুলনায় রবিবার তা সামান্য বেড়ে যায়। কলকাতায় এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেটা এই সময়ে স্বাভাবিকই। কিন্তু কলকাতায় দুপুরের পরেই রীতিমতো দাপট দেখাতে শুরু করে উত্তুরে হাওয়া। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, উত্তুরে হাওয়ার প্রভাবেই এক ধাক্কায় রবিবার
রাতের এই পারদ পতন। আজ, সোমবার কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি ছুঁতে পারে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায়, বিশেষ করে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে এবং উত্তরবঙ্গের তরাইয়ে শীতের কামড় আরও জোরদার হতে পারে বলে মনে করছেন আবহবিদদের একাংশ।
আবহবিদদের পর্যবেক্ষণ, এই শীতের শিকড় রয়েছে উত্তর-পশ্চিম ভারতে। গত দিন দুয়েক ধরে রাজস্থান, পঞ্জাব ও হরিয়ানায় প্রবল শৈত্যপ্রবাহ চলছে। রাজস্থানের চুরুতে গত ১০ বছরে ডিসেম্বরে এমন ঠান্ডা পড়েনি। তবে মৌসম ভবনের তথ্য বলছেন, ১৯৭৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর চুরুর তাপমাত্রা মাইনাস ৪.৬ ডিগ্রিতে নেমেছিল। কাশ্মীরের শ্রীনগরে রাতের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ছয় ডিগ্রি নীচে নেমেছে। পঞ্জাবের অমৃতসরেও রাতের তাপমাত্রা শূন্য ছুঁইছুঁই। সেই কনকনে ঠান্ডাকে বয়ে নিয়ে আসছে উত্তুরে হাওয়া। উত্তরপ্রদেশ, বিহার ও ঝাড়খণ্ড পেরিয়ে তা ঢুকছে বঙ্গে।
হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, বাঁকুড়া, বীরভূম, পশ্চিম বর্ধমানে রাতের তাপমাত্রা ১০-১২ ডিগ্রির কাছেপিঠে রয়েছে। বিহারের পটনা বা ঝাড়খণ্ডের রাঁচী, ডালটনগঞ্জে রাতের তাপমাত্রা ৭-৮ ডিগ্রির কাছে ঘুরঘুর করছে। উত্তুরে বাতাসের দাপটে ওই সব এলাকায় এ দিনের তুলনায় আরও ২-৪ ডিগ্রি পারদ নামতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সাধারণত, শীতকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যদি ১০ ডিগ্রি বা তার কম হয় এবং স্বাভাবিকের থেকে তার ফারাক যদি হয় ন্যূনতম পাঁচ ডিগ্রি, তা হলে শৈত্যপ্রবাহ বইছে বলে ঘোষণা করা হয়। তা হলে কি এ বার শৈত্যপ্রবাহ বইতে পারে?
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, ‘‘পারদ পতন হলেও শৈত্যপ্রবাহের ক্ষেত্রে যে-সব শর্ত রয়েছে, সেগুলো হয়তো পূরণ হবে না। তাই খাতায়-কলমে সংজ্ঞার্থ মেনে ‘শৈত্যপ্রবাহ’ যদি না-ও হয়, তা হলেও শীতের জোরদার কামড় অনুভূত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy