১২ কিমি রাস্তার মধ্যে তিন কিমি চলার যোগ্য। বাকি ন’কিমি রাস্তায় গাড়িতে গেলে কার্যত নাচতে থাকে গাড়ি। রাস্তার এই দশার জন্য ভাড়াগাড়ির চালকেরা ভাড়াও ফিরিয়ে দিচ্ছেন।
মালদহ শহর থেকে সুজাপুরের মধ্যে ওই রাস্তা দেখলে বোঝার যো নেই যে ওটা আসলে জাতীয় সড়ক। বেশির জায়গায় পিচের আস্তরণ উঠে গিয়েছে। বেরিয়ে পড়েছে রাস্তার পাথর। কোথাও বা রাস্তার সেই পাথরের চিহ্ন পর্যন্ত নেই। গোটা রাস্তা ধুলোয় ভরে গিয়েছে। অবস্থা এমনই কালিয়াচকে যাওয়ার গাড়ি ভাড়া পাওয়া দুষ্কর। গাড়ির চালকরা আঁতকে উঠে বলেন, “দাদা, মালদহের যেখানে যেতে বলবেন ভাড়া নিয়ে যাব। কালিয়াচক যাব না।” প্রতিদিনই গাড়ির চালকেরা কালিয়াচক, সুজাপুরের ভাড়া ফিরিয়ে দিচ্ছেন।
মালদহ বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি কাজল রায়ের ক্ষোভ, “জাতীয় সড়ক মেরামতির কথা বলতে বলতে হাঁপিয়ে গিয়েছি। জেলাশাসক থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধি যাকেই বলি তিনিই বলেন, এই তো পুজোর পরই রাস্তার কাজ শুরু হবে। কিন্তু পুজো পেরিয়ে যাওয়ার পরেও এখনও মেরামতের কাজ শুরুই হয়নি।” তিনি জানান, বেহাল জাতীয় সড়কের জন্য মালদহ থেকে ফরাক্কা যেতে দু’তিন ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। কোনও কোনদিন পাঁচ-ছ’ঘণ্টাতেও ফরাক্কায় বাস পৌঁছতে পারছে না।”
কঙ্কালসার রাস্তায় কোনও গাড়ি গেলেই ধুলোয় ঢেকে যায় চারদিক। সুজাপুর হাসপাতালের কাছে জাতীয় সড়ক লাগোয়া একটি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলের সম্পাদক মহম্মদ শাহনাওয়াজ বলেন, “ধুলোয় আমার স্কুলের ৮০ শতাংশ ছেলেমেয়ের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়েছে। প্রতিদিন তিন-চারবার করে স্কুলে ধুলো পরিস্কার করতে হচ্ছে। গাড়ির চাকায় পাথর পড়ে তা ছিটকে গিয়ে পাঁচজন ছাত্র জখম হয়েছে।” তিনি অভিযোগ জানান, রাস্তা মেরামতের দেড় মাস আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কাছে আর্জি নিয়ে গেলেও ওই সংস্থার লোকেরা আমার আর্জি নিতে অস্বীকার করেন।
ওই সংস্থার তরফে অবশ্য দাবি করা হয়, জাতীয় সড়ক সংস্কারের কাজও আটকে রয়েছে নানা জটে। কালিয়াচক ও সুসতানির মোড়ের কাছে বাইপাসের জন্য প্রয়োজনীয় জমি না মেলা এবং কাজ করার পরেও বকেয়া বিল না মেলায় জাতীয় সড়কে তৈরির দায়িত্বে থাকা সংস্থা বহু জায়গায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। চার লেনের বহু জায়গায় পাথর পড়ে থাকলেও রাস্তা তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার কাউকে দেখা যায়নি। সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার বাসব চৌধুরী বলেন, “প্রয়োজনীয় জমি না মেলার জন্য ও টাকা পয়সা পাওয়া নিয়ে জটিলতার কারণে ফরাক্কা থেকে রায়গঞ্জ পর্যন্ত বহু জায়গায় চার লেনের জাতীয় সড়কের কাজে ঢিমতালে চলছে। বন্ধ হয়নি।” সুসতানির মোড়ের চায়ের দোকানদার মতিউর রহমান জানান, প্রতিদিনই অন্তত একটি বিকল হয়ে পড়ে থাকে।
সুজাপুর হাসপাতালের কাছে বেহাল ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে কোনও গাড়ি গেলেই এমনই ধুলোয় ভরে যায় চারিদিক। মনোজ মুখোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy