আত্মরক্ষা তো বটেই, রাস্তাঘাটে বিপদ এড়াতে সাবলম্বী হতে ক্যারাটে শিখছে সরকারি হোমের আবাসিক মেয়েরা। সমাজকল্যাণ দফতরের আওতাধীন কোচবিহারের শহীদ বন্দনা স্মৃতি আবাসের আবাসিকদের গত জানুয়ারি থেকে সপ্তাহে একদিন পালা করে দু’ঘন্টা ক্যারাটের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। আর আবাসিকদের আগ্রহ দেখে কালীপুজোর পর থেকে সমস্ত আবাসিকদের সপ্তাহে তিনদিন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন।
হোম সূত্রের খবর, আবাসিকদের সকলের জন্য ক্যারাটে প্রশিক্ষণের উপযোগী পোশাকের বন্দোবস্ত হয়েছে। একাধিক অভিজ্ঞ মহিলা প্রশিক্ষককে ওই দায়িত্ব দেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা চলছে।
কোচবিহারের সদর মহকুমা শাসক তথা হোমের মনিটরিং কমিটির সদস্য বিকাশ সাহা বলেন, “আবাসিকেরা দারুণ আগ্রহ দেখানোয় আমাদের উত্সাহ বেড়েছে। কালীপুজোর পর থেকে সপ্তাহে তিন দিন করে ক্যারাটে প্রশিক্ষণ চালুর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। একাধিক মহিলা প্রশিক্ষকও থাকবেন।”
প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহার শহর লাগোয়া বাবুরহাটে শহীদ বন্দনা স্মৃতি আবাস তৈরি হয়েছে। অনুর্ধ্ব ১৮ বছর বয়সের ৯৫ জন মেয়ে হোমে রয়েছে। তাদের মধ্যে বিভিন্ন কারণে ১২ জন সাজাপ্রাপ্ত ছাড়াও বাকিদের কারও পারিবারিক দুরবস্থা, কারও আবার মা-বাবা নেই। কারও অভিভাবকেরা আবার জেলে রয়েছে। হোমের ৫৪ জন আবাসিক লাগোয়া বিভিন্ন স্কুলে পড়াশোনা করছে। বাকিদের জন্য হোমে পৃথক পড়াশোনার বন্দোবস্ত রয়েছে।
এদের ভবিষ্যতে অনেককেই ১৮ বয়স পূর্ণ হলে একা থাকতে হতে পারে। তাই তাদের নিরাপত্তার জন্য কিছু করার ভাবনা থেকে ক্যারাটে শেখানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
তবে ওই প্রশিক্ষণে মেয়েরা কতটা আন্তরিকতা দেখাবে তা নিয়ে প্রশাসনের কর্তাদের প্রথমে সংশয় ছিল। গত জানুয়ারি থেকে সপ্তাহে একদিন করে প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত চালু করা হয়।
পালা করে আবাসিকেরা ওই প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে রীতিমত আগ্রহ দেখানো শুরু করে। হোমের সুপার সুপর্ণা বর্মন বলেন, “সপ্তাহে একদিন দু’ঘন্টা পালা করে ক্যারাটে শিখছে আবাসিকরা। আরও বড় করে ওই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা প্রশাসন করলে ভাল হবে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আপাতত আবাসিকরা স্কুলে যাওয়া কিংবা কোন অনুষ্ঠানে বাইরে গেলে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘেরাটোপে থাকে। কিন্তু ১৮ বছর পূর্ণ করার পর নিয়ম অনুযায়ী কেউ হোমে থাকতে পারবে না। তাই এখন থেকেই ভবিষ্যত নিরাপত্তার জন্য আবাসিকদের তৈরি করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এই ব্যাপারে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে এসেছেন এলাকার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “ক্যারাটে শেখার ব্যাপারে আবাসিকদের উত্সাহের কথা শুনে সকলের প্রশিক্ষণ উপযোগী পোশাক-সহ অন্যান্য কাজের জন্য ইতিমধ্যে বিধায়ক উন্নয়ন তহবিল থেকে ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়েছি।” উদ্যোগে খুশি আবাসিকরাও।
প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, কোচবিহার শহরের অন্তত সাতটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পাঁচ শতাধিক স্কুল-কলেজ ছাত্রী ক্যারাটে শিখছে। সেখানে আবাসিকদেরও মেয়েদের আজকের দিনে প্রয়োজন ওই প্রশিক্ষণ নেওয়া। তাদের এতে সাড়া দেওয়াটাও খুব ভাল ব্যাপার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy