Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

পরস্পরের উপর চাপ বজায় রাখল রাজ্য-জিটিএ

রাজ্য এবং জিটিএ-র মধ্যে চাপের লড়াই চলছেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দার্জিলিং সফরের তৃতীয় দিন, বৃহস্পতিবারে সেটাই যেন স্পষ্ট হল পাহাড়বাসীদের অনেকর কাছেই। দু-তরফের চাপের লড়াইয়ের জেরে পাহাড়ের উন্নয়ন নিয়ে প্রতিযোগিতা হবে না তা প্রতি পদে হোঁচট খাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগ, সিপিআরএম সহ সম মনোভাবাপন্ন দলের নেতারা।

দার্জিলিঙের রিচমন্ড হিলে জিটিএ-র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: রবিন রাই।

দার্জিলিঙের রিচমন্ড হিলে জিটিএ-র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: রবিন রাই।

অনির্বাণ রায় ও রেজা প্রধান
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৪৮
Share: Save:

রাজ্য এবং জিটিএ-র মধ্যে চাপের লড়াই চলছেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দার্জিলিং সফরের তৃতীয় দিন, বৃহস্পতিবারে সেটাই যেন স্পষ্ট হল পাহাড়বাসীদের অনেকর কাছেই। দু-তরফের চাপের লড়াইয়ের জেরে পাহাড়ের উন্নয়ন নিয়ে প্রতিযোগিতা হবে না তা প্রতি পদে হোঁচট খাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগ, সিপিআরএম সহ সম মনোভাবাপন্ন দলের নেতারা।

এ দিন বেলা ১২টায় রিচমন্ড হিলে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন জিটিএ-র প্রতিনিধিরা। হাসি মুখে বৈঠকে গিয়ে বেরিয়ে আসার পরে জিটিএ প্রতিনিধিদের তরফে রোশন গিরি প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়ে দেন, রাজ্য শুধু কথাই বলছে, কাজ কম করছে। সে জন্যই জিটিএ চুক্তির পরে ৩ বছর গড়াতে চললেও অনেক দফতর জিটিএকে হস্তান্তর করতে পারেনি রাজ্য। তবে জিটিএ-র তরফে জানানো হয়, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তাঁরা দিল্লিতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক কবে হবে সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন। আগামী ২৯ জানুয়ারি সেই বৈঠক হওয়ার কথা। তবে সেখানেও জিটিএ-র তরফে চুক্তি মতো কোন কোন কাজ হয়নি তা তুলে ধরা হবে বলেও রোশন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এ ভাবে দিনের পর দিন শুধু বৈঠক করে কতদিন চলবে? কথা হচ্ছে, শুধুই কথা। কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। আমাদের ফল চাই। কাজ চাই।”

ঘণ্টাখানেক পরে মুখ্যমন্ত্রী লেবঙে তামাঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে বুঝিয়ে দেন, পাহাড়ে নানা সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য তিনি সক্রিয় থাকবেন। তামাঙ্গ বোর্ডকে ৫ কোটি টাকার চেক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তামাঙ্গ সম্প্রদায়ের ৫০০ বাসিন্দার ঘর তৈরির জন্য ১ লক্ষ টাকা করে চেক বিলি শুরু করেন। কন্যাশ্রী এবং কেসিসির সুবিধেও তামাঙ্গদের মঞ্চ থেকে বিলি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তামাঙ্গ শিল্পীদের নামও সরকারি ভাবে নথিভুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, প্রথমে লেপচা ও পরে তামাঙ্গদের পর্ষদ গড়ে দেওয়ার পরে পাহাড়ে সম্প্রতি গুরুঙ্গ, মঙ্গর, শেরপা সব সম্প্রদায় একই ধরনের উন্নয়ন পর্ষদের দাবিতে সরব। সে কথা জানেন মুখ্যমন্ত্রীও। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, “আমি পাহাড়ের সব সম্প্রদায়ের মানুষকে ভালবাসি। আমাকে তাঁদের অনুষ্ঠানেও ডাকলে আমি আসব। যথাসাধ্য সাহায্য করব।”

যা শোনার পরে পাহাড়ের মোর্চা নেতাদের একাংশ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফের পাহাড়ে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তোলেন। পাহাড়ের তৃণমূল নেতাদের পাল্টা বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী পিছিয়ে পড়া সব সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য বদ্ধপরিকর, এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই।

সিপিআরএমের মুখপাত্র গোবিন্দ ছেত্রীর অবশ্য বক্তব্য, জিটিএ আর রাজ্যের চাপ-পাল্টা চাপের রাজনীতি থেকে পাহাড়বাসী যখন মুক্তি পাবেন, তখনই দার্জিলিঙের প্রকৃত উন্নয়নের কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, “না হলে সকলেই নিজের নিজের ঘর গুছোতে রাজনীতি করছেন বলে ধারণাটা ক্রমশ পোক্ত হচ্ছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

anirban roy reza pradhan mamata gta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE