সেচ ক্যানালের জল নষ্ট হচ্ছে এ ভাবেই। জলপাইগুড়ির দেবীনগর এলাকায় সন্দীপ পালের তোলা ছবি।
প্রবল দাবদাহে কয়েক ফোঁটা জলের জন্য চাষিরা হাহুতাশ করছেন। নদীতে বাঁধ দিয়ে বোরো ধান চাষের মরিয়া চেষ্টা চলছে। তখন সেচের জল নষ্ট হতে দেখে কৃষক সংগঠনের নেতৃত্ব মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, প্রতিদিন বিভিন্ন সেচ খালে সরবরাহ করা জলের বেশিটা বোরো ধান চাষের কাজে লাগছে না। কয়েক বছরে তিস্তা কমান্ড এলাকা জুড়ে ধান চাষের জমি দখল করে গড়ে অথবা চা বাগান বোরো ধান চাষের জন্য সরবরাহ করা জলের সুবিধা বেশি পাচ্ছে। কৃষি দফতরের কর্তারা সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি। অতিরিক্ত অধিকর্তা সুজিত পাল বলেন, “সেচের জল পেয়েও চাষিদের একাংশ মনে করছে চা বাগান করে বেশি লাভ হবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা বোরো ধান চাষের জন্য প্রচার করছি। ধীরে হলেও এলাকা বাড়ছে।”
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, তিস্তা সেচ খালের আওতায় রয়েছে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপরা, ইসলামপুর, শিলিগুড়ি মহকুমার ফাসিদেওয়া ব্লকের জালাস, চটহাট, রাজগঞ্জ ব্লক, জলপাইগুড়ি সদর ব্লক, ময়নাগুড়ি ব্লক এবং মালবাজার মহকুমার কিছু অংশ। কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার রাজগঞ্জ, জলপাইগুড়ি সদর, মালবাজার ও ময়নাগুড়ি ব্লকের তিস্তা সেচ সেবিত ২২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। উত্তর দিনাজপুর জেলায় ৪ হাজার ৮৮০ হেক্টর এবং শিলিগুড়ি মহকুমার মাত্র ২৫০ হেক্টর জমিতে তিস্তার জলে বোরো ধান চাষ হয়েছে। কৃষি কর্তাদের দাবি, সব মিলিয়ে তিস্তা সেচ প্রকল্পের জলের উপরে ভিত্তি করে ২৭ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। যদিও সেচ দফতরের দাবি, ২০১২ সালে বাহাতি খাল চালু হওয়ার পর থেকে ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচের জল দেওয়া হচ্ছে।
কৃষক সংগঠনের নেতৃত্ব প্রশ্ন তুলেছেন, ২৭ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হলে বাকি ৩৩ হাজার ৫০ হেক্টর কোন ফসলের জমিতে মার্চ-এপ্রিল মাসে জল দেওয়া হচ্ছে? তাঁদের অভিযোগ, সেচ দফতরের দাবি সত্যি হলে এটা স্পষ্ট প্রচুর জল অপচয় হচ্ছে। কৃষক সভার জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সদস্য নির্মল চৌধুরী বলেন, “তিস্তা খাল সংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখেছি সেখানকার জলে খুব সামান্য বোরো চাষ হচ্ছে। রাজগঞ্জে সেচের জল পুকুরে ফেলে মাছ চাষ চলছে।” ওই অভিযোগ উড়িয়ে দেননি উত্তর দিনাজপুর জেলা কৃষি আধিকারিক জ্যোতির্ময় বিশ্বাস। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “১৯৭৫ সালে যখন তিস্তা সেচ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়, তখন পুরোটাই কৃষি এলাকা ছিল। ২০০০ সালের পর থেকে বসতির সঙ্গে চা বাগান বেড়েছে। তাই সেচের জল ব্যবহারের হিসেব মিলছে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy