আন্দোলনকারীদের উত্তরকন্যার আগে আটকে দিল পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
সারদা বাদে অন্য অর্থলগ্নি সংস্থায় আমানতকারীর টাকা সরকারি তরফে ফেরতের দাবিতে মুখ্যমন্ত্রীর শাখা সচিবালয়ে স্মারকলিপি দিল উত্তরবঙ্গ আমানতকারী সুরক্ষা সমিতি। সোমবার শিলিগুড়ির উপকন্ঠে কামরাঙ্গাগুড়ি এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর শাখা সচিবালয় ‘উত্তরকন্যা’ অভিযানে বাঘা যতীন পার্ক থেকে মিছিল বার হয় সমিতির। হিলকাট রোড, বর্ধমান রোড হয়ে মিছিল নৌকাঘাট এলাকায় পৌঁছতেই পুলিশ আটকে দেয়। কাউকেই শাখা সচিবালয়ে যেতে দেওয়া হবে না বলে পুলিশ জানালে আন্দোলনকারী রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখান। পরে পুলিশ, স্মারকলিপি দিতে সমিতির ৬ জন প্রতিনিধিকে সচিবালয়ে যেতে অনুমতি দেন। বাকিরা নৌকাঘাট মোড় লাগোয়া একটি জায়গায় অপেক্ষা করেন। বিভিন্ন সংস্থায় আমানত থাকলেও অধিকাংশই এজেন্ট বলে জানিয়েছেন।
আমানতকারী সুরক্ষা সমিতির দাবি, ১২৬ টি অর্থলগ্নি সংস্থায় ১০ হাজার কোটি টাকা রয়েছে উত্তরবঙ্গের বাসিন্দাদের। ৩ লক্ষ বাসিন্দা ইতিমধ্যেই সমিতিকে তা জানিয়েছেন। আমানত থাকলেও সংশ্লিষ্ট সংস্থায় তাঁদের বড় অংশ এজেন্ট হিসাবে কাজ করতেন বলেও জানিয়েছেন। আন্দোলনকারীদের দেওয়া স্মারকলিপি মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে এ দিন শাখা সচিবালয় থেকে জানানো হয়।
মিছিল-বিক্ষোভ চলায় শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি রাস্তায় যানচলাচলে বেলা ১ টা থেকে ৩ ঘণ্টা বিঘ্ন ঘটে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “শহর জুড়ে সমিতির এক কর্তার ছবি দেওয়া হয়। এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। শাখা সচিবালয়ে গিয়ে তাঁদের লাভ নেই। ওঁরা যে কোনও জায়গায় যেতে পারেন।” উত্তরবঙ্গ আমানতকারী সুরক্ষা সমিতির আহ্বায়ক অলকেশ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তাঁরা দাবিপত্রে জানিয়েছেন, যে সমস্ত অর্থলগ্নি সংস্থায় টাকা রেখে বাসিন্দারা প্রতারিত সেই সমস্ত সংস্থার মালিক পক্ষকে গ্রেফতার করা হোক। বিভিন্ন সংস্থায় আমানত করে যাঁরা প্রতারিত, সরকারের উদ্যোগে তাঁদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা হোক বলে দাবি রয়েছে তাঁদের।
আন্দোলনকারীর একাংশ জানান, নানা সংস্থায় আমানত থাকলেও মূলত অধিকাংশই এজেন্ট হিসাবে কাজ করতেন। গোপীনাথ হালদার, সৌমেন্দ্র মিশ্র, কবিতা মোদকরা জানান, নিজস্ব আমানত থাকলেও তাঁরা এজেন্টের কাজ করতেন। কবিতা দেবীর নিজস্ব আমানতে ১৪ হাজার টাকা রয়েছে। এজেন্ট হিসাবে অন্যদের আমানত করে দিয়ে তাঁদের কাছ থেকে অন্তত ২ লক্ষ টাকা সংস্থায় আমানত করিয়েছেন। সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি বিপাকে পড়েন। অন্য আমানতকারীরা বাড়িতে এসে তাড়া দিচ্ছেন। গোপীনাথবাবু জানান, এজেন্ট হিসাবে বিভিন্ন ব্যক্তিরা তাঁর মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থায় রেখেছেন। সৌমেন্দ্রবাবুর মাধ্যমে আমানতকারীরা ১৫ লক্ষ টাকা রেখেছেন। মাথাভাঙার বাসিন্দা অলোক কুণ্ডু জানান, এজেন্ট হিসাবে তিনি একাধিক অর্থলগ্নি সংস্থায় আমানতকারীদের ৪০ লক্ষ টাকা জমা করেছেন। সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমানকরারীরা টাকাফেরত চেয়ে তাঁকে তাগাদা দিচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy