আইসি বাবিন মুখোপাধ্যায়।
ফের পুলিশের উপরে হামলা হল হরিশ্চন্দ্রপুরে। মঙ্গলবার মালদহের এই এলাকায় জাতীয় সড়কে ট্রাকের ধাক্কায় স্থানীয় এক বাসিন্দার মৃত্যু হয়। তারপরে তাঁর দেহ আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এলাকার মানুষ। কিছুক্ষণ পরে সড়ক অবরোধও শুরু হয়। সে সময়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে উত্তেজিত জনতার হাতে বেধড়ক মার খান হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি বাবিন মুখোপাধ্যায়। যথেচ্ছ কিল, চড়, ঘুষির পাশাপাশি তাঁকে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। আহত বাবিনবাবুকে হাসপাতালেও যেতে দেননি এলাকার বেশ কয়েকজন বাসিন্দা। প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা স্থানীয় একটি ইটভাটার অফিসঘরে তাঁকে আটকে রাখা হয়। আইসি-কে বাঁচাতে গিয়ে প্রহৃত হন একাধিক পুলিশকর্মীও।
মালদহের এই থানা এলাকায় চলতি মাসেই এই নিয়ে তৃতীয় বার ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষের হাতে আক্রান্ত হল পুলিশ। গত কাল একটি গ্রামীণ ব্যাঙ্কে চুরির চেষ্টার তদন্তে গিয়ে ভিঙ্গোলেই এই থানার এএসআই সহ ৮ পুলিশকর্মীকে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা স্থানীয় পঞ্চায়েত ভবনে আটকে রাখেন এলাকার কিছু লোকজন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য রুখতে পুলিশ ব্যর্থ। পুলিশের একটি জিপও ভাঙচুর করা হয়। তার আগে, ৮ ফেব্রুয়ারি এক মহিলা অভিযোগ করেন, ভালুকা ফাঁড়ির ওসি তাঁকে কুপ্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি ওসি-কে জুতো পেটাও করেন।
এ দিন সকাল পৌনে আটটা নাগাদ ভিঙ্গোল বটতলা এলাকায় ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দুর্ঘটনায় মারা যান মির খলিল (৪১) নামে এক ব্যক্তি। তারপরই তেতে ওঠে গোটা এলাকা। আধ ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ পৌঁছয়। ততক্ষণে অবশ্য জাতীয় সড়কে অবরোধ শুরু করে দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তবে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ছাড় দেওয়া হয়। কিন্তু দেহ নিয়ে যেতে দেওয়া হচ্ছিল না। দশটা নাগাদ বাবিনবাবু নিজেই এলাকায় যান। দু’পক্ষের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। বেলা ১২টা নাগাদ বাবিনবাবুকে মারধর করা হয়। বিকেল সাড়ে চারটেয় এসডিপিও-র হস্তক্ষেপে অবরোধ ওঠার পরে মৃতদেহ তুলে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। বাবিনবাবুকে হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অবরোধ তুলতে গিয়ে আইসি আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। তখনই বাসিন্দাদের একাংশ ক্ষেপে গিয়ে তাঁর উপরে চড়াও হন। যদিও আইসি সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “এলাকায় মদ, জুয়ার ঠেক ভেঙেছিলাম বলে ওদের রাগ ছিল বলে মনে হচ্ছে।” তাঁর দাবি, “আমাকে ছুরি মেরে খুনেরও চেষ্টা হয়েছিল।” তবে চাঁচলের এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্য বলেন, “আইসি কোনও আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে।” তিনি জানান, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে আইসি-র প্রতি বাসিন্দাদের একাংশের কোনও কারণে অসন্তোষ ছিল, কিন্তু এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy