ত্রিহানা চা বাগান খোলার দাবিতে শ্রমিকদের পথ অবরোধ। ছবিঃ বিনোদ দাস।
বন্ধ ত্রিহানা চা বাগানে বিনা চিকিৎসায় দুই শ্রমিকের মৃত্যুর জেরে, গত দু’দিন ধরেই ক্ষোভের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল শ্রমিকদের মধ্যে। শনিবার ফের বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকেরা। শুক্রবারেও শিলিগুড়িতে শ্রম দফতরের সামনে বাগান খোলার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান ত্রিহানার শ্রমিকেরা। ওই দিন শ্রম দফতরের অফিসে শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে মালিক পক্ষের বৈঠকও ছিল। তবে মালিক পক্ষ আসেননি। এ দিন কারখানার পাশে, বাগডোগরা-পানিঘাটা রাস্তা শ্রমিকেরা অবরোধও করেন। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলে। দু’দিকে আটকে পড়ে বেশ কিছু গাড়ি। ভোগান্তির অভিযোগ ওঠে। বাগডোগরা থানার পুলিশ গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করলে, অবরোধ উঠে যায়।
গত বৃহস্পতিবার ভোরে ওই বাগানের অবসরপ্রাপ্ত চা শ্রমিক বিমল তিরকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অ্যাম্বুল্যান্সের অভাবে হাসপাতালে নিয়ে যেতে না পারার কারণে তাঁর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ পরিবারের। ওই ঘটনার পর থেকেই উত্তপ্ত ত্রিহানা বাগান। এ দিন বন্ধ বাগান খোলার দাবির পাশাপাশি, শ্রমিকেরা মালিক ঘনশ্যাম কঙ্কানিকে গ্রেফতারের দাবিও তুলেছেন। শ্রমিকদের অভিযোগ, মালিকপক্ষ বৈঠকে উপস্থিত না থাকায় বাগান খোলার আলোচনা এগোয়নি। বৈঠকে পিএফ কমিশনের তরফে শিলিগুড়ির এক আধিকারিক ত্রিহানায় প্রায় তিন কোটি টাকা পিএফের বকেয়া রয়েছে বলে দাবি করেছেন। শ্রমিকদের পুজো বোনাস এবং প্রায় এক মাসের মজুরি বকেয়া রয়েছে। সমস্ত বকেয়া দেওয়ার দাবি তোলেন তাঁরা।
বাগানের শ্রমিক আশা টপ্পো বলেন, ‘‘দু’বেলা খাবার জোটানোই দায় হয়ে পড়েছে অনেকের পক্ষে। মালিক পক্ষ ছেলেখেলা শুরু করেছেন। বাগান খোলার ব্যাপারে উদাসীনতা শ্রমিকদের মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’’’ বীরসিংহ সাবার বলেন, ‘‘বকেয়া টাকা দিলে, কিছুটা সমস্যার সমাধান হতে পারে। দ্রুত বাগান খোলা প্রয়োজন।’’
এ দিন অবরোধের সময় শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করতে যান মহকুমা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি তৃণমূলের রোমা রেশমি এক্কা। শ্রমিকদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেবেন বলে জানিয়েছেন। রোমার বক্তব্য, ‘‘শ্রমিকেরা ডেকেছেন। বাগান বন্ধের ফলে তাঁদের কতটা অভাব, অনটনে দিন কাটছে, শ্রমিক পরিবারে থেকে বুঝতে পারছি। দ্রুত সমস্যা সমাধান না হলে, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠাব।’’
আইএনটিটিইউসির দার্জিলিং জেলা সভাপতি নির্জল দে বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে প্রায় ২০ কোটি টাকার বকেয়া পড়ে রয়েছে মালিক পক্ষের তরফে। শ্রমিকদের বিপদে ফেলে ঘুরপথে তা থেকে বাঁচতে চাইছেন মালিক।’’
মালিক ঘনশ্যাম কঙ্কানির বক্তব্য, ‘‘আদালতের বিচারাধীন বিষয়।’’ তাঁর আরও দাবি, বাগানকে ইচ্ছাকৃত ভাবে বন্ধ করে রেখেছেন শাসক দলের কয়েকজন নেতা। তাঁর সংযোজন: ‘‘আমরা চাই, বাগান বাঁচিয়ে শর্তসাপেক্ষে বাগান খুলুক।’’
ইতিমধ্যে বাগান এলাকায় পানীয় জলের সংযোগ বন্ধের অভিযোগ উঠেছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সংস্কারের কাজের জন্য সপ্তাহখানেক ধরে জল বন্ধ রেখেছে। ফলে, সাড়ে চারশোর মতো পরিবারকে গভীর নলকূপের অতিরিক্ত লোহা মেশা জল খেতে হচ্ছে। সে নলকূপও হাতে
গোনা কয়েকটা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy